পবিত্র ঈদ উল ফিতর উপলক্ষে ঢাকা থেকে বরিশালসহ পুরো দক্ষিণাঞ্চলের যাত্রীদের বাড়ি ফেরার জন্য লঞ্চ কেবিনের আগাম টিকিট বিক্রি সোমবার সকাল থেকে শুরু হয়েছে।
রবিবার (১৯ মে) সদরঘাটে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) সাথে সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষের এক বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। বৈঠক শেষে বিআইডব্লিউটিএ-এর চেয়ারম্যান কমডোর এম মাহবুব-উল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, ‘লঞ্চ কেবিনের আগাম টিকিট ৩০ শতাংশ অনলাইনে এবং ৭০ শতাংশ টিকিট সংশ্লিষ্ট লঞ্চ কর্তৃপক্ষ নির্ধারিত কাউন্টারে বিক্রি করবে।’
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্পোরেশনের (বিআইডব্লিউটিসি) চেয়ারম্যান প্রণয় কান্তি বিশ্বাস বলেন, ‘ঈদের সময় সদরঘাট থেকে বরিশালের উদ্দেশ্যে বিআইডব্লিউটিসির পাঁচটি জাহাজ চলাচল করবে। এছাড়া চট্টগ্রাম-হাতিয়া-বরিশাল রুটে তিনটি জাহাজ চলাচল করবে।’
তিনি বলেন, আমাদের অগ্রিম টিকিট বলে সেরকম কিছু নেই। যে কোনো সময় যে কেউ এলে জাহাজের টিকিট সংগ্রহ করতে পারবেন। যাত্রী পরিবহনের বিষয়টি মূলত বেসরকারি খাতই নিয়ন্ত্রণ করে।
লঞ্চ মালিকরা জানিয়েছেন, আগাম টিকিট বিক্রির তারিখ নির্ধারণের পর লঞ্চ কর্তৃপক্ষ অনলাইনে এবং ‘আগে এলে আগে পাবেন’ ভিত্তিতে টিকিট বিক্রি শুরু করবে। দীর্ঘ সরকারি ছুটি থাকায় যাত্রীর চাপ বেশি থাকার সম্ভাবনা আছে। তাই ডকে উঠিয়ে রাখা লঞ্চগুলোকেও প্রস্তুত করা হচ্ছে। ঢাকা নদী বন্দরের (সদরঘাট) নৌ নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগের যুগ্ম পরিচালক আলমগীর কবীর ঈদের তিন-চার দিন আগে ৩০ থেকে ৩৫ লাখ লোক সদরঘাট দিয়ে নদীপথে গ্রামের বাড়িতে যাবে।
চাহিদা থাকা সাপেক্ষে আগামী ৩০ মে সদরঘাট থেকে স্পেশাল লঞ্চ সার্ভিস শুরু হবে জানিয়ে যুগ্ম-পরিচালক আরও বলেন, ‘বর্তমানে বেসরকারি ২১৫টি লঞ্চ আছে। সদরঘাট থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে ৪৩টি রুটে লঞ্চ চলাচল করে। ঈদে ঘরমুখো মানুষকে স্বাচ্ছন্দে গন্তব্যে পৌঁছানোর লক্ষে আমরা (বিআইডব্লিউটিএ) ৩০ মে থেকে পুরোপুরি প্রস্তুত থাকবো। ৩০ মে বৃহস্পতিবার অফিস করে অনেকেই পরিবার পরিজন নিয়ে নাড়ির টানে বাড়ী যেতে পারে।’ তবে স্পেশাল সার্ভিসে কয়টি লঞ্চ আমরা ব্যবহার করব তা যাত্রীদের চাপের ওপর নির্ভর করছে বলে আলমগীর কবীর উল্লেখ করেন।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ চলাচল (যাত্রী পরিবহন) সংস্থার সচিব মো. সিদ্দিকুর রহমান পাটওয়ারী বলেন, বরিশাল রুটে এখন দিনে একটি লঞ্চ চলে। কিন্তু ঈদ উপলক্ষে বরিশাল রুটে দিনে তিনটি লঞ্চ এবং রাতে ২১টি লঞ্চ চলবে। বরিশালের উদ্দেশ্যে দিনের লঞ্চগুলো সকাল ৮টা, সাড়ে ৮টা ও বেলা আড়াইটায় ঢাকা ছেড়ে যাবে। এছাড়া যাত্রী সাধারণের সুবিধার জন্য ঢাকা থেকে চাঁদপুর, শরীয়তপুর ও ডামুড্যা রুটে ঈদ উপলক্ষে মোট ২৬টি লঞ্চ দিন-রাত চলাচল করবে।
বিআইডব্লিউটিসি দৌলতদিয়া ঘাটের ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) মো. সফিকুল ইসলাম বলেন, ঈদের আগে ও পরে ৬ দিন এ রুটে পণ্যবাহী ট্রাক পারাপার বন্ধ থাকবে এবং যাত্রীদের যাত্রা নির্বিঘ্ন করতে চলাচল করবে ২০টি ফেরি। ফেরিগুলো ঈদের যাত্রী ও যানবাহনের চাপ শুরুর আগেই বহরে যুক্ত হবে। ঈদের আগে ও পরে এ ফেরিগুলো চলাচল করবে। দৌলতদিয়া প্রান্তের ৬টি ঘাটের সবগুলোই সচল রয়েছে।