বরিশাল জেলার বিভিন্ন স্থানে মোবাইল কোর্ট অভিযান চালিয়ে ৮জনকে কারাদন্ড এবং ৩ লক্ষ ৩৬ হাজার টাকার জরিমানা আদায়।

:
: ৪ years ago

আজ ২০ মার্চ শুক্রবার দিনভর জেলা প্রশাসক বরিশাল ও বিজ্ঞ জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এস, এম, অজিয়র রহমানের নির্দেশনায় বরিশাল মহানগরীতে দুইটি এবং দশটি উপজেলায় উপজেলা নির্বাহি অফিসার ও সহকারী কমিশনার ভূমি এর নেতৃত্বে ১০টি টিম মোট ১২ টি মোবাইল কোর্ট টিমের মাধ্যমে বরিশাল জেলার বিভিন্ন স্থানে মোবাইল কোর্ট অভিযান পরিচালনা করা হয়। করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে ও বাজার মনিটরিং কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখতে এ অভিযান পরিচালিত হচ্ছে। এসময় অভিযান চালিয়ে ৮ জনকে কারাদন্ড এবং ৩ লক্ষ ৩৬ হাজার পাঁচশত টাকা অর্থদন্ড আদায় করা হয়। মোবাইল কোর্ট অভিযান পরিচালনা করেন জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, বরিশালের এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ জিয়াউর রহমান। এসময় তিনি ২ জন বিদেশ ফেরত ব্যক্তিকে হোম কোয়ারেন্টাইনে না থাকার অপরাধে এবং সরকারি নির্দেশনা অমান্য করায় মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে নগরীর জীবনানন্দ দাশ সড়ক মুন্সিগ্রেজ এলাকায় ফ্রান্স ফেরত বাবুল হোসেনকে ১৫ হাজার টাকা এবং বাগিয়া ২৯ নং ওয়ার্ডে কুয়েত ফেরত মোঃ সাইদ কে ৫ হাজার টাকা করে মোট ২০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়। পাশাপাশি তাদের হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকার জন্য নির্দেশ প্রদান করেন। এদিকে বরিশাল সদর উপজেলার শায়েস্তাবাদ ইউনিয়নের দক্ষিণ রামকঠী ১ নং ওয়ার্ডে মোঃ জামাল হাওলাদার এর বাড়িতে সুন্নতে খাৎনার অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়েছে অনুষ্ঠানে পাঁচ শতাধিক অতিথিদের আমন্ত্রণ ছিল জানা গেছে তাদের মধ্যে দুজন বিদেশ ফেরত অতিথির অংশগ্রহণ করার কথা ছিল। বিষয়টি অবগত হয়ে মোবাইল কোর্ট অভিযানের মাধ্যমে অনুষ্ঠানটি বন্ধ করে দেওয়া হয়। পাশাপাশি চরআইচা গ্রামে একটি বিয়ের অনুষ্ঠানও বন্ধ করে দেন এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট। এসময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা স্যানিটারী ইন্সপেক্টর নিরাপদ খাদ্য পরিদর্শক প্রসেকিউটিং অফিসার মোঃ জাকির হোসেন আজাদ। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সহযোগিতা করেন কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশের একটি টিম। এছাড়াও বরিশাল নগরীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে বাজার মনিটরিং অভিযান পরিচালনা করা হয়। বরিশাল নগরীর ফরিয়াপট্টিতে বাজার মনিটরিংয়ে জেলা প্রশাসনের মোবাইল কোর্ট অভিযান পরিচালিত হয়। অভিযানটি পরিচালনা করেন জেলা প্রশাসন বরিশালের এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ সাইফুল ইসলাম। অভিযানে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি বিক্রয়কারী তিনটি দোকানে মূল্য তালিকা না থাকা এবং অধিক দামে দ্রব্য বিক্রয়ের অপরাধে মোট ৬৮ হাজার টাকা অর্থদন্ড প্রদান করা হয়। চালের দাম বেশি রাখার অপরাধে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন ২০০৯ এর ৪০ ধারা মোতাবেক সম্মিলিত বাণিজ্য ভান্ডার কে ২৫ হাজার টাকা এবং পণ্যের মূল্য তালিকা না থাকায় একই আইনের ৩৯ ধারা মোতাবেক মেসার্স মহাদেব ভান্ডার কে ৩০ হাজার টাকা এবং ভাই ভাই স্টোর কে ১৩ হাজার টাকা অর্থদণ্ড প্রদান করা হয়। পাশাপাশি চলমান করোনাভাইরাস সংক্রান্ত উদ্বেগজনক পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি না করা এবং অন্যয্য মুনাফা না করার বিষয়ে ব্যবসায়ীদের সতর্ক করা হয়। এসময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সহযোগিতা করেন র‍্যাব-৮ এবং বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের একটি টিম। বাকেরগঞ্জ উপজেলায় সকাল ১০ টার দিকে বাস স্ট্যান্ড, খয়রাবাদ বাজার ও বাকেরগঞ্জ বন্দর এলাকায় মোবাইল কোর্ট অভিযান পরিচালনা করেন বাকেরগঞ্জ উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) তরিকুল ইসলাম। করোনা ভাইরাস কে পূজি করে অতিরিক্ত দাম নেওয়ায় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন ২০০৯ এর ৪০ ধারা মোতাবেক মোবাইল কোর্ট অভিযানে ৪ টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালেক/কর্মচারীকে ৫ দিন করে জেল ও ৮০ হাজাট টাকা জরিমানা করা হয়েছে। গৌরনদী উপজেলায় নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য স্থিতিশীল রাখতে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করেন গৌরনদী উপজেলার উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইসরাত জাহান। আজ দুপুর ১২ টার দিকে টরকী বাজার ও গৌরনদী বন্দর এলাকায় করোনা ভাইরাস কে পূজি করে অতিরিক্ত দামে পেয়াজের বিক্রয় করার অপরাধে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন ২০০৯ এর ৪০ ধারা মোতাবেক মোবাইল কোর্ট অভিযান চালিয়ে ০২ জন ব্যবসায়ীকে ১০ হাজাট টাকা জরিমানা করা হয়েছে। মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলায় অতিরিক্ত মূল্যে পেঁয়াজ বিক্রয়ের প্রকাশ্যে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় ০৪ জন ব্যবসায়ীকে ১০ দিনের বিনাশ্রম কারাদন্ডাদেশ প্রদান করা হয়েছে৷ উক্ত মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার পিযুষ চন্দ্র দে। উজিরপুর উপজেলার ঈদগাহ বাজার, ধামুরা এবং ইচলাদি বাজারে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য স্থিতিশীল রাখতে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার উজিরপুর প্রণতি বিশ্বাস। এ সময় ৫ জন দোকানদারকে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন ২০০৯ অনুযায়ী ২৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। মুলাদী উপজেলায় মূল্য তালিকা প্রদর্শন না করায় এক ব্যবসায়ীকে পাঁচশত টাকা জরিমানা করা হয়েছে৷ উক্ত মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুলাদী উপজেলা শুভ্রা দাস। বাবুগঞ্জ উপজেলার বাবুগঞ্জ বাজার ও রহমতপুর বাজারে মোবাইল কোর্ট অভিযান পরিচালনা করেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) বাবুগঞ্জ নুসরাত জাহান খান। মূল্য তালিকা প্রদর্শন না করায়, পেয়াজের মূল্য বেশি নেওয়ায় এবং পাটের ব্যাগ ব্যবহার না করার অপরাধে ৭ দোকানে ৪৩ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় বাবুগঞ্জ এবং এয়ারপোর্ট থানা পুলিশ সহযোগিতা করে৷ আগৈলঝাড়া উপজেলার গৈলা বাজারে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার আগৈলঝাড়া চৌধুরী রওশন ইসলাম। ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন ২০০৯ অনুযায়ী বিভিন্ন ধারায় ৩ জন ব্যবসায়ীকে ১৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। বরিশাল সদর উপজেলার সাহেবেরহাট বাজারে বাজার মনিটরিংয়ে মোবাইল কোর্ট অভিযান পরিচালনা করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরিশাল সদর মোঃ মোশারেফ হোসেন। অভিযানে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য অধিক দামে বিক্রয় করার অপরাধে দুটি দোকানে ২০ হাজার টাকা অর্থদন্ড প্রদান করা হয়। পাশাপাশি চলমান করোনাভাইরাস সংক্রান্ত উদ্বেগজনক পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি না করা এবং অন্যয্য মুনাফা না করার বিষয়ে ব্যবসায়ীদের সতর্ক করা হয়। উপজেলা নির্বাহী অফিসার হিজলা মোঃ আমিনুল ইসলাম হিজলা উপজেলার বড়জালিয়া, গুয়াবাড়িয়া ও হরিণাথপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে ও হাটে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে ও দ্রব্য মূল্য নিয়ন্ত্রণে মোবাইল কোর্টের অভিযান পরিচালনা করেন। মোবাইল কোর্ট চলাকালীন ২জন ব্যক্তিকে বেশি মূল্যে পিয়াজ ও আলু বিক্রয় করার অপরাধে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন ২০০৯ অনুযায়ী ৫৫ হাজার টাকা অর্থদণ্ড প্রদান করা হয়। এ সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সহযোগিতা করেন হিজলা থানার এসআই মোঃ রাকিবুল ইসলামসহ পুলিশ ফোর্স।বরিশালের জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এস, এম, অজিয়র রহমান বলেন জনস্বার্থে এ অভিযান অব্যাহত থাকবে।