বরিশালে সাগরদীর মূল সড়কে যানজট, খালি পড়ে আছে বেইলি সেতু

লেখক:
প্রকাশ: ২ years ago

বরিশাল নগরীর গুরুত্বপূর্ণ এবং কুয়াকাটা-ঢাকা মহাসড়কের একটি অংশ সাগরদী এলাকা।

এখানকার সরু সেতুর কারনে নগরী অচল হয়ে থাকতো বছরের পর বছর। দুভোর্গের বিষয়টি বিবেচনা করে বরিশাল সিটি করপোরেশনের মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ মূল সেতুর দুইপাশে দুটি বেইলি ব্রীজ করার উদ্যোগ নেন।

সড়ক -জনপদের সহযোগিতায় সম্প্রতি সাগরদী মূল সেতুর দুই পাশে স্টিলের বেইলি ব্রীজ নির্মাণ করে ছোট যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেন তিনি।

তবে থ্রি-হইলার চালকরা নির্দেশনা মেনে বেইলি সেতু দুটি ব্যবহার না করে মূল সেতু থেকেই চলাচল করছেন। এতে করে ভোগান্তি লাঘব হয়নি।

অভিযোগ পাওয়া গেছে, দায়িত্বরত ট্রাফিক সদস্যরা সঠিক নজরদারি না করায় ছোট যানবাহনগুলো চলাচলে নৈরাজ্য করার সুযোগ পাচ্ছে।

মঙ্গলবার (১২ এপ্রিল) সরেজমিনে দেখা গেছে যাত্রী নিয়ে তিন চাকার যানবাহনগুলো বেইলি ব্রীজ পার হচ্ছে না। মাঝে মধ্যে দু-একটি চলাচল করলেও ট্রাফিক পুলিশ সরে গেলেই মূল সেতু থেকে চলাচল করে।

সিটি করপোরেশন জানিয়েছে, চলতি বছরের মার্চ মাসে সাগরদীর মূল ব্রীজের পাশে স্টিলের দুটি ব্রীজের কাজ শুরু করা হয়।

মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহর নির্দেশে রাত-দিন সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারিরা কাজ করেন। এ মাসের প্রথম সপ্তাহে যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হয়।

নির্মাণ কাজের ইঞ্জিনিয়ার মো. আবুল বাশার জানান, সাধারন মানুষের ভোগান্তির কথা চিন্তা করেই মাননীয় মেয়র দ্রুত বেইলি ব্রীজ নিমার্ণের উদ্যোগ নেন।

তার নির্দেশে সড়ক জনপদের সহযোগিতায় মূল সেতুর পাশে স্টিলের দুটি বেইলি ব্রীজ দ্রুত সময়ের ভিতর শেষ করা হয়। এখন একটু হলেও ঐ সড়কে যানজট কম হবে।

স্থানীয় ব্যবসায়ী রনি, মিন্টু, মাছুম, মনির জানান, সড়কটি থেকে প্রতিদিন হাজার হাজার পরিবহন চলাচল করে। ফলে সবসময় ব্যস্ত থাকে সড়কটি।

পাশাপাশি এই এলাকার আশপাশে মানুষের বসবাসও কম না। এ কারনে সবসময় যানজট লেগেই থাকতো। মানুষের ভোগান্তি ছিল। এখন কিছুটা কমেছে।

তবে অটো চালকরা মূল সেতুতে উঠে যাওয়ায় প্রায়ই পুরানো চিত্রে ফিরে যায় সাগরদির চিত্র। তারা বলেন, ঈদের আগে বেইলি ব্রীজ থেকে বাধ্যতামূলক ছোট যান চলাচল করবে এই ব্যবস্থা করা উচিত। অন্যথায় সুফল বয়ে আনবে না।

অটো রিকশা চালক আবুল বাশার বলেন, বেইলি ব্রীজ হওয়ায় যানজটের ভোগান্তি একটু দূর হয়েছে। তবে ট্রাফিক পুলিশ যদি বেইলি ব্রীজ থেকে তিন চাকার যানচলাচলে বাধ্যতামূলক করে, আর নির্দেশনা না মানলে জরিমানা করেন তাহলে যানজট কমে আসবে।

বাসিন্দা বায়েজিদ বলেন, সাগরদী ব্রীজের দুই পাশের একাংশে জেলা পরিষদের এবং অপরাংশে সড়ক ও জনপদের জমি রয়েছে।

দীর্ঘদিন ধরে সরকারি দুই বিভাগের জমি দখল করে রেখেছে স্থানীয় ব্যক্তিরা। এসব দখলবাজদের হাত থেকে সরকারি জমি উদ্ধার হলে সাগরদী ব্রীজটি আরো বড় করতে পারবেন সংশ্লিষ্টরা। ব্রীজটি বড় হলে চীরতরে যানজট হারিয়ে যাবে।

বরিশাল সড়ক-জনপদের নিবার্হী প্রকৌশলী মো. মাসুদ মাহামুদ সুমনের মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন দেয়া এলও তিনি রিসিভ করেননি।

বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মো. তানভীর আহাম্মেদ বলেন, সাগরদী ব্রীজের যানজট নিরসনে সবসময় সেখানে ট্রাফিক পুলিশ দায়িত্ব পালন করে আসছেন। তিনি বলেন, মূলত যানজট দুটি কারনে সৃষ্টি হয়। ব্রীজের পাশ্ববর্তি দুটি গলি রয়েছে। সেখান থেকে বিভিন্ন যানবাহন একসাথে বের হওয়ার কারনে যানজটের সৃষ্টি হয়।

এ গলি দুটি বন্ধ হলে এ পরিস্থিতি হবে না। তবে বেইলি ব্রীজ হওয়ায় আগের চেয়ে অনেক যানজট কমে এসেছে। পাশাপাশি বেইলি ব্রীজ থেকে তিন চাকার যান নিয়মিত চলাচলের জন্য পদক্ষেপ নেয়ার কথা জানিয়েছেন তিনি।