বরিশাল বিভাগে লক্ষ্যমাত্রার অর্ধ লাখ মানুষ নেননি টিকা

লেখক:
প্রকাশ: ২ years ago

গণটিকা কার্যক্রমের সময় বৃদ্ধির পারেও লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে পারেনি বরিশাল স্বাস্থ্য বিভাগ। প্রায় পৌঁনে ৮ লাখ মানুষকে টিকা দেয়ার লক্ষ্যমাত্রা থাকলে সেখানে টিকা গ্রহণ করেছেন প্রায় সোয়া সাত লাখ মানুষ। সে হিসেবে লক্ষ্যমাত্রার প্রায় অর্ধ লাখ মানুষকে করোনা ভাইরাসের প্রথম ডোজের টিকার আওতায় আনতে পারেনি স্বাস্থ্য বিভাগ। তবে বিভাগের মধ্যে আবার বরিশাল জেলায় টিকা প্রদানের লক্ষ্যমাত্রার থেকে বেশি মানুষকে টিকা দেয়া হয়েছে। সিটি কর্পোরেশনের সহযোগিতার কারনেই এটি সম্ভব হয়েছে বলে মনে করছেন স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা।

জানা গেছে, ‘দেশের প্রতিটি মানুষের করোনা ভাইরাসের টিকা নিশ্চিত করতে ২৬ ফেব্রুয়ারি গণটিকা কর্মসূচি গ্রহণ করে সরকার। সেই কর্মসূচির আওতায় বরিশাল বিভাগের মোট পৌঁনে ৮ লাখ মানুষকে টিকার আওতায় নিয়ে আসার লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে কার্যক্রম শুরু করে স্বাস্থ্য বিভাগ। বরিশাল সিটি কর্পোরেশনসহ জেলা পর্যায়ে সিভিল সার্জন অফিস, বিভিন্ন হাসপাতাল এবং স্বাস্থ্য কেন্দ্রের সহায়তায় গত ২৬ ফেব্রুয়ারি বরিশাল বিভাগে গণটিকা ক্যাম্পেইন বাস্তবায়ন করা হয়। তবে লক্ষ্য অর্জিত না হওয়ায় সারাদেশের ন্যায় বরিশালেও গণটিকা ক্যাম্পেইনের মেয়াদ দুদিন বাড়িয়ে মোট তিনদিন করা হয়। এর পরেও শেষ পর্যন্ত লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারেনি স্বাস্থ্য বিভাগ।

বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালকের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, বিশেষ ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে বিভাগের ছয় জেলায় মোট পাঁচ লাখ ২৮ হাজার মানুষকে টিকা দেয়ার লক্ষ্যমাত্রা ছিলো। এছাড়া বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের ৩০টি ওয়ার্ডে লক্ষ্যমাত্রা ছিলো দুই লাখ ৪৩ হাজার। সব মিলিয়ে লক্ষ্যমাত্রা ছিলো মোট ৭ লাখ ৭১ হাজার। ৬০ হাজার ৮৭ জন পায়নি।

গণটিকা কার্যক্রমের মাধ্যমে তিন দিনে বিভাগের মোট ৭ লাখ ১০ হাজার ৯১৩ জনকে করোনা ভাইরাসের প্রথম ডোজের টিকা প্রদান করা হয়েছে। একই সময় দ্বিতীয় ডোজসহ মোট টিকা গ্রহণ করেছেন ৭ লক্ষ ৭৩ হাজার ১২৩ জন। যারা গণটিকা গ্রহণ করেছেন তাদের মধ্যে পুরুষ ২ লাখ ৪৮ হাজার ৬৫৩ জন এবং নারী ৩ লাখ ৬২ হাজার ২৬০ জন। হিসাব অনুযায়ী গণটিকা কার্যক্রমের মাধ্যমে বেশিরভাগ নারী টিকা গ্রহণ করেছেন।

স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্য মতে ২৬ ফেব্রুয়ারি প্রথম দিনে টিকার প্রথম ডোজ গ্রহণ করেছেন ৬ লাখ ২০ হাজার ৪৫২ জন। দ্বিতীয় দিন অর্থাৎ ২৭ ফেব্রুয়ারি ৩৬ হাজার ৭৮০ জন এবং শেষ দিন ২৮ ফেব্রুয়ারি টিকা নিয়েছেন ৫৩ হাজার ০৮১ জন।

অপরদিকে, জেলাভিত্তিক দেখা গেছে, বরিশাল জেলায় টিকা নিয়েছেন এক লাখ ৮৯ হাজার ৫৪০ জন, পটুয়াখালী জেলায় এক লাখ ৪ হাজার ২৯০ জন, ভোলা জেলায় ২ লাখ এক হাজার ২৯১ জন, পিরোজপুরে এক লক্ষ ১১ হাজার ৪২৮ জন, বরগুনায় ৫৫ হাজার ১৮৮ জন এবং ঝালকাঠিতে মোট টিকা গ্রহণ করেছেন ৪৯ হাজার ১৭৬ জন।

উল্লেখ্য, গত ২৬ থেকে ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বরিশাল সিটি কর্পোরেশন এলাকার ৩০টি ওয়ার্ডে ৯টি করে এবং সিটির বাইরে প্রতিটি ইউনিয়নে ৩টি করে টিকা কেন্দ্রে টিকা প্রদান করা হয়। সিটি কর্পোরেশন এলাকার প্রতিটি কেন্দ্রে ৯০০ এবং ইউনিয়ন পর্যায়ে প্রতিটি কেন্দ্রে ৩০০ মানুষকে টিকা দেয়া হয়। এছাড়া সিটি এবং ইউনিয়ন পর্যায়ে ভ্রাম্যমান টিকাকেন্দ্রের মাধ্যমে টিকা প্রদান করা হয়েছে।

বরিশাল বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক কার্যালয়ের উপ-পরিচালক শ্যামল কৃষ্ণ মন্ডল জানান, ‘বিশেষ টিকাদান ক্যাম্পেইন বাস্তবায়নে উপজেলার প্রতিটি হাসপাতালে নির্ধারিত যে টিকাকেন্দ্র ছিলো। আমাদের লক্ষ্য অর্জিত হয়নি বললে ঠিক হবে না। কেননা পৌঁনে আট লাখ লক্ষ্যমাত্রার মধ্যে সাত লক্ষাধিক মানুষ টিকা নিয়েছে। বাকিদের টিকার আওতায় আনতে স্বাস্থ্য বিভাগ কাজ করছে বলে জানান তিনি।