বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহর আশ্বাসের প্রেক্ষিতে লাগাতার কর্মসূচি স্থগিত করা হয়েছে।
বরিশাল শের ই বাংলা মেডিকেল কলেজে নিরাপদ আবাসিক হলের দাবীতে আন্দোলন শুরু করা শিক্ষার্থীরা। বুধবার সকাল ৮টা থেকে অধ্যক্ষ কার্যালয় ও প্রশাসনিক ভবনে তালা দিয়ে বিক্ষোভ শুরু করে শিক্ষার্থীরা।
বিকেল সাড়ে চার টায় ৭ দিনের জন্য আন্দোলন স্থগিত করার কথা জানানো হয়।এর সত্যতা স্বীকার করে শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ডা. মনিরুজ্জামান শাহীন বলেন, শিক্ষার্থীরা আন্দোলন শুরুর পর সিটি মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ কলেজ কর্তৃপক্ষ ও শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলেন।
মেয়র বলেন আবাসন সমস্যা নিরসনে অচিরেই কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহন করা হবে। তিনি আন্দোলনরতদের কর্মসূচি প্রত্যাহারের আহবান জানান। কলেজ অধ্যক্ষ আরো জানান, মেয়রের আশ্বাসের পর শিক্ষার্থীরা ৭ দিনের জন্য বিক্ষোভ কর্মসুচী স্থগিত করেছে।
অধ্যক্ষ বলেন, এ সাত দিনের মধ্যে শিক্ষার্থীদের বিকল্প স্থানে রাখার ব্যবস্থা করা হবে। নতুন করে হল নির্মানের বিষয়ে মন্ত্রনালয় থেকে যে সিদ্বান্ত নেবে সেই অনুযায়ী পরবর্তি ব্যবস্থা নেয়া হবে।
মেডিকেল কলেজের পঞ্চম বর্ষের শিক্ষার্থী তাহসীন আহম্মেদ বিক্ষোভ কর্মসুচী ৭ দিনের জন্য স্থগিত করার ঘোষনা দিয়ে জানান, মেয়র মহোদয়ের সাথে কথা বলার পর অধ্যক্ষ স্যার আমাদের আশ্বস্থ করেছেন আগামী ৭ দিনের মধ্যে আবাসন ব্যবস্থা নিশ্চিত করাসহ দৃশ্যমান কার্যক্রম গ্রহন করবেন। এর কারনে স্থগিত করেছি। এর মধ্যে যদি কোন ব্যবস্থা না নেয়া হয়, তাহলের আমাদের জীবনের দাবিতে আবারো কঠোর আন্দোলন শুরু করবো।
অধ্যক্ষের কার্যালয় থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, মেডিকেল কলেজের তিনটি ছাত্রাবাস ও তিনটি ছাত্রী নিবাসে মোট এক হাজার ৪২৮ জন শিক্ষার্থীর জন্য আবাসিক সিট রয়েছে। এর মধ্যে ২ নং ছাত্রাবাসের তিন তলা বসবাসের অনুপযোগি ঘোষনা করেছে গনপূর্ত দপ্তর। ১ নং ছাত্রী নিবাস সম্পূর্ন বসবাসের অনুপযোগি। ২নং ছাত্রাবাসের তৃতীয় তলার ১৯ টি কক্ষের ১৩৬ জন ও ১ নং ছাত্রী নিবাসের ৮০ টি কক্ষের ৩২০ জন সিটবিহীন হয়ে পড়েছেন।
প্রথম বর্ষের ছাত্র এহসান উল্লাহ জানান, ২ নং ছাত্রাবাসের একটি কক্ষে গত রাতে পলেস্তরা খসে পড়ে অল্পের জন্য প্রাণে রক্ষা পেয়েছেন দুই জন সহপার্ঠি। এদের মধ্যে একজন আহত হয়েছেন।
সরজমিনে ২নং ছাত্রবাসে গিয়ে দেখা গেছে, পলেস্তারা ঘসে পড়া দ্বিতীয় তলা কক্ষ শুন্য। সেখানে আবাসিক শিক্ষার্থীরা কক্ষ থেকে তাদের মালামাল সরিয়ে নিয়েছেন। কক্ষের একটি শয্যা পলেস্তারা পড়ে আছে।
শিক্ষার্থীরা জানান, প্রতিটি হোস্টেলে ধারণ ক্ষমতার অধিক সংখ্যক আবাসিক শিক্ষার্থী রয়েছে। এতে হোস্টেলে লেখাপড়ার সুষ্ঠু পরিবেশ বিঘ্নিত হচ্ছে। দীর্ঘদিন ধরে তারা নতুন হোস্টেল নির্মানের দাবি করে আসছেন।
কর্তৃপক্ষ বিষয়টি গুরুত্ব না দেয়ায় এবার আন্দোলনে নেমেছেন তারা। শিক্ষার্থীদের আবাসন সমস্যার কথা স্বীকার করেছেন মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. মো. মনিরুজ্জামান শাহিন।
তিনি বলেন, প্রতিটি হোস্টেলে ধারণ ক্ষমতার অধিক শিক্ষার্থী বসবাসের পরও অন্তত ৪শ’ থেকে ৫শ’ শিক্ষার্থীর জন্য আবাসনের ব্যবস্থা করতে পারেনি কর্তৃপক্ষ। শিক্ষার্থীদের আবাসন সংকট সমাধানের জন্য মেডিকেল কলেজ ক্যাম্পাসে ছাত্রীদের জন্য একটি এবং ছাত্রদের জন্য একটি করে ১০ তলা হোস্টেল ভবন নির্মাণের প্রক্রিয়া চলছে।