বরিশাল বিভাগে ১৫ জনকে হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে। এদের মধ্যে পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় পায়রা তাপবিদ্যুৎ প্রকল্পে কর্মরত চার চীনা শ্রমিক রয়েছেন। বাকি ১১ জন বিদেশফেরত প্রবাসীর বাড়ি বিভাগের বিভিন্ন জেলায়।
বরিশাল বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি এড়াতে ওই ১৫ জনকে হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে। তাদের মধ্যে বরিশাল জেলার সাতজন। ঝালকাঠির রয়েছেন চারজন। এছাড়া পায়রা তাপবিদ্যুৎ প্রকল্পে কর্মরত চীনা শ্রমিক রয়েছেন চারজন।
বরিশাল বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিচালক ডা. বাসুদেব কুমার দাস জানান, চীনা ওই চার শ্রমিক বৃহস্পতিবার তাদের কর্মস্থল কলাপাড়ায় এসেছেন। বাকি ১১ জন প্রবাসী গত ১২ দিনের ব্যবধানে দেশে ফিরেছেন। তাদের মধ্যে ইতালি থেকে চারজন গত ২ মার্চ ঢাকায় আসার পর ৯ মার্চ বরিশালের গৌরনদীর গ্রামের বাড়িতে ওঠেন। ১০ মার্চ তাদের ইতালি থেকে ফেরার বিষয়টি জানতে পেরে ১১ মার্চ তাদের বাড়িতে চিকিৎসকের একটি দল পাঠানো হয়। চিকিৎসক দলটি তাদের নানা পরীক্ষা করে দেখেন। তবে তাদের শরীরে করোনাভাইরাসের উপসর্গ পাওয়া যায়নি। এরপরও সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে তাদের নিজ বাড়িতে বিশেষ পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।
অন্যদিকে গত ১ মার্চ সিঙ্গাপুর ও ৯ মার্চ সৌদি আরব থেকে বরিশালের হিজলা উপজেলায় গ্রামের বাড়িতে এসেছেন দুই প্রবাসী। সিঙ্গাপুর প্রবাসীকে ৯ মার্চ থেকে ও সৌদি প্রবাসীকে ১১ মার্চ থেকে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। এছাড়া মালয়েশিয়া থেকে গত ২ মার্চ হিজলায় গ্রামের বাড়িতে এসেছেন এক প্রবাসী। গত ৯ মার্চ থেকে ওই মালয়েশিয়া প্রবাসীকে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।
ডা. বাসুদেব কুমার দাস জানান, ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলায় গ্রামের বাড়িতে এসেছেন চারজন। তাদের মধ্যে সৌদি আরব থেকে গত ৪ মার্চ এসেছেন দুইজন। গত ৬ মার্চ থেকে ওই দুই প্রবাসী পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। এছাড়া ৪ মার্চ নেদারল্যান্ডস থেকে ফেরা এক প্রবাসীকে ৬ মার্চ থেকে এবং ৭ মার্চ সিঙ্গপুর থেকে ফেরা আরেক প্রবাসীকে গত ১০ মার্চ থেকে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।
তিনি জানান, সম্প্রতি দেশে ফেরা এই ১১ জন প্রবাসী সতর্ক ও সচেতন। নিজেরাই বাড়ি থেকে বের হচ্ছেন না। এরপরও বাড়ির পৃথক কক্ষে তাদের রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে। তারা ১৪ দিন পর্যবেক্ষণে থাকবেন। এই সময় বাইরে চলাফেরা ও সেখানে থাকা পরিবারের অন্য সদস্যদের সঙ্গে মেলামেশা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। পরিবারের সদস্যদেরও চলাফেরা সীমিত করা হয়েছে। বিশেষ করে পরিবারের সদস্যদের নিজ ঘর ও আঙিনা পর্যন্ত চলাফেরা সীমাবদ্ধ রাখতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসকরা সার্বক্ষণিক তাদের স্বাস্থ্যের খোঁজ নিচ্ছেন।
ডা. বাসুদেব আরও জানান, সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে চার চীনা শ্রমিককে বাধ্যতামূলকভাবে প্রকল্প এলাকার আলাদা একটি ভবনে রাখা হয়েছে। করোনা নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কমিটির পক্ষ থেকে সার্বক্ষণিক তাদের স্বাস্থ্যের খোঁজ নেয়া হচ্ছে। সেখানে ১৪ দিন অবস্থানের পর কোনো উপসর্গ ধরা না পড়লে তারা কাজে ফিরবেন।