বরিশাল মেয়রের অতিথি হিসেবে অংশ নিলো বিসিসির কর্মকর্তা-কর্মচারি

লেখক:
প্রকাশ: ২ years ago

আনন্দঘন ও উৎসবমুখর পরিবেশে অন্যরকম এক মিলন মেলা অনুষ্ঠিত হলো নগরীর কালিবাড়ী রোডস্থ সেরনিয়াবাত ভবনে। উচ্চ পদস্থ থেকে শুরু করে দৈনিক মজুরি ভিত্তিক সকল পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ এবং তাঁর সহধর্মিনী লিপি আবদুল্লাহর সান্নিধ্যে বেশ কিছু সময় কাটিয়ে ধর্ম-বর্ন নির্বিশেষে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করে নিয়েছেন।

বিগত দিনের ধারাবাহিকতা বজায় রেখে এবছর পবিত্র ঈদুল আযহা উপলক্ষ্যে বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহর আমন্ত্রনে বিশেষ মেহমান হিসেবে কর্পোরেশনের ২৩টি বিভাগ ও শাখার ২১’শত নিয়মিত ও অনিয়মিত কর্মকর্তা-কর্মচারী তাদের পরিবারের সদস্যদের নিয়ে

বুধবার মধ্যহ্ন ভোজে অংশগ্রহন করেন। মেয়র সাদিক আবদুল্লাহ সহধর্মিনী লিপি আবদুল্লাহকে সাথে নিয়ে সকলের সাথে ঈদ পরবর্তী শুভেচ্ছা বিনিময়ের পাশাপাশি কুশলাদী বিনিময় করেন।

মেয়র ও তাঁর সহধর্মিনীর আতিথেয়তায় কর্পোরেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারী একপর্যায়ে ভুলেই গিয়েছেন তারা সকলে মেয়রের অধীনস্থ কেউ।

বুধবার দুপুর ১২টার পর থেকেই কর্পোরেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সারিবদ্ধভাবে কালিবাড়ী রোডের সেরনিয়াবাত ভবনে আসতে শুরু করে। সময় বাড়ার সাথে সাথে কানায় কানায় পরিপূর্ন হয়ে উঠে সেরনিয়াবাত ভবন।

এসময় যারা স্বেচ্ছাসেবকের দায়িত্বে ছিলেন তারা আগতদের স্বাগত জানিয়ে বলেন, মেয়র মহোদয় বলেছেন আজকে কেউ বিসিসির কর্মকর্তা-কর্মচারী নন, সকলেই সম্মানিত অতিথি।

এরপর উপস্থিত অতিথিদের (কর্মকর্তা-কর্মচারী ও তাদের পরিবারের সদস্য) নিজ নিজ আসনে বসিয়ে মধ্যাহ্ন ভোজে আপ্যায়িত করা হয়। এক্ষেত্রে বিসিসির কর্মকর্তা পর্যায়ে যারা দায়িত্বরত আছেন তারা কর্মচারী ও দৈনিক মজুরি ভিত্তিক কাজে নিয়োজিতদের খাবার পরিবেশনের দায়িত্ব পালন করেন।

মেয়র সাদিক আবদুল্লাহ ও সহধর্মিনী লিপি আবদুল্লাহ আলাদা আলাদাভাবে খাবারের প্রতিটি টেবিলে গিয়ে মধ্যাহ্ন ভোজে অংশ নেয়া সকলের সাথে কুশলাদী বিনিময় করেন। তাদের সাথে কথা বলে বিভিন্ন বিষয়ে খোঁজ খবর নেন।

এসময় মেয়র আর তাঁর সহধর্মিনীকে এভাবে কাছে পেয়ে এবং তাঁদের ব্যবহার ও আতিথেয়তায় আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়েন অনেকে। নগরীর কাউনিয়া সেবক কলোনী, কাটপট্টি ও পদ্মাবতী সহ বিভিন্ন এলাকার যারা দৈনিক মজুরি ভিত্তিক হিসেবে পরিচ্ছন্নতা কর্মী হিসেবে কাজ করেন তাদের প্রায় সকলেই এসেছিলেন পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের সাথে নিয়ে।

খাবার খেতে বসে তারা অনুভূতি প্রকাশ করে বলেন, আসার পর যখন বলা হলো আজ কেউ কর্মকর্তা-কর্মচারী নন, সকলেই অতিথি। তখন আমাদের মনটা আনন্দে ভরে গেছে।

খাবারের সময় মেয়র মহোদয় আর তাঁর স্ত্রী যখন আমাদের টেবিলের পাশে এসে দাঁড়ালো, আমাদের সাথে কথা বললো, খোঁজ খবর নিলো তখন সত্যি গর্বে বুকটা ভরে গেলো।

কর্পোরেশনের চিফ এ্যাসেসরের দায়িত্বে থাকা কাজী মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, মেয়র মহোদয়ের এ উদ্যোগটি শুধু মহৎ উদ্যোগই নয়, ব্যতিক্রমও। সকল ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে সকল কর্মকর্তা-কর্মচারী এক টেবিলে বসে খাবার খেয়েছে।

কর্মকর্তারা কর্মচারীদের খাবার বিতরণ করেছে। কর্পোরেশনের ইতিহাসে সত্যি এটা এক নজিরবিহীন দৃষ্টান্ত। কর্পোরেশনের প্রশাসনিক কর্মকর্তা স্বপন কুমার দাস বলেন, সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ মহোদয় মেয়র হিসেবে দায়িত্ব গ্রহনের পর থেকে পবিত্র রমজান মাসে স্টাফদের জন্য ইফতারের আয়োজন করে আসছেন।

পাশাপাশি প্রতিবছর ঈদ পূর্নমিলনীর আয়োজন করে স্টাফদের আপ্যায়িত করে থাকেন। তারই ধারাবাহিকতায় এবছর তার ব্যাপ্তি আরো বাড়িয়ে বিসিসির মোট ২৩টি বিভাগ ও শাখার ২১’শত নিয়মিত ও অনিয়মিত কর্মকর্তা-কর্মচারীকে সম্মানিত মেহমান হিসেবে আমন্ত্রন জানিয়ে আপ্যায়িত করে তিনি যে একজন মানবিক মেয়র তা আবারো প্রমান করেছেন।

তিনি আজকে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের যে সম্মান দেখিয়েছেন তা সকলে আজীবন কৃতজ্ঞতার সাথে স্মরণ করবেন বলেও মনে করেন প্রশাসনিক এ কর্মকর্তা। গতকালের আয়োজনে অংশ নেয়া বেশ কয়েকজন প্রবীন স্টাফের সাথে কথা বলে জানা গেছে, তাদের কর্মজীবনে তারা এধরনের বড় কোন আয়োজনে অংশ নেয়ার সুযোগ পাননি।

কোন মেয়র বা জনপ্রতিনিধি এভাবে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের এক টেবিলে বসে খাবার খাওয়ানোর উদ্যোগ নেয়নি কখনো। তারা আরো বলেন, আমরা অতিথি হিসেবে তৃপ্তি সহকারে শুধু যে খাবার খেয়েছি তা শুধু নয়।

আমরা মেয়র মহোদয় ও তাঁর সহধর্মিনীর সান্নিধ্য পেয়েছি, তারা প্রতিটি টেবিলে গিয়ে সকলের সাথে কথা বলেছেন এটাও অনেক বড় প্রাপ্তি। মধ্যাহ্ন ভোজে অংশ নেয়া নিয়মিত বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা মেয়র মহোদয়কে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, ১০ জুলাই ঈদুল আযহা উদযাপিত হলেও এধরনের আয়োজন আমাদের ঈদের খুশিতে বাড়তি মাত্রা যোগ করেছে।

এব্যাপারে মেয়র সাদিক আবদুল্লাহ বলেন, আমি সিটি কর্পোরেশনের মেয়র হিসেবে দায়িত্ব গ্রহনের পর থেকে প্রতিটি স্টাফকে আমার পরিবারের সদস্য মনে করি।

তাদের সাথে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করে নিতেই একসাথে বসে একবেলা খাবার খাওয়ার ইচ্ছা থেকেই এ আয়োজন। উল্লেখ্য  এ বিশাল আয়োজনে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের বড় একটি অংশ উপস্থিত থেকে স্বেচ্ছাসেবকের দায়িত্ব পালন করে অনুষ্ঠান সুষ্ঠুভাবে সম্পন্নে গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা পালন করেছেন।