বরিশাল সিটি করপোরেশনের (বিসিসি) নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ আনিসুজ্জামানকে তার দপ্তরে লাঞ্ছিত ও গুলি করে হত্যা করার হুমকি দেয়ায় কথিত যুবদল নেতা ও ঠিকাদার মোমেন সিকদারের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছে বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের সর্বস্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। গতকাল মঙ্গলবার মেয়র বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেন তারা। বেলা ১১টার দিকে বিসিসি’র প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ ওয়াহেদুজ্জামানের কাছে মেয়র বরাবর ঐ স্মারকলিপিতে সোমবার সিটি কর্পোরেশনের ঠিকাদার মোমেন সিকদারের ঔদ্ধ্যত্বপূর্ণ আচরনের বিচার দাবী করেন। বিষয়টি নিয়ে গতকাল দিনভর নগর ভবন ছিল সরগরম। বিসিসির প্রায় অধিকাংশ উন্নয়ন কাজ করায় মোমেন সিকদার সিটি কর্পোরেশনকে তার ব্যক্তিগত প্রতিষ্ঠানের ন্যায় সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সাথে যাচ্ছে-তাই আচরণ করে আসছিল।
মেয়রসহ উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে তার অবাধ যাতায়াত ও সুসম্পর্কের কারণে কেউ তার বিরুদ্ধাচারণ করতে পারেনি। কিন্তু অসৌজন্যতার চরম সীমা লংঘন করায় ক্ষোভে ফেটে পড়েছে গোটা বিসিসি। এদিকে মোমেন সিকদারের অপকর্ম বাদ দিয়ে পক্ষে সাফাই সংবাদ প্রচারে তার ভাই যুবলীগ নেতা শাহিন সিকদার মিডিয়াপাড়া চষে বেড়াচ্ছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে। বিসিসির টেন্ডার কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণকারী কতিপয় প্রভাবশালী ঠিকাদার মেয়র ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে একটি লিখিত দিয়ে সেটি গণমাধ্যমে প্রচার করতে পত্রিকা অফিসগুলোয় দৌড়ঝাপ করছে। তারা পত্রিকা কর্তৃপক্ষকে মোটা অংকের অর্থ দিয়ে তাদের পক্ষে সংবাদ প্রচারের জন্য উদ্বুদ্ধ করছে বলে একাধিক পত্রিকার সম্পাদক নিশ্চিত করেছেন।
স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়, মোমেন শিকদারের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মিতুসি ট্রেডার্স এবং মেসার্স এমএসইএলএমএস (জেভি) এন্টারপ্রাইজ কর্তৃক কাজের বিল প্রদানের অযৌক্তিক দাবী করেন। নগরীর আমির কুটির ও কাউনিয়া জানুকিসিংহ রোডে হরিজন কলোনীতে ২ কোটি ৬০ লাখ টাকায় পুকুরের ঘাটলা, প্রাচীর ও সিসি সড়কের নির্মান কাজের ঠিকাদার হলেন মোমেন সিকদার। ওই কাজের ২০ ভাগও এখন পর্যন্ত সম্পন্ন হয়নি। এমতাবস্থায় মোমেন সিকদার ১ কোটি টাকা বিল করলে নির্বাহী প্রকৌশলী বিষয়টি মেয়রকে অবহিত করে। এসময় যতটুকু কাজ হয়েছে ততটুকুর বিল দেয়ার বিষয়টি জানালে মোমেন শিকদার নির্বাহী প্রকৌশলীকে লাঞ্ছিত করে।
এ খবর সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়লে তাৎক্ষনিক বিচারের দাবীতে মানববন্ধন কর্মসূচী পালন করা হয়। এসময় ৪৮ ঘন্টার মধ্যে দৃষ্টান্তমূলক সুবিচারের দাবী জানানো হয়। বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে বিসিসি মেয়র মোঃ আহসান হাবিব কামাল নগর ভবনে আসলে বিচারের দাবী জানান কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। এসময় লাঞ্ছিতের শিকার নির্বাহী প্রধান প্রকৌশলী আনিসুজ্জামান সহ প্রধান প্রকৌশলী খান মোঃ নূরুল ইসলাম, নির্বাহী প্রকৌশলী হুমায়ুন কবির, মনিরুল ইসলাম, পরিচ্ছন্নতা কর্মকর্তা দীপক লাল মৃধা সহ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।
অপরদিকে, মোমেন সিকদারের হত্যার হুমকিতে আতংকিত হয়ে জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে কোতয়ালি মডেল থানায় সাধারণ ডায়েরিও করেছেন প্রকৌশলী আনিসুজ্জামান।