ঈদুল ফিতরের পর শুক্রবার (০৭ জুন) বৃষ্টি বিঘ্নিত আবহাওয়ার মধ্য দিয়েও বরিশাল নদী বন্দরে ঢাকামুখী মানুষের ভিড় বেড়েছে। তবে তা আশানুরুপ নয় বলে জানিয়েছেন লঞ্চ মালিক ও শ্রমিকরা।
যদিও শনিবার (০৮ জুন) ঈদ স্পেশাল সার্ভিসের মূল যাত্রীদের চাপ হবে বলে দাবি তাদের। রোববারও (০৯ জুন) যাত্রী চাপ থাকতে পারে। আর যাত্রী চাপ বাড়লেও নিরাপদ যাত্রায় কোনো বিঘ্নতা ঘটবে না দাবি করে তারা বলেন, যাত্রী চাপ বাড়ার সঙ্গে লঞ্চের সংখ্যাও বাড়বে।
বরিশাল নদী বন্দর সূত্রে জানা গেছে, ঈদের পরের দিন বৃহস্পতিবার পাঁচটি করে লঞ্চ বরিশাল নদী বন্দর থেকে সরাসরি ঢাকার উদ্দেশ্যে যাত্রা করলেও শুক্রবার যাচ্ছে ১০টি।
এছাড়া সরকারি জাহাজ ও ভায়া রুটের আরো বেশ কয়েকটি লঞ্চ বরিশাল নদী বন্দর হয়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে যাত্রা করবে শুক্রবার।
বরিশাল নদী বন্দর ঘুরে দেখা গেছে, শুক্রবার বিকেল থেকেই লঞ্চগুলোতে যাত্রীদের আনা গোনা শুরু হয়ে যায়।নদী বন্দরে যাত্রীদের চাপ। সন্ধ্যা হওয়ার সঙ্গে লঞ্চগুলোর ডেকের যাত্রীরা অবস্থান নিয়ে নেওয়ায় অনেকটাই পরিপূর্ণ গেছে তা। তবে কিছু লঞ্চে সন্ধ্যার পরেও ডেকে তেমন একটা যাত্রী দেখা যায়নি। যদিও শুক্রবার প্রায় সব লঞ্চের ক্যানভাসারদের গানের ছন্দে যাত্রীদের আকর্ষণ করে ডাকাডাকি করতে দেখা গেছে।
অপরদিকে স্পেশাল সার্ভিসের আওতায় শুক্রবারের দিনের লঞ্চের কেবিন আগে থেকেই বুকিং হয়ে যাওয়ায় কোনো কেবিন খালিও নেই। তাই যারা এ মুহুর্তে কেবিনের জন্য ঘাটে আসছেন তারা কেউ জরুরি প্রয়োজনে ফেরত দিলে তা পাচ্ছেন, নয়তো ডেকেই যেতে হচ্ছে তাদের।
ধারন ক্ষমতার অতিরিক্ত যাত্রী নিয়ে বরিশাল নদী বন্দর থেকে কোন লঞ্চ ছাড়তে দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছেন বরিশাল বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) নৌ নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগের উপ-পরিচালক আজমল হুদা মিঠু সরকার।
তিনি বলেন, নিরাপদ যাত্রার লক্ষে লঞ্চ মালিক, মাস্টার-ড্রাইভার ও প্রশাসনের বিভিন্ন পর্যায়ের সঙ্গে ঈদের আগেই সভা ও মোটিভেশন ওয়ার্ক করা হয়েছে। সে অনুযায়ী লঞ্চে অতিরিক্ত যাত্রী না তোলা, মাস্টার ব্রিজ যাত্রীদের কাছে ভাড়া না দেওয়াসহ বিভিন্ন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সে সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কার্যক্রম পরিচালনা ও বন্দর এলাকায় যাত্রীসহ সবার সচেতনতায় মাইকে প্রচারণা করা হচ্ছে।
যাত্রীদের ভিড় বাড়ার পাশাপাশি পুরো বন্দর এলাকাজুড়ে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তৎপরতা জোরদার করা হয়েছে। বন্দর এলাকার নিরাপত্তায় নৌ-পুলিশের পাশাপাশি, কোতোয়ালি থানা পুলিশ, ট্রাফিক পুলিশ, র্যাব, কোস্টগার্ড, ফায়ার সার্ভিস ও আনসারের সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছেন।
যাত্রীদের বিভিন্ন ধরনের সেবার মধ্যে স্কাউটদের সহায়তায় বন্দর এলাকায় শৃঙ্খলা রক্ষার কাজ করা হচ্ছে।
বরিশাল থেকে শুক্রবার ঢাকার উদ্দেশ্যে সুরভী, সুন্দরবন, পারাবত, কীর্তনখোলা, অ্যাডভেন্সার, টিপু, মানামীসহ বেশ কয়েকটি কোম্পানির ১০টি লঞ্চ সরাসরি ঢাকার উদ্দেশ্যে যাত্রা করে।
এদিকে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সামনে নদী বন্দরের টার্মিনাল ভবন ও পল্টুন এলাকায় হকার এবং ধুমপায়ীদের পদচারণায় অতিষ্ট হয়ে পরেছেন যাত্রীরা। হকারদের কারণে তারা পল্টুনে অবস্থান নিতে পারছেন না বলে অভিযোগ রয়েছে।
অপরদিকে শুক্রবার ভোরে দূরপাল্লার লঞ্চ টার্মিনালে বার্দিং করতে গিয়ে এমএল বনানীসহ অভ্যন্তরীণ রুটের ২টি লঞ্চ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
আবহাওয়া কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, সকাল থেকে থেমে থেমে বরিশালে বৃষ্টি হচ্ছে। তবে বিকেলের পর গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টি হচ্ছে। আকাশ মেঘাচ্ছন্ন থাকায় রাতেও বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।
নদী বন্দরে ১ নম্বর সতর্কতা সংকেত থাকার বিষয়টি জানিয়েছেন নদী বন্দর কর্তৃপক্ষ।