চলতি বছরে বরিশাল অঞ্চলে বাস্পার ফলন ফলেছে বাংলার ঋতু ফল আমড়া। ভাল ফলন হলেও গাছ মালিকদের মুখে তেমন কোন হাসী মুল্য না থাকার কারনে। যেকারনে অধিক ফলন হলেও লোকসানের আশংকা করছেন কৃষকরা। টক-মিষ্টি জাতিয় সুস্বাদু বিভিন্ন প্রকার আমড়ার জন্য বিশেষভাবে বিখ্যাত হচ্ছে দক্ষিনাঞ্চলের বরিশাল-ঝালকাঠী-পিরোজপুর জেলা।
কৃষি অধিদপ্তর জানিয়েছে, এইসব জেলায় আমড়া চাষের জন্য ব্যবহার হচ্ছে ১ হাজার ৩৩৯ হেক্টর জমি। আর চলতি বছর উৎপাদন হয়েছে ১৯ হাজার ৮’শ ৪৭ মেট্রিকটন আমড়া। যা গতবছরের তুলনায় প্রায় দ্বিগুন।
এরমধ্যে ঝালকাঠী সদর উপজেলায় ২৬০ হেক্টর জমিতে উৎপাদন হয়েছে ৩ হাজার ৬৪০ মেট্রিকটন আমড়া। পিরোজপুর জেলার স্বরূপকাঠী উপজেলায় উৎপাদন হয়েছে ১৫৯ হেক্টর জমিতে ২ হাজার ৪৬৫ মেট্রিকটন আমড়া। এই অঞ্চলের মধ্যে এই দুই এলাকাতেই উৎপাদন সবচেয়ে বেশী।
আমড়া গাছে ফুল আসে মাঘ ও ফাল্গুন মাসে। আমড়ার সময় হচ্ছে আষাড় থেকে আশ্বিন মাস পর্যন্ত।
আমড়া পাইকারী ক্রয়-বিক্রয়ের বাজার হচ্ছে ঝালকাঠী, ভীমরুলি ও পিরোজপুর, স্বরূপকাঠী,আটঘর, কুড়িয়ানা,জিন্দাকাঠী। এসব বাজার থেকেই দেশের বিভিন্ন স্থানে আমড়া সরবরাহ করা হয়ে থাকে।বরিশাল কৃষি অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক রমেন্দ্র নাথ বাড়ৈ জানিয়েছেন, এবছর এই অঞ্চলে সর্বোচ্চ ফলন হয়েছে আমড়ার। প্রায় ২০ হাজার মেট্রিকটন। তিনি আরো জানিয়েছেন,বিপুল পরিমান উৎপাদনের কারনে আমড়ার বাজার দর কিছুটা কম।
স্বরূপকাঠীর পাইকারী ব্যবসায়ী আলমগীর জানিয়েছেন, ফলন বেশী হলেও দর গত বছরের তুলনায় অর্ধেক। সঙ্গত কারনে কৃষকরা লোকসানের আশংকা করছেন। গত বছর ছিল প্রতি মন ১৮০০ টাকা। এবার ১১০০ টাকা।
জিন্দাকাঠী এলাকার কৃষক গোকুল মজুমদার জানান, গত বছর ৩ একর জায়গায় উৎপাদিত আমড়া বিক্রি করেছি ১৫ লক্ষ টাকায়, একই জমিতে এবার ফলন বেশী হলেও বিক্রি করেছি মাত্র ১০ লক্ষ টাকার আমড়া।আটঘর, কুড়িয়ানা, জিন্দাকাঠী এলাকার কৃষকরা জানান, স্থানীয় পাইকারী বাজারে প্রতিমন আমড়া বিক্রি হচ্ছে ৯০০-১০০০ টাকায়। গত বছর বিক্রি হয়েছে ১৮০০-২০০০ টাকায়।
ফরিদুল আলম। স্বরূপকাঠীর একজন পাইকারী ব্যবসায়ী। তিনি জানান,এবছর তিনি দেশের বিভিন্ন জেলা বিশেষ করে ঢাকা,সিলেট ও চট্টগ্রামে ১৫-১৬ হাজার মন আমড়া পাঠিয়েছেন।কৃষকরা অভিযোগ করেছেন, তারা ন্যায্য দাম থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। উৎপাদিত ফসলের সুফলটুকু ভোগ করে ফরিয়া, দালাল বা মধ্যসত্ত্বভোগীরা।