বরিশাল শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যানসহ ১০ জনকে শোকজ

:
: ৬ years ago

বে-আইনী ও অবৈধভাবে প্রস্তুত করা চুড়ান্ত ভোটার তালিকা দিয়ে বাকেরগঞ্জের মহেশপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচন তফসিল ঘোষণা করায় বরিশাল শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলায় কারণ দর্শানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

৮ অক্টোবর সোমবার যুগ্ম জেলা জজ ৩য় আদালতে দাতা সদস্য প্রার্থী ফিরোজ আলম ও ২ অভিভাবক সদস্য প্রার্থী মিজানুর রহমান ও এইচ.এম সিরাজুল ইসলাম যৌথভাবে মামলাটি দায়ের করলে বিচারক মোঃ মাসুম বিল্লাহ শুনানী শেষে বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি বাদে ৯ জনকে ১০দিনের মধ্যে কারণ দর্শানের নির্দেশ দেন।

মামলায় অন্যান্য যাদের অভিযুক্ত করা হয়েছে তারা হলেন বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার ও প্রিজাইডিং অফিসার, উপজেলা একাডেমিক সুপার ভাইজার, উপজেলা নির্বাহী অফিসার, জেলা শিক্ষা অফিসার, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বরিশাল অঞ্চলের উপ-পরিচালক, শিক্ষা বোর্ডের বিদ্যালয় পরিদর্শক এবং ভূয়া দাতা সদস্য ইউসুফ আলী হাওলাদার।

মামলা পরিচালনাকারী আইনজীবী আজাদ রহমান জানান, গত ২৮ আগষ্ট উপজেলা নির্বাহী অফিসার এক স্মারক আদেশে মহেশপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটি গঠনের লক্ষ্যে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারকে নির্বাচনের প্রিজাইডিং অফিসার নিয়োগ করেন। ৩০ আগষ্ট প্রিজাইডিং অফিসার নিয়োগপ্রাপ্ত হয়ে উপজেলা শিক্ষা অফিসার নির্বাচনী তফসিল ঘোষণা করেন।

নির্বাচনী তফসিল অনুসারে ১৬ সেপ্টেম্বর নির্বাচন পরিচালনা ও ফলাফল ঘোষণার দিন ধার্য্যে করা হয়। কিš‘ ১০ সেপ্টেম্বর প্রিজাইডিং অফিসার স্মারক আদেশে নির্বাচনের তারিখ পরিবর্তন করে ৪ অক্টোবর নির্ধারন করেন। ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচনে ফিরোজ আলম দাতা সদস্য পদে এবং অভিভাবক সদস্য পদে মিজানুর রহমান ও এইচ.এম সিরাজুল ইসলাম মনোনয়নপত্র দাখিল করলে উপজেলা শিক্ষা অফিসার ১৭ সেপ্টেম্বর দাতা, অভিভাবক ও শিক্ষক প্রতিনিধির চুড়ান্ত বৈধ তালিকা প্র¯‘ত করেন।

ওই তালিকার ৩নং ক্রমিকে ফিরোজ আলমের নাম ও ৯/১২ ক্রমিকে মিজানুর রহমান ও এইচ.এম সিরাজুল ইসলামের নাম লিপিবদ্ধ রয়েছে। কিন্তুু‘ নির্বাচনের ২ দিন পূর্বে গত ২ অক্টোবর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার এক স্মারক আদেশে উপজেলা একাডেমিক সুপার ভাইজার এনামুল হককে নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্ব প্রদান করেন।

যেহেতু উপজেলা একাডেমিক সুপার ভাইজার একজন শ্রেণী কর্মকর্তা সেহেতু ম্যানেজিং কমিটির প্রবিধানমালা অনুসারে ১ম শ্রেণীর কর্মকর্তা ছাড়া প্রিজাউডিং অফিসার নিয়োগের কোন সুযোগ নাই। এছাড়া অন্য কোন ব্যক্তিকে দায়িত্ব প্রদানের সুযোগ নাই। এছাড়া ১৯৭৭ সালে প্রবিধানমালা অনুসারে ইউসুফ আলী হাওলাদার বিদ্যালয়ে ১০ হাজার টাকা দান করেন নাই বিধায় সে দাতা সদস্যের ভোটার তালিকায় অন্তর্ভূক্ত হওয়ার অধিকারী নয়।

কিন্তু‘ বে-আইনীভাবে তাকে দাতা সদস্যের ভোটার তালিকায় অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে। গত ১৩ আগষ্ট প্রস্তুত করা ভোটার তালিকায় মৃত ব্যক্তি শাজাহান মল্লিকের নাম অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে। এছাড়া সুকুমার চন্দ্র পাল নাম ভোটার তালিকায় একাধিকবার লেখা হয়েছে এবং বিদেশে থাকা ভোটার, অন্য স্কুলে চলে যাওয়া শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের নাম, পিতা জীবিত থাকতে মাতার নাম অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে। এঘটনায় নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ২ অভিভাবক প্রার্থী প্রধান শিক্ষকের কাছে আবেদন করলেও তিনি কোন ব্যবস্থা গ্রহন করেন নাই।

তিনি বে-আইনী ও অবৈধভাবে ভোটার তালিকার মাধ্যমে নির্বাচন সম্পন্ন করান। সঠিকভাবে নির্বাচন সম্পন্ন হলে এবং উপজেলা একাডেমিক সুপার ভাইজার বে-আইনীভাবে প্রহসনের নির্বাচন পরিচালনা না করলে অভিভাবক সদস্য প্রার্থীরা জয়লাভ করতেন। এছাড়া ইউসুফ আলী হাওলাদারকে অবৈধভাবে ভোটার তালিকায় অন্তর্ভূক্ত না করলে ফিরোজ আলম বিজয়ী হতেন।

এতে গত ১ অক্টোবর ফিরোজ আলমসহ অন্যান্যরা বিভিন্ন সময় পুনঃ তফসিল ঘোষণা এবং পুনরায় ভোটার তালিকা প্র¯‘তের মাধ্যমে সঠিক নিয়মে নির্বাচন করার অনুরোধ করেন। কিš‘ প্রধান শিক্ষকসহ অন্যান্যরা তা উপেক্ষা করায় গতকাল মামলাটি দায়ের করলে বিচারক ওই নির্দেশ দেন।