বরিশাল বিভাগে নার্সসহ নতুন আক্রান্ত ৭, মোট ১৩৪

লেখক:
প্রকাশ: ৫ years ago

বরিশালে শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজের এক নার্সসহ গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে সাতজনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে বরিশাল বিভাগের ছয় জেলায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়াল ১৩৪ জন। এর মধ্যে ২৩ জনই চিকিৎসকসহ স্বাস্থ্যকর্মী, যা মোট আক্রান্তের ১৭ ভাগ।

আক্রান্তদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি বরিশালের। এই জেলায় নতুন তিনজনসহ আক্রান্তের সংখ্যা ৪৪। এরপরে আছে বরগুনা। এখানে নতুন আক্রান্ত একজনসহ মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৩৩ জন। পটুয়াখালীতে নতুন দুজনসহ আক্রান্তের সংখ্যা ২৯ জন। এ ছাড়া পিরোজপুরে নতুন একজনসহ ১১ জন, ঝালকাঠিতে ১২ জন এবং ভোলায় পাঁচজন।

আক্রান্তদের মধ্যে ৫৬ জনই সুস্থ হয়েছেন। এর মধ্যে বরিশালে ২৫ জন, বরগুনায় ১৪ জন, পটুয়াখালীতে চারজন, ঝালকাঠিতে দুজন ও পিরোজপুরে একজন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন।

বরিশাল বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সূত্র জানায়, বরিশাল বিভাগে প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয় পটুয়াখালীর দুমকি ও বরগুনার আমতলীতে। গত ৯ এপ্রিল ওই দুই রোগী মারা যান। এরপর বরিশাল জেলায় প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয় ১২ এপ্রিল। ৯ এপ্রিলের পর রোগীর সংখ্যা তেমন না বাড়লেও ২০ এপ্রিলের পর রোগীর সংখ্যা বাড়তে থাকে। ২৫ এপ্রিল আক্রান্তের সংখ্যা ১০০ ছাড়ায়।

আক্রান্তের গতিপ্রকৃতি পর্যালোচনায় দেখা যায়, বরিশাল, বরগুনা ও পটুয়াখালীতে ২০ এপ্রিলের পর করোনা রোগী বাড়তে থাকে। বরগুনায় ৯ এপ্রিল একজন করোনা উপসর্গ নিয়ে মারা যাওয়ার পর সেখানে ১১ এপ্রিল আরও একজন রোগী শনাক্ত হয়। ২৫ এপ্রিলের মধ্যে সেই সংখ্যা দাঁড়ায় ৩০-এ। এরপর আক্রান্তের গতি কিছুটা কমে আসে। এরপর গত ৯ দিনে এই জেলায় মাত্র তিনজন আক্রান্ত হয়। বরিশালে ১২ এপ্রিল প্রথম এক রোগীর মৃত্যুর মধ্য দিয়ে করোনা শনাক্ত হয়। এরপর ১৪ এপ্রিল একটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসকসহ ছয়জনের করোনা শনাক্ত হয়। ১৬ এপ্রিল পর্যন্ত জেলা আক্রান্ত ছিল ১৪ জন। ২৪ এপ্রিলের মধ্যে তা বেড়ে হয় ৩৬ জনে। এরপর গত ১০ দিনে এই জেলায় ৮ জন আক্রান্ত হন।

পটুয়াখালী জেলায় ৯ এপ্রিল প্রথম শনাক্ত রোগী মারা যাওয়ার পর ২০ এপ্রিল পর্যন্ত দুজন আক্রান্ত ছিলেন। কিন্তু ২১ এপ্রিল এক দিনে নতুন ৮ জন আক্রান্ত হয়ে সংখ্যা দাঁড়ায় ১০-এ। এরপর ২৬ এপ্রিল পর্যন্ত ৫ দিনে আরও ১০ জন রোগী শনাক্ত হয়। এরপর গত ৮ দিনে আক্রান্ত হয় ৯ জন। তবে ঝালকাঠি ও পিরোজপুর ও ভোলায় রোগী সংখ্যা অনেকটা স্থিতিশীল রয়েছে। সোমবার পর্যন্ত পিরোজপুরে ১১ জন, ঝালকাঠিতে ১২ জন এবং ভোলায় ৬ জন আক্রান্ত হয়েছে। মৃত্যুর দিক থেকে পটুয়াখালীতে তিনজন, বরগুনায় দুজন এবং বরিশালে একজন রোগী মারা গেছেন।

বরিশাল বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক শ্যামল কৃষ্ণ মণ্ডল প্রথম আলোকে বলেন, ‘তিন জেলায় আক্রান্তের সংখ্যা নিয়ে আমাদের দুশ্চিন্তা ছিল। তবে গেল এক সপ্তাহে আক্রান্তের সংখ্যা কিছুটা কমে আসায় অনেকটা স্বস্তি মিলেছে। তবে পটুয়াখালী আক্রান্তের হার কিছুটা বেশি। তারপরও আমরা এই তিন জেলার ওপর বিশেষ নজর রাখছি’। স্বাস্থ্য বিভাগের সংশ্লিষ্টদের আক্রান্তের বিষয়টি উদ্বেগের উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‌’আমরা পর্যালোচন করে যত দূর জানতে পেরেছি তাতে হাসপাতালে রোগীদের তথ্য গোপন করা একটি বড় কারণ। এ জন্য আমরা প্রতিটি হাসপাতালে চিকিৎসক ও অন্যদের আরও সতর্ক হওয়ার ব্যাপারে পরামর্শ দিচ্ছি।