বরিশাল মুক্ত দিবসে আনন্দ র‌্যালী

লেখক:
প্রকাশ: ৭ years ago

৮ ডিসেম্বর বরিশাল পাক হানাদার মুক্ত দিবস উপলক্ষ্যে নগরীতে আনন্দ র‌্যালী বের করা হয়েছে। শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টায় জেলা ও মহানগর মুক্তিযোদ্ধা সংসদের উদ্যোগে আয়োজিত এই র‌্যালী মুক্তিযোদ্ধা সংসদ থেকে শুরু হয়ে নগরীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে। স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে মুক্তিযোদ্ধারা বলেন, দীর্ঘ এক মাস বরিশাল মুক্ত রাখার পর ২৫ এপ্রিল জলে ও স্থল পথে হামলা চালিয়ে বরিশালে পাকিস্তানী সেনাদের উপস্থিতি ঘটে। এরা ওয়াপদায় ক্যাম্প করে অবস্থান নেয়। মুক্তিযোদ্ধাসহ শত শত নিরীহ মানুষকে হত্যা করে লাশ মাটি চাপা বা কীর্তনখোলা নদীতে ভাসিয়ে দিতো।

আজ ৮ ডিসেম্বর পাকিস্তানী সেনারা তাদের পরাজয় নিশ্চিত জেনে কারফিউ জারি করে বরিশাল নগরী ছেড়ে পালিয়ে যায়। কাছাকাছি থাকা মুক্তিযোদ্ধারা বিজয় উল্লাশ করে নগরীতে প্রবেশ করে। তাদের সাথে মুক্তিকামী জনতা একাত্মতা প্রকাশ করে মুক্তির আনন্দে মেতে ওঠে। এই আনন্দ র‌্যালীতে উপস্থিত ছিলেন, জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার শেখ মো. কুতুবুদ্দিন, মাহাবুব উদ্দিন আহমেদ বীরবিক্রম, মহানগর সংসদের কমান্ডার মোখলেচুর রহমান, এমজি কবির ভুলু, মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি গোলাম আব্বাস চৌধুরী দুলাল, সাধারণ সম্পাদক একেএম জাহাঙ্গীর সহ অনান্য মুক্তিযোদ্ধারা অংশ নেন। প্রসঙ্গতঃ ১৯৭১ সালের এদিনে পাক হানাদারদের কবল থেকে বরিশাল মুক্ত হয়েছিলো।

‘জয় বাংলা-জয় বঙ্গবন্ধু’ শ্লোগানে দিয়ে সেদিন মুক্তিযোদ্ধারা আকাশ-বাতাশ মুখরিত করেছিলো। ‘৭১ এর ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত বরিশাল ছিল শত্রুমুক্ত। ১৭ এপ্রিল পাক বাহিনী আকাশ পথে বরিশাল ও পটুয়াখালীতে হামলা চালায়। দ্বিতীয় দফা হামলা চালায় ২৭ এপ্রিল জল, স্থল ও আকাশপথে। বরিশাল শত্রুকবলিত হওয়ার আগেই সরকারী বালিকা বিদ্যালয়ে প্রতিষ্ঠা হয়েছিলো স্বাধীন বাংলা সরকারের অস্থায়ী সচিবালয়। আওয়ামীলীগ ও মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সবাইকে নিয়ে এ সচিবালয় গঠিত হয়। এ ঘাটি থেকেই দেশের বিভিন্ন এলাকায় মুক্তিযোদ্ধাদের অস্ত্র ও অর্থ সরবরাহ করা হতো। মুক্তিযোদ্ধাদের সংগঠিত করে ভারতে প্রশিক্ষণ নিতে পাঠানোর কাজও হতো এ সচিবালায় থেকে।

৮ ডিসেম্বর দুপুরে পাকসেনা অফিসাররা গানবোট, লঞ্চ, স্টীমারে বরিশাল থেকে গোপণে পালিয়ে যায়। তবে পাক কর্মকর্তাদের এ গোপণে পালানোর খবরটি জানাজানি হয়ে যায়। ভারতীয় বিমান বাহিনী দুপুর ২টায় বরিশালে হামলা চালায়। পাকিস্তানী দখলদারদের পালিয়ে যাওয়ার খবর পেয়ে বিকেল ৩টায় বরিশাল অদুরে অবস্থানরত সুলতান মাষ্টার ও আব্দুল মান্নানের নেতৃত্বাধীন মুক্তিযোদ্ধাদের একটি দল প্রবেশ করে শহরের নিয়ন্ত্রন গ্রহন করেন।