বরিশালে হেলপার চালাচ্ছিল সাকুরা বাসঃ গ্লোবাল ইউনিভার্সিটির প্রভাষকসহ আহত ৪

লেখক:
প্রকাশ: ৩ years ago

বরিশাল নগরীর কেন্দ্রীয় নথুল্লাবাদ বাস টার্মিনালে ঢাকাগামী সাকুরা পরিবহনের একটি বাস তিনটি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশাকে চাপা দিয়েছে। এতে ওই তিনটি গাড়ির চালকসহ তিনজন গুরুতর আহত হয়েছেন।

শুক্রবার (২৮ জানুয়ারি) রাত সোয়া ৯টার দিকে এই ঘটনা ঘটে। বরিশাল মেট্রোপলিটন এয়ারপোর্ট থানার উপ-পুলিশ পরিদর্শক (এসআই) সুমন জানিয়েছেন, এক্সপ্রেস নামের একটি গাড়ির হেলপার থামিয়ে রাখা সাকুরা পরিবহনের বাস চালানোর চেষ্টা করলে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সামনে থাকা তিনটি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশাকে চাপা দেয়। এতে গাড়ি তিনটি দুমড়ে যায় ও রাস্তায় থাকা ৪/৫ জন যাত্রী আহন হয়।

এ ঘটনায় অভিযুক্ত হেলপার জীবন ও সাকুরা পরিবহনের (ঢাকা মেট্রো-ব-১১-৪৫৩৬) বাসটি আটক করা হয়েছে। সাকুরা পরিবহনের গাড়ির যাত্রীদের আরেকটি গাড়িতে করে ঢাকায় পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

আহতদের উদ্ধার করে শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আহতরা হলেন-বরিশালের বেসরকারি বিশ্বববিদ্যালয় গ্লোবাল ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ  এর ইইই ডিপার্টমেন্টের প্রভাষক সাহরিয়ার ইমন মাসরাফি (৩০), ভোলা জেলার চরফ্যাশন উপজেলার রতন (৫০), খুলনা জেলার খালিসপুরের শাহরিয়ার (২৮) এবং বরিশাল জেলার উজিরপুর উপজেলার বেল্লাল (৩৫)।

আহত চারজনের মধ্যে দুইজনের পা ভেঙে গেছে, বাকি দুজন গুরুতর আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন হাসপাতালের দায়িত্বরত চিকিৎসক।

এদিকে বেসরকারি বিশ্বববিদ্যালয় প্রভাষক সাহরিয়ার ইমন মাসরাফির অবস্থা গুরুতর হওয়ায় প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে রাতেই তাকে এম্বুলেন্সে ঢাকায় প্রেরণ করা হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেন ইইই ডিপার্টমেন্টের বিভাগীয় প্রধান মোঃ জিয়াউল আলম।

সাকুরা পরিবহনের বরিশাল কাউন্টার ম্যানেজার আনিসুর রহমান জানান, সাকুরা পরিবহনের ড্রাইভার গাড়ি থামিয়ে একটি দোকানে চা খাচ্ছিল। হেলপার বক্সে যাত্রীদের মালামাল তুলছিল। তখন বরিশাল এক্সপ্রেস নামের গাড়ির হেলপার সাকুরা পরিবহনে উঠে গাড়িটি চালানোর চেষ্টা করে। তখন নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে তিনটি গাড়িকে চাপা দিয়েছে।

যদিও অভিযুক্ত জীবন জানিয়েছেন, সাকুরা পরিবহনের গাড়ির চালক চা খেতে যাওয়ার সময়ে তাকে গাড়িটি চালু করে একটু সামনে এগিয়ে রাখতে বলেন। সাকুরা পরিবহনের গাড়ি চালকের অনুমতি নিয়ে সে চালাতে গিয়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সামনের তিনটি ব্যাটারিচালিত রিকশাকে ধাক্কা দিয়েছে।

গাড়ির এক যাত্রী জানান, গাড়িটি যাত্রী তোলার জন্য রাস্তার পাশে অপেক্ষা করছিল। হঠাৎ একটি কিশোর গাড়িতে উঠে ইঞ্জিন চালিয়ে বেপরোয়া গতিতে সামনে গিয়ে গাড়ির ওপর ধাক্কা দেয়। গাড়ির যাত্রীরা সবাই ভয়ে চিৎকার করে ওঠে।

আরেক যাত্রী নওরিন জাহান বলেন, ভয়ঙ্কর একটি বড় দুর্ঘটনা থেকে অল্পের জন্য রক্ষা পেয়েছি। ওই কিশোর গাড়িটি চালু করে নিয়ন্ত্রণহীনভাবে ড্রাইভ করছিল। যাত্রীরা আতঙ্কিত হয়ে পরি। বাসটি সড়কে এপার-ওপার যাচ্ছিল। বাসের চালক থাকতে কেন আরেকটি গাড়ির হেলপারকে চালাতে দেবে? এজন্য সাকুরা গাড়ির চালককে গ্রেফতারের দাবি জানাই।

আরেক যাত্রী সাইফুল বলেন, প্রথমে সাকুরা পরিবহনের কাউন্টারে যোগাযোগ করি। তারা ভ্রুক্ষেপ করেনি। তবে বিক্ষুব্ধ যাত্রীরা সাকুরা পরিবহনের অন্য সকল বাস সড়কে আটকে দিলে আমাদের ঢাকা যাওয়ার জন্য একটি বাসের ব্যবস্থা করে দেন।

এয়ারপোর্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কমলেশ হালদার জানিয়েছেন, নথুল্লাবাদ থেকে এখন বাস চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত চালককে আটক করা হয়েছে, জব্দ করা হয়েছে সাকুরা বাসটি।