বরিশালের গৌরনদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে স্বর্ণা আক্তার (২০) নামের এক গৃহবধূর মরদেহ রেখে পালিয়ে যাওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন।
স্বর্ণা আক্তারের বাবার দাবি, এক লাখ টাকা যৌতুক দাবিতে তার মেয়েকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করা হয়। এরপর মৃত্যু হলে গ্রেফতারের ভয়ে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মরদেহ রেখে পালিয়ে যান স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন।
খবর পেয়ে রোববার (১৯ জুন) দুপুরে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে ওই নারীর মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠায় গৌরনদী থানা পুলিশ ।
স্বর্ণা আক্তার উপজেলার বড় কসবা গ্রারে মাসুম খানের স্ত্রী ও একই গ্রামের শিপন সরদারের মেয়ে।
স্বর্ণা আক্তারের বাবা শিপন সরদার জানান, দুই বছর আগে তার মেয়ে স্বর্ণা আক্তারের সঙ্গে একই গ্রামের জালাল খানের ছেলে টরকী বন্দরের গার্মেন্টস ব্যবসায়ী মাসুম খানের বিয়ে হয়। বিয়ের কয়েকমাস পর স্বর্ণার কাছে মাসুম ও তার পরিবারের লোকজন এক লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেন। যৌতুক দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে বিভিন্ন সময় স্বর্ণাকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করা হয়।
রোববার সকালে যৌতুক দাবিতে স্বর্ণা আক্তারকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করেন স্বামীসহ শ্বশুরবাড়ির লোকজন। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে এলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
শিপন সরদার আরও বলেন, গ্রেফতারের ভয়ে স্বর্ণার মরদেহ হাসপাতালে রেখে পালিয়ে যান স্বামী মাসুম ও তার পরিবারের লোকজন। তার মেয়ের শরীরে একাধিক আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তাকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় তিনি মামলা করবেন বলেও জানান।
তবে হত্যার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন মাসুম খানের মা রুনু বেগম। তিনি মোবাইলে বলেন, তার ছেলে বউ অভিমান করে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। তবে কী কারণে অভিমান করেছেন তা তিনি জানেন না।
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে পালিয়ে যাওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, স্বর্ণার মৃত্যুর পর তাদের মাথায় কাজ করছিল না। তারা স্বর্ণার মৃত্যু মেনে নিতে পারছিলেন না। এ কারণে তারা চলে এসেছেন।
এ বিষয়ে গৌরনদী মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আফজাল হোসেন জানান, মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য দুপুরে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় স্বর্ণার পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ দেওয়া হলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।