বরিশালে হরতাল-অবরোধে নিম্ন আয়ের মানুষদের মাথায় হাত!

:
: ৮ মাস আগে

দেশের চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতায় ও দফায় দফায় হরতাল-অবরোধে নিম্নআয়ের মানুষের জীবন আরও বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। গত বুধবার (১৫ নভেম্বর) সারাদেশব্যপী ৫ম দফায় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে বিএনপি-জামায়াত ৪৮ ঘন্টার অবরোধ শুরু হয়ে শেষ হয় বৃহস্পতিবার। এরই মধ্য ইসির একতরফা ও প্রহসনের নির্বাচনি তফশিল ঘোষণার প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার (১৬ নভেম্বর) সকাল ৬টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত সারাদেশে হরতালের ডাক দেয় বাম গণতান্ত্রিক জোট। আর এতে কপালে দুশ্চিন্তার ভাঁজ নিয়ে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে শ্রমজীবী ও খেটে খাওয়া মানুষের জীবন। বরিশালে হরতাল ও অবরোধের বিষয়ে খেটে খাওয়া শ্রমজীবীরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “হরতাল অবরোধ বন্ধ করুন আমরা দুবেলা দুমুঠো খেয়ে পরে বাঁচতে চাই”। তারা বলেন, যদি বাজারে নিত্যপন্য মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে থাকে এবং হরতাল-অবরোধ না থাকে তাহলে সাধারন মানুষেরা ভালো থাকবে।

বরিশাল নথুল্লাবাদ বাস টার্মিনালের ফল বিক্রেতা রফিক জানায়, হরতাল-অবরোধে গাড়ি চলাচল কম তাই বিক্রি অর্ধেকে নেমে এসেছে। প্রতিদিন পনেরশ থেকে দুই হাজার টাকার বিক্রি হতো হরতাল-অবরোধ না থাকলে।আর আজ বিকেল হতে চললো মাত্র ৪০০ টাকা বিক্রি হয়েছে। আমরা এই হরতাল অবরোধ চাই না।

নথুল্লাবাদ এলাকায় হোটেল ব্যবসায়ী সোহেল জানায়,এই হরতাল-অবরোধে যাত্রী কম থাকায় ব্যবসার অবস্থা খুবই খারাপ। আন্দলনে কারনে আমাদের ব্যবসা বন্ধের পথে।আমরা এগুলো চাইনা। খেয়ে পড়ে ব্যবসা করে বাঁচতে চাই।

বরিশাল পোর্টরোডে পন্য ওঠা নামার কাজ করেন ইউনুস। তার সাথে কথা বললে তিনি জানান,হরতাল-অবরোধ না থাকলে প্রতিদিন তার রোজগার ছিলো ১২-১৫শ টাকা। আর আজ সারাদিন শেষে এখন পর্যন্ত ৫০০ টাকাও হয়নি।

বরিশাল লঞ্চঘাটের এক হোটেল ব্যবসায়ী জানান, এমনিতে কেনাবেচা খুবই কম। এরপর অবরোধ হলে গাড়ী কম আসে তাই কোনো গ্রাহকই আসে না। আমরা হরতাল-অবরোধ ও আন্দলন চাইনা। আমরা আশা করি দেশ ভালোভাবে চলবে।

বরিশাল লঞ্চঘাট এলাকার ফুচকা-চটপটি বিক্রেতা জানায়,এই অবরোধ শুরু হবার পর থেকে তার বেচা বিক্রি খুবই খারাপ।

বরিশাল পোর্টরোড বাজারে সবজি নিয়ে এসেছেন ট্রাক চালক সরোয়ার। তিনি জানান, হরতাল-অবরোধে ভয়ে মানুষ মূল্যবান গাড়ি নিয়ে রাস্তায় নামতে চায় না। অবরোধে নামলে খুবই ঝুঁকির মধ্যে থাকতে হয়। গত অবরোধে বরিশালে গাড়ি জ্বালিয়ে দেয়া হয়েছে। তাই অনেকে ভয়ে আসতে চায়না।

রুপাতলি বাস টার্মিনালের হোটেল ব্যবসায়ী আব্দুল রব জানায়,এই আন্দোলনের নামে আমাদের পেটে লাথি দেয়া হচ্ছে। এই আন্দোলন আমাদের দরকার নেই। গত কয়েকদিনে আমাদের বিক্রি অর্ধেকে নেমে এসেছে। আমরা হরতাল-অবরোধ বাদে দেশে একটি সুন্দর শান্তিপূর্ন পরিবেশ চাই।

রুপাতলি বাজারে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ক্রেতা জানান,সরকার কোনভাবেই বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না যেকারনে আন্দলনের দরকার রয়েছে।

বরিশাল জেলা আইনজীবী সমিতির সম্পাদক এ্যাড. দেলোয়ার হোসেন মুন্সি জানান, হরতাল অবরোধে আদালতের সকল কার্যক্রম চলমান রয়েছে। আগের স্বাভাবিক নিয়মেই সকল কার্যক্রম চলছে। অবরোধের কারনে দূর-দূরান্তের লোকদের আসতে কিছুটা অসুবিধে হয় বলেও জানান তিনি।