বরিশাল মেডিকেলের ‍আরেক করোনা যোদ্ধা ‍এসআই নাজমুল

লেখক:
প্রকাশ: ৫ years ago

নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে আরেকজন করোনা যোদ্ধা শের-ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের গার্ড পুলিশের ইনচার্জ এসআই নাজমুল হুদা। প্রাণঘাতি করোনাভাইরাসের ভয়কে উপেক্ষা করে করোনা উপসর্গ রোগীদের ভর্তি থেকে শুরু করে করোনা আক্রান্ত রোগীদের মৃত্যু পর্যন্ত সেবা দিতে প্রতিদিনই ছুটে যাচ্ছেন তাদের নিকটে।

যেখানে সবাই ‍এ রোগ থেকে দূরে থাকছে সেখানে ‍এসআই নাজমুল স্বেচ্ছায় এ কাজের জন্য নিজেকে সমর্পণ করে নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন। শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ইউনিট এবং পিসিআর ল্যাব চালু হওয়া থেকে রাতদিন কাজ করে যাচ্ছেন এ পুলিশ সদস্য।

এসআই নাজমুল হুদা বলেন, করোনা ইউনিট-এ করোনা আক্রান্ত রোগী মারা যাওয়ার পর বেশিরভাগ সময় রোগীর স্বজনদের খুঁজে পাওয়া যায় না। করোনার ভয়ে স্বজনরা যেখানে দূরে সরে যায় ঠিক ওই মুহূর্তে ভয় কে উপেক্ষা করে ওয়ার্ড থেকে শুরু করে লাশ বাড়িতে পাঠানো পর্যন্ত ‍আমি রোগের সাথে থাকি।

তিনি ‍আরো বলেন, গত ১৮ এপ্রিল হাসপাতালের করোনা ইউনিটে করোনার উপসর্গ নিয়ে লিটন নামে এক বেদে যুবকের মৃত্যু হয়। তার বাড়ি মেহেন্দিগঞ্জে উপজেলায়। লিটন এর মৃত্যুর সংবাদ পেয়ে ভয়ে আত্মীয়স্বজন তাকে রেখে চলে যায়। হাসপাতালের ওয়ার্ড মাস্টার আবুল কালাম আজাদ বিষয়টি ‍আমাকে জানানোর পর তাৎক্ষণিক কোতোয়ালি থানা পুলিশসহ উরধতন কর্তৃপক্ষকে জানাই। আত্মীয় স্বজনদের খবর দেওয়া হলেও তারা না আসায় কোতোয়ালি টিম ও মাস্টার অফিসের লোকজন সঙ্গে নিয়ে করোনা ইউনিট থেকে যুবকের লাশ কফিন করে আঞ্জুমান মফিদুল ইসলামের নিকট হস্তান্তর করি।

এভাবে কাউনিয়া এলাকার এক নারী উপসর্গ নিয়ে করোনা ইউনিটে মারা যাওয়ার পর লাশর স্বজনরা ভয়ে পালিয়ে যায়। সেখানেও আমি লাশের ব্যবস্থা করে পরিবারের লোকজন খবর দিয়ে তাদের নিকট প্রেরণ করি। পটুয়াখালীর কলাপাড়ার উপজেলার পটুয়া গ্রামের জুয়েল মৃধা নামে এক ব্যবসায়ী মুঠোফোনে জানান, তিনি গত তিনদিন ধরে বরিশাল হাসপাতালের সামনে হোটেল বায়জিদে লকডাউন অবস্থায় আছেন। ৫ দিন পূর্বে তার স্ত্রী ইভা বেগমের করোনা উপসর্গ নিয়ে নিয়ে ঢাকা থেকে বরিশালে এসে তাৎক্ষণিক করোনা ইউনিট-এ ভর্তি করে। ভর্তির পর ইভার নমুনা পরীক্ষায় পজিটিভ আসার পর জুয়েল মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়েন।
নিজের করোনা টেস্ট করানোর জন্য দুই তিন দিন ধরে চেষ্টা করলেও তা পারেনি। পরে বিষয়টি আমি জানতে পেরে মেডিকেল কলেজের পিসিআর ল্যাব এ নিয়ে পরীক্ষা করা‍ই।

এ ব্যাপারে গার্ড পুলিশের এসআই নাজমুল হুদা বলেন, করোনা মহামারীতে মানব সেবায় কাজ করতে প্রথম প্রথম একটু চিন্তা আসলেও এখন আর কোন ভয় লাগে না। বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার স্যারের নির্দেশনায় কাজ করে যাচ্ছি। ‍