বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজের সুবর্ণ জয়ন্তীর উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

:
: ৬ years ago

বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজের সুবর্ণ জয়ন্তীর উদ্বোধন ঘোষনা করেছেন গনপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সোমবার (০৮ অক্টোবর) বিকেল ৫ টায় গনভবনে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে তিনি তিন দিন ব্যপী অনুষ্ঠান মালার এ উদ্বোধন ঘোষনা করেন।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের ভাগ্যের উন্নয়ন হয়েছে। এ অঞ্চলকে দেশের অন্যতম অর্থনৈতিক জোন তৈরি করার লক্ষ্যে ইতো মধ্যে আমার নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু, পায়রা বন্দর, তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ করছি।

তিনি বলেন, দেশের উন্নয়নের জন্য ইতো মধ্যে বরিশালের একটি দ্বীপে আরো একটি তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের মহা পরিকল্পনা রয়েছে। সাথে পদ্মার পাড়ে অর্থনৈতিক জোন তৈরি হচ্ছে। পদ্মা সেতু থেকে পটুয়াখালীর কুয়াকাটা পর্যন্ত নির্মিত হচ্ছে চার লেনের রাস্তা। ইতো মধ্যে বরিশালে নির্মিত হয়েছে শেখ জামাল, শেখ কামাল, শেখ রাসেলসহ ৪টি সেতু।

তিনি আরো বলেন, বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ের রুপান্তর নয়, একটি পৃথক মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করা হবে। ওই মেডিকেল বিশ্ব বিদ্যালয়ের অধিনে শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজের কার্যক্রম পরিচালিত হবে। এর পাশাপাশি কলেজের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের আবাসনের জন্য ভবন নির্মাণ করা হবে।

ঘন্টা ব্যপাী শেবামেক এর সুবর্ণ জয়ন্তী’র উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির জনক জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার মধ্য দিয়ে দেশ অনেক পিছিয়ে পরেছিলো। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর দেশ উন্নতির দিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। তাই আমাদের লক্ষ্যে ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ হবে উন্নয়নশীল দেশ।

এসময় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বরিশাল প্রান্তে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান মন্ত্রনালয়ের মন্ত্রী মোঃ নাসিম-এমপি। তিনি বলেন, দক্ষিণাঞ্চল এখন আর অবেহেলিত নয়। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর এ অঞ্চলে উন্নয়নের জোয়ার বইয়ে দিয়েছে। তাই উন্নয়নের জোয়ার অব্যাহত রাখতে আগামীতে ভোট দিয়ে আওয়ামী লীগকে বিজয়ী করতে হবে।

এদিকে উদ্বোধনকালে প্রধানমন্ত্রীর সাথে গনভবনে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান মন্ত্রনালয়ের প্রতি মন্ত্রী জাহিদ মালেক-এমপিসহ স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান মন্ত্রনালয়ের সচিববৃন্দ। আর বরিশাল প্রান্তে বিশেষ অতিথি হিসেবে আরো উপস্থিত ছিলেন, বিসিসি’র নব নির্বাচিত মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ, সংসদ সদস্য এ্যাড. তালুকদার মোঃ ইউনুস, জেবুন্নেছা আফরোজ।

এর আগে সুবর্ণ জয়ন্তী উপলক্ষে সকালে এক বর্ণাঢ্য র‌্যালী বের করা হয়। যা ক্যাম্পাসের আভ্যন্তরিন সড়ক এবং হাসপাতাল সংলগ্ন বান্দ রোড প্রদক্ষিণ করে। পরে হাসপাতাল ভবনে পেছনে নির্মিত স্মৃতি স্তম্ভের উদ্বোধন করা হয়।

উল্লেখ্য, ১৯৬৮ সালের ২০ নভেম্বর তত্তকালীন পূর্ব পাকিস্তানে গর্ভনর আব্দুল মোন্য়েম খান শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজের উদ্বোধন করেন। এর আগে ১৯৬৪ সালে ৬ নভেম্বর তিনিই এই কলেজ নির্মাণের ভিত্তি প্রস্তর উদ্বোধন করেছিলেন। বরিশাল শহরের দক্ষিণ-পশ্চিম কোনে অবস্থিত এই প্রতিষ্ঠানটি বিশাল জায়গা জুড়ে নির্মান করা হয়েছে।

রংপুরের লুৎফর রহমানকে কলেজের প্রথম বর্ষে ভর্তির মধ্য দিয়ে শুরু হয় এখানকার শিক্ষার্থীদের পদচারণা। তখন মাত্র ৫৬টি আসনের বিপরিতে পাঠ্যগ্রহনের সুযোগ হয় শিক্ষার্থীদের। বর্তমানে এই কলেজের আসন সংখ্যা ২২০। গত ৫০ বছরে এই কলেছে এ পর্যন্ত পাঠগ্রহন করেছেন ৮ হাজার ৬৩ শিক্ষার্থী। এর মধ্যে মারা গেছেন ১৫২ জন। শিক্ষা ব্যবস্থাপনার জন্য এখানে রয়েছে ১০০০ শয্যার হাসপাতাল, ইনষ্টিটিউট অব হেলর্থ টেকনোলজিষ্ট, মর্গ এ্যাড মরচুয়ারী, ৩টি ইন্টার্নী ডক্টরস হোস্টেল, ৫টি ছাত্র ও ছাত্রী নির্বাস, ১টি নার্সিং ইনস্টিটিউট, ১টি মসজিদ, ১টি জিমনেসিয়াম, খেলার মাঠ এবং বৃহত্তর অডিটোরিয়াম। এর শিক্ষা কার্যক্রম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দ্বারা পরিচালিত হয়। এখানে ১০টি বিষয়ে পোস্ট-গ্রাজুয়েশন কোর্সও রয়েছে (এমডি, এমফিল, এমএস, ডিপ্লোমা)।