বরিশাল ব্যুরো:: বরিশাল আদালত প্রাঙ্গণে মোটরসাইকেলে অগ্নি সংযোগ ও ক্যামেরা ভাঙচুর সহ সাংবাদিকদের ওপর হামলা-মামলার আসামিরা নগরীতে প্রকাশ্যে ঘুরলেও তাদের ধরছে না পুলিশ। অভিযোগ উঠেছে- মামলার প্রধান আসামি সন্ত্রাসী সোহেল রাঢ়ি এর পুলিশের সাথে সুসম্পর্ক থাকায় “ধরা-ছোঁয়ার বাহিরে” রয়েছে আসামিরা। তবে ভিন্নমত পোষণ করে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. শফিকুল ইসলাম বলেন- আসামিদের দেখা মাত্রই গ্রেফতার করা হবে। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তাকে বিষয়টি আমি অবগত করবো। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বরিশাল কোতোয়ালী মডেল থানার সাব-ইন্সপেক্টর মো: রেজাউল ইসলাম বলেন- মামলা দায়েরের পর পরই ২ নং আসামি আলমাস কে গ্রেফতার করে আদালতে প্রেরণ করেছি। অন্য আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
চলতি বছরের ২৭ মার্চ দুপুরে দুপুরে বরিশাল জেলা ও দায়রা জজ আদালতের প্রধান ফটকে ঘটে যাওয়া ওই ঘটনায় জেলা ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক সোহেল রাঢ়ি ও নামধারি ১৩ জন সহ অজ্ঞাতনামা ৮/১০ জনকে আসামি করে ২৮ মার্চ বরিশাল কোতোয়ালী মডেল থানায় মামলাটি দায়ের করেছিলেন- বরিশাল রিপোর্টার্স ইউনিটি (বিআরইউ) এর সাধারণ সম্পাদক খালিদ সাইফুল্লাহ।
মামলার আসামি হলেন- বরিশাল জেলা ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. সোহেল রাঢ়ি (৩০), বরিশাল মহানগর ছাত্রদলের সহ-সভাপতি আলমাস (২৬), মহানগর ছাত্রদলের সহ সাধারণ সম্পাদক ও নগরীর ১০নং ওয়ার্ড ছাত্রদলের সহ-সভাপতি মো. মাসুদ হাওলাদার মাসুম (৩৫), মহানগর ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও ১০নং ওয়ার্ড ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক সাগর হোসাইন খান (৩৫), মহানগর ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. ইমরান হোসেন (৩৫), বরিশাল জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রাজিব আহম্মেদ (৩৪) ও আমজাদ হোসাইন (৩৫), জেলা ছাত্রদলের সদস্য নাঈম (২৬), মো. জাহিদ (২৫), মো. শাওন (২৮), মো. মাহিম (২৬), জুয়েল শেখ (৩০), ও মেহেন্দিগঞ্জ আলিমাবাদ ইউনিয়ন স্বেচ্ছা সেবক দল এর সদস্য মাসুদ সিকদার (৩৭) সহ অজ্ঞাতনামা ৮/১০ জন।
ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, আদালতের প্রধান ফটকে পুলিশের একটি গাড়িকে পথরোধ করে ছাত্রদল নেতারা। সেখানে উপস্থিত পুলিশ সদস্যদের উপর চড়াও হন ছাত্রদলের সাংবাদিক সম্পাদক সোহেল রাঢ়ি সহ অন্যান্যরা। তারা আব্বাস নামের এক ব্যক্তিকে পুলিশ রক্ষা করেছে এমন দাবি তুলে এবং পুলিশের সাথে তর্কে জড়িয়ে পরে। এ সময় সাংবাদিকরা সংবাদ সংগ্রহ করতে গেলে তাদেরকে ফ্যাসিস্ট আখ্যা দিয়ে হামলা চালিয়ে তাদের ব্যবহৃত মটর সাইকেলে অগ্নিসংযোগ করে। খবর পেয়ে সাংবাদিকরা সেখানে উপস্থিত হলে ছাত্রদল নেতারা সেখান থেকে সটকে পরে। এসময় সাংবাদিকরা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করলে পুলিশের ও সেনাবাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা গ্রেফতারের আশ্বাস দিলে সাংবাদিকরা সড়ক থেকে উঠে যায়।
ঘটনার দিন দুপুরে বরিশাল আদালত থেকে সংবাদ সংগ্রহ শেষে ফটো সাংবাদিক এন আমিন রাসেল ও রিপোর্টার মনিরুল ইসলাম বেড়িয়ে যাবার সময় আদালতের প্রধান ফটকের সামনে বসে সোহেল রাঢ়ির নেতৃত্বে তাদের উপর অতর্কিত হামলা চালানো হয়। পরে হামলার ভিডিও ফুটেজ দেখে বাকিদেরও চিহ্নিত করেন সাংবাদিকরা। ঘটনার পর আহত ওই দুই জনকে শেবাচিম হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।#####