বরিশাল বন্দরে পন্টুন সংকট

লেখক:
প্রকাশ: ২ years ago

ঈদ যাত্রায় বাড়ি ফেরা নিয়ে চিন্তার শেষ নেই দক্ষিণের লাখো যাত্রীর।

লঞ্চের টিকিট পেতে চলছে দ্বারে দ্বারে ভোগান্তি। টিকিট মিললেও নিরাপদে বাড়ি ফিরতে পারবেন কিনা তা নিয়ে চিন্তিত এ অঞ্চলের মানুষ।

বরিশাল বন্দরে পা রাখতে গিয়েও এবার হোঁচট খেতে হবে যাত্রীদের। কেননা বন্দরে পন্টুন সংকট; ঈদে ১৭ থেকে ১৮টি বড় লঞ্চ ভেড়া নিয়ে তৈরি হয়েছে শঙ্কা।

বিআইডব্লিউটিএ ও লঞ্চ মাস্টারদের তথ্যমতে, বন্দরের ৩টি পন্টুনে ৬ থেকে ৭টির বেশি লঞ্চ ভিড়তে পারে না। এ অবস্থায় ঈদে ভিড়তে যাওয়া ১৭ থেকে ১৮টি লঞ্চ বার্দিং নিয়ে শঙ্কিত সংশ্লিষ্টরা।

রোববার লঞ্চের মাস্টার, লঞ্চ মালিক নিয়ে বিআইডব্লিউটিএর এক সভায় এ নিয়ে লঞ্চের মাস্টার ও সুকানীদের প্রশ্নের মুখেও পড়েন বন্দর কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান।

এমভি সুন্দরবন লঞ্চের মাস্টার মজিবর রহমান বলেন, নৌবন্দরের ৩টি পন্টুনে নিয়মিত ৬ থেকে ৭টি লঞ্চই ভিড়তে পাড়ে না।

কিন্তু এবারের ঈদে ১৭ থেকে ১৮ লঞ্চ এক যোগে ঘাটে ভিড়বে। এই লঞ্চগুলো ভেড়ার জায়গা কোথায় সে তথ্য দিতে পারেনি বন্দর কর্মকর্তা।

তিনি বলেন, পন্টুনের একপাশে একটি অকেজো ড্রেজার পড়ে আছে। ৬ মাসেও সেটি সরানো হয়নি। ঈদের ছুটিতে তীব্র চাপ হবে। এ সময় পন্টুনে ১৭ থেকে ১৮টি লঞ্চ বার্দিং কঠিন হয়ে পড়বে।

একটার পেছনে একটা লঞ্চ ভেড়াতে গিয়ে দুর্ঘটনাও ঘটতে পারে। সবচেয়ে ঝুঁকি যাত্রীদের, তাঁরা এক লঞ্চ থেকে আর এক লঞ্চে ছুটতে গিয়ে বিপদেও পড়তে পারেন।

তিনি বলেন, সভায় বন্দর কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান এসব শুনেও কোন সমাধান না দিতে পাড়ায় শঙ্কা দেখা দিয়েছে।

বিআইডব্লিউটিএ ও লঞ্চের সুকানি, মাস্টারদের তথ্যমতে, গত ঈদে মানুষ আসতে পারেনি।

এবার ঘরমুখো যাত্রীর স্রোত নামবে। সূত্রমতে, দৈনিক ৫০ থেকে ৬০ হাজারের বেশি যাত্রী ঢাকা থেকে বরিশালে নামবে।

ঈদের আগের পাঁচদিন এবং পরের পাঁচদিন একই সংখ্যক যাত্রী হতে পারে। এতো যাত্রী নিয়ন্ত্রণে বর্তমানের চেয়ে দ্বিগুণ পন্টুন দরকার।

এ বিষয়ে বরিশাল নৌবন্দর কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান কিছুই বলতে চাননি। তিনি পরে কথা বলবেন বলে জানান।

বন্দরের ৩টি পন্টুনে ৬ থেকে ৭টির বেশি লঞ্চ ভিড়তে পারে না। এ অবস্থায় ঈদে ভিড়তে যাওয়া ১৭ থেকে ১৮টি লঞ্চ বার্দিং নিয়ে শঙ্কিত সংশ্লিষ্টরা বন্দরের ৩টি পন্টুনে ৬ থেকে ৭টির বেশি লঞ্চ ভিড়তে পারে না।

এ অবস্থায় ঈদে ভিড়তে যাওয়া ১৭ থেকে ১৮টি লঞ্চ বার্দিং নিয়ে শঙ্কিত সংশ্লিষ্টরা। আজকের পত্রিকা ফাইল ছবি
লঞ্চ মালিক সমিতির কেন্দ্রীয় সহসভাপতি সাইদুর রহমান রিন্টু বলেন, তাঁদের বড় বড় লঞ্চ আছে।

কিন্তু এসব লঞ্চ ভেড়ানোর পর্যাপ্ত পন্টুন নেই বরিশাল নৌবন্দরে। বিআইডব্লিউটিএকে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে একাধিকবার তাগিদ দিয়েছেন তাঁরা।

সুরভী লঞ্চের মালিক রিয়াজুল কবির রোববারের ওই সভায় বলেন, ঈদের আগের পাঁচ দিন ও রাতে নদীতে যেন বাল্কহেড না চলে সেটি নিশ্চিত করতে হবে।

কীর্তনখোলা লঞ্চের মালিক মো. ফেরদৌস বলেন, ঈদে অনেক গার্মেন্টসকর্মী আসবে। মানুষ সুস্থভাবে বাড়ি ফিরতে পারে এমন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ঈদে তাঁদের ২৮টি লঞ্চ ডাবল ট্রিপ দেবে।

এব্যাপারে নৌযাত্রী ঐক্য পরিষদের বরিশাল জেলা আহ্বায়ক আব্দুর রশিদ নিলু বলেন, বরিশাল বন্দরের পন্টুন আধুনিক ও সম্প্রসারণ করা দরকার।

নাহলে যাত্রীদের ঝুঁকি থেকেই যায়। ঈদ উপলক্ষে তাঁরা যাত্রীদের নিরাপত্তায় প্রধানমন্ত্রী বরাবর ১২ দফা দাবি তুলে ধরেছেন।

ওই দাবিতে যাত্রীদের জীবন ঝুঁকি রোধ এবং নিরাপত্তা নিশ্চিতের কথা বলা হয়েছে।