বরিশালের শের এ বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বার বার অগ্নি দূর্ঘটনায় রোগী ও তাদের স্বজনদের মধ্যে আতংকের পাশাপাশি ক্ষোভও বাড়ছে।
দক্ষিণাঞ্চলের সর্ববৃহত সরকারী এ চিকিৎসা সেবা প্রতিষ্ঠানটির দায়িত্বশীলদের উদাসীনতাকে দায়ী করছেন সকলে। হাসপাতালটির নির্মাণ এবং রক্ষণাবেক্ষনে ত্রুটি সহ নিম্ন মানের সামগ্রী ব্যাবহারের পাশাপাশি এর রক্ষনাবেক্ষনে গনপূর্ত অধিদপ্তর ও হাসপাতাল কতৃপক্ষের উদাশীনতা ও অবহেলার অভিযোগও দীর্ঘ দিনের।
যেকোন অঘটন ও দূর্ঘটনার পরে যথারিতি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কিন্তু অভিযোগ রয়েছে তদন্ত রিপোর্টের সে তেজস্ক্রীয় ফাইলটি কিছুদিন পিংপং বলের মত এ টেবিল ও টেবিলে লাফিয়ে তা ফাইলের ভীড়েই হারিয়ে যায়। ততদিনে প্রায় সবাই ঐসব অঘটনের বিষয় ভুলেও যান। তবে ক্ষত থেকে যায় রোগী এবং স্বজনদের শরীরে ও মনে।
গত বছরের শুরুতে নির্মান কাজ শেষ হবার পরপরই নতুন ৫তলা ভবনটিতে করোনা ওয়ার্ড চালু করার কয়েক মাসের মধ্যেই সেখানে শর্ট সার্কিট থেকে অগ্নিকান্ডের ঘটনায় উচ্চ ঝুকির এসব সংক্রমক রোগীরা রাস্তায় নেমে আসতে বাধ্য হন।
সর্বশেষ গত মঙ্গলবর রাতে হাসপাতালাটির হ্রাদরোগ বিভাগের নিবিড় পরিচর্জা কেন্দ্রটি-আইসিসিইউ’তে একইভাবে বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে আগুন লাগলে দ্রুত রোগীদের সরিয়ে নেয়ার সময় একজন মুমূর্ষ রোগীর মৃত্যু হয়। নিকটজনেরা ‘অগ্নিকান্ডের আতংকে ঐ রোগীর মৃতুর অভিযোগ’ তুললেও হাসপাতাল কতৃপক্ষ বলছেন, ‘ঐ রোগী অত্যন্ত নাজুক ও ঝুকিপূর্ণ অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসাধীন ছিল। আতংকে নয়, হ্রদ রোগেই তার মৃত্যু হয়েছে’ বলেও দাবী হাসপাতাল কতৃপক্ষের।
এমনকি ঐ দূর্ঘটনায় আইসিসিইউ’র সেন্ট্রাল অক্সিজেন প্লান্টটি পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। রাতভর রোগীদের অন্য ওয়ার্ডে রেখে পারদিন আইসিসিইউ’তে ফিরিয়ে আনা হলেও রোববার পর্যন্ত সেন্ট্রাল অক্সিজেন প্লান্টটি পুরোপুরি চালু করা যায়নি।
১ হাজার শয্যার বিশাল এ হাসপাতলটিতে আইসিসিইউ’তে শয্যা সংখ্যা মাত্র ১০টি হলেও সেখানে প্রতিদিন গড়ে রোগী থাকছেন ২০ থেকে ৩০ জন পর্যন্ত।
কিন্তু রোগীর চাপের সাথে চিকিৎসক ও চিকিৎসা কর্মী সংকট সহ চিকিৎসা সামগ্রীর অভাবে এখানে সুষ্ঠু চিকিৎসা লাভ অনেকটাই দুরুহ হয়ে পড়েছে। কিন্তু তার ওপারে অগ্নিকান্ডের মত ভয়াবহ ও আতংকিত দূর্ঘটনা সরকারী চিকিৎসা সেবার প্রতি সাধারন মানুষের অনাস্থা আরো বৃদ্ধি করছে বলেও জানিয়েছেন একাধীক রোগী ও তাদের স্বজনেরা।
এ ব্যাপারে শের এ বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. সাইফুল ইসলামের সাথে আলাপ করা হলে তিনি জানান, পুরো বিষয়টি তদন্তে হৃদরোগ বিভাগের বিভাগীয় প্রধানের নেতৃত্বে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
পাশাপাশি ইতোমধ্যে গনপূর্ত বিভাগ ও অক্সিজেন প্লান্ট রক্ষনাবেক্ষনকারী প্রতিষ্ঠানকেও চিঠি দিয়ে সব ধরনের ত্রুটি বিচ্যুতি দুর করতে বলা হয়েছে। ভবিষ্যতে কোন ধরনের দূর্ঘটনা যাতে না ঘটে, সে লক্ষে গনপূর্ত বিভাগকে সঠিক পদক্ষেপ গ্রহনের জন্য বলা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
© স্বত্ব আর্থটাইমস্ ২৪.কম
প্রকাশক ও সম্পাদক: মোঃ জাকারিয়া আলম (দিপু)
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ:বরিশাল-৮২০০।
আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:::
নিউজ মেইল:::
earthtimes24@gmail.com(নিউজ)
news@earthtimes24.com(নিউজ)
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
২০১৭ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত earthtimes24.com