বরিশাল সিটি করপোরেশন (বিসিসি) ওয়ার্ড কাউন্সিলরের ৩০টি পদে আওয়ামী লীগের একক প্রার্থী দেওয়ার সিদ্ধান্ত অধিকাংশ ক্ষেত্রে ওয়ার্ড নেতারা মানেননি। মহানগর আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থীর বিরুদ্ধে ১২টি ওয়ার্ডে বিদ্রোহীরা প্রার্থী হয়েছেন। অন্যদিকে অন্তত ছয়টি ওয়ার্ডে বিএনপির বর্তমান কাউন্সিলর প্রার্থীদের বিপরীতে দলীয় নেতারা মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন।
রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, আগামী ৩০ জুলাই বরিশাল সিটি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনী তফসিল অনুযায়ী গত বৃহস্পতিবার ছিল মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন। সাধারণ ৩০ ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয়ে ১১৩ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। ২০১৩ সালের ১৫ জুন অনুষ্ঠিত বরিশাল সিটি নির্বাচনে ৩০ ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে বিএনপির ২০ জন, আওয়ামী লীগের আটজন, জাতীয় পার্টি ও জামায়াতের একজন করে নির্বাচিত হন।
আওয়ামী লীগে বিদ্রোহী : ১ নম্বর ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি আমির হোসেন বিশ্বাসের বিরুদ্ধে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন সাবেক কাউন্সিলর আউয়াল মোল্লা। ৩ নম্বর ওয়ার্ডে আটজন প্রার্থীর মধ্যে আওয়ামী লীগ মনোনীত মজিবর রহমান মৃধার বিরুদ্ধে দুজন যথাক্রমে কামরুজ্জামান জুয়েল ও শাহজাহান সিরাজ। ৪ নম্বর ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী সাবেক কাউন্সিলর তৌহিদ হোসেন বাদশার বিরুদ্ধে প্রার্থী হয়েছেন দলের ওয়ার্ড নেতা এমদাদ হোসেন শরীফ।
৫ নম্বর ওয়ার্ডে বর্তমান কাউন্সিলর মাইনুল হকের বিরুদ্ধে প্রার্থী হয়েছেন তাঁর চাচা আওয়ামী লীগের জিয়াউল হক চিশতি নাদির। আওয়ামী লীগের প্রার্থী আনোয়ার হোসেন ছালেকের বিরুদ্ধে প্রার্থী দলের কেফায়েত হোসেন রনি। ১৪ নম্বর ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগের প্রার্থী তৌহিদুর রহমানের বিরুদ্ধে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন মো. শাকিল হোসেন পলাশ। ১৫ নম্বর ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগের লিয়াকত হোসেন খানের বিরুদ্ধে বিদ্রোহী হয়েছেন সাবেক ছাত্রলীগ নেতা মো. মাকছুদ আলম।
২০ নম্বর ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগের তিন প্রার্থী থাকায় এ ওয়ার্ডটি উন্মুক্ত রেখেছে নগর আওয়ামী লীগ। ২১ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক ছাত্রনেতা সাইদ আহম্মেদ মান্না আওয়ামী লীগের প্রার্থী হলেও স্থানীয় আওয়ামী লীগ কর্মী শাহরিয়ার সাচিব প্রার্থী হয়েছেন। ২৩ নম্বর ওয়ার্ডে দলীয় প্রার্থী না থাকায় আওয়ামী লীগ সমর্থক বর্তমান কাউন্সিলর এনামুল হক বাহার ও সাবেক কাউন্সিলর এমরান চৌধুরী দুলাল প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নেমেছেন।
২৫ নম্বর ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগের সাইদুর রহমান জাকির মোল্লার বিরুদ্ধে প্রার্থী হয়েছেন সাবেক কাউন্সিলর সুলতান মাহমুদ। ২৬ নম্বর ওয়ার্ডে বিএনপির একক প্রার্থী হলেও আওয়ামী লীগের হুমায়ন কবীরের বিপরীতে প্রার্থী হয়েছেন মো. হাসান ইমাম। ২৮ নম্বর ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগের প্রার্থী দুজন। দল মনোনীত প্রার্থী জাহাঙ্গীর হাওলাদারের বিরুদ্ধে প্রার্থী হয়েছেন ওয়ার্ড নেতা জাহিদ হোসেন।
বিএনপির ছয় বিদ্রোহী : ৩ নম্বর ওয়ার্ডে আটজনের মধ্যে বিএনপির প্রার্থী বর্তমান কাউন্সিলর হাবিবুর রহমান ফারুকের বিরুদ্ধে প্রার্থী দলের শামিম খান। ৬ নম্বর ওয়ার্ডে বর্তমান কাউন্সিলর হাবিবুর রহমান টিপুর পাশাপাশি অপর প্রার্থীরা হলেন আতাউল গণি, তাঁর ছেলে মো. রফিকুল ইসলাম ও খান মো. জামাল হোসেন। ৮ নম্বর ওয়ার্ডে বিএনপির বর্তমান কাউন্সিলর সেলিম হাওলাদারের বিরুদ্ধে প্রার্থী হয়েছেন দলটির নেতা মো. আল আমিন। ৯ নম্বর ওয়ার্ডে বিএনপির বর্তমান কাউন্সিলর হারুন অর রশিদের বিরুদ্ধে প্রার্থী হয়েছেন দলের সাবেক কাউন্সিলর সৈয়দ জামাল হোসেন নোমান ও শামিম খান।
২২ নম্বর ওয়ার্ডে বিএনপি দলীয় কাউন্সিলর শহিদুল ইসলাম তালুকদার প্রার্থী হননি। সেখানে বিএনপি নেতা সাবেক কাউন্সিলর আ ন ম সাইফুল আহসান আজিম দলীয় প্রার্থী হলেও বিএনপি কর্মী তানভীর হোসেন রানাও মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। ২৭ নম্বর ওয়ার্ডে বিএনপির প্রার্থী হয়েছেন বর্তমান কাউন্সিলর নুরুল ইসলাম ও দলের সমর্থন পাওয়া বিগত কাউন্সিলর মো. গিয়াসউদ্দিন বাবুল।
বিএনপির বিপরীতে জামায়াত : সংকটের কারণে বিএনপি পাঁচটি ওয়ার্ডে তাদের দলীয় প্রার্থী দিতে পারেনি। ওয়ার্ডগুলো হলো ২, ১০, ১৪, ২০ ও ২৩ নম্বর। ১৪ নম্বর ওয়ার্ডে জামায়াতের প্রার্থী বর্তমান কাউন্সিলর অ্যাডভোকেট সালাউদ্দিন মাসুম হওয়ায় বিএনপি এখানে প্রার্থী দেয়নি। ২৩ নম্বর ওয়ার্ডে বিএনপি প্রার্থী নেই। তবে জামায়াত নেতা মিজানুর রহমানকে বিএনপি সমর্থন করবে বলে জানা গেছে।