ঢাকা-বরিশাল নৌরুটের সুরভী-৯ লঞ্চে সাংবাদিক নির্যাতনের প্রতিবাদে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন সাংবাদিকরা।
বুধবার (১৯ জানুয়ারি) বেলা ১১টায় অশ্বিনী কুমার হলের সামনে বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সড়কে বরিশাল ইলেকট্রনিক্স মিডিয়া জার্নালিস্ট এ্যাসোসিয়েশনের আয়োজনে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে এই দাবী তোলা হয়। সংগঠনের সভাপতি ফিরদাউস সোহাগের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন নিউজ টোয়েন্টিফোরের ব্যুরো প্রধান রাহাত খান।
সাংবাদিক ইউনিয়ন বরিশালের সভাপতি সাইফুর রহমান মিরন বলেন, যাত্রী ও সাংবাদিক মারধরকারীকে আইনের আওতায় না এনে কোতয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আইনের প্রতি অবজ্ঞা দেখিয়েছেন। আমরা চাই অনতিবিলম্বে হামলাকারী মিজানকে গ্রেফতার করা হোক। পাশাপাশি ওসি আজিমুর করিমকে প্রত্যাহার করা হোক।
ইনেডেপেন্ডেন্ট টেলিভিশনের ব্যুরো প্রধান মুরাদ আহমেদ বলেন, বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের কাছে আমাদের সবিনয় অনুরোধ থাকবে কোতয়ালী থানার দায়িত্বে একজন ডায়নামিক ওসির দরকার। এই প্রতিবাদ সভা থেকে বলতে চাই, আগুন জ্বলতে দিয়েন না; টিকতে পারবেন না। আমি কোতয়ালী থানার ওসির ধৃষ্ঠতা দেখে অবাক হই। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে একের পর এক সিনিয়র সাংবাদিকরা তার সাথে যোগাযোগ করেছে। তিনি মূল্যায়নই করেননি।
তিনি বলেন, আমি গোয়েন্দা সংস্থার কাছে অনুরোধ করবো আপনারা প্রতিবেদন দেন, এই আজিমুল করিম ওসি কোতয়ালীর যোগ্য না। আমাদের আন্দোলন এক দফা ‘আজিমুল করিম হঠাও’ করতে বাধ্য করবেন না। ঘটনার এত দিন হয়ে গেলো এখনো হামলাকারী মিজান গ্রেফতার হয়নি। তাকে দ্রুত আইনের আওতায় নিয়ে আসুন। অন্যথায় ওসি প্রত্যাহারে আমাদের একদফা আন্দোলন নিয়ে রাস্তায় নামতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে ফিরদাউস সোহাগ বলেন, ওসি আজিমুল করিম হামলাকারীদের গ্রেফতার না করে আইনকে অমান্য করেছেন। তাই তার হাতে আইন নিরাপদ নয়। তাকে কোতয়ালী থেকে সরানো হোক। যার হাতে আইন নিরাপদ তাকে দায়িত্ব দেওয়া হোক।
এছাড়াও বক্তব্য দেন, বরিশাল প্রেসক্লাবের সহ-সভাপতি কাজী আর মামুন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এম জহির, নিউজ এডিটরস কাউন্সিলের সহ-সভাপতি সৈয়দ মেহেদী হাসান, সাংবাদিক পরিষদের সভাপতি কামরুজ্জামান জুয়েল রানা, সহ-সাধারণ সম্পাদক খান মনিরুজ্জামান প্রমূখ। মানববন্ধনে বিভিন্ন সাংবাদিক সংগঠন একাত্মতা পোষণ করেন।
প্রসঙ্গত, বরিশালগামী এমভি সুরভী-৯ লঞ্চে ৮ জানুয়ারি রাতে অগ্নিকান্ডের সূত্রপাত হওয়ায় সরকারি সহায়তা কেন্দ্র ৯৯৯ নম্বরে কল করায় ৯ মার্চ বরিশাল নদী বন্দরে যাত্রীদের মারধর করে লঞ্চের ম্যানেজার মিজানুর রহমান ও তার সহযোগীরা। এ ঘটনা ভিডিও ধারণ করতে গেলে দুটি টেলিভিশন চ্যানেলের ক্যামেরাপার্সনকে মারধর করে লঞ্চ স্টাফরা। এ ঘটনায় লঞ্চের ম্যানেজারকে সাময়িক বরখাস্ত করে আনুষ্ঠানিকভাবে লঞ্চ কর্তৃপক্ষ দুঃখ প্রকাশ করেছেন। ওদিকে মারধরের ঘটনায় বিআইডব্লিউটিএর যুগ্ম পরিচালক ও বরিশাল নদী বন্দর কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান এবং ইনডিপেন্ডেন্ট টেলিভিশনের ক্যামেরাপার্সন মিদুল ইসলাম মোহন বাদী হয়ে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগ পাওয়ার পরও কোতয়ালীর ওসি কোন আইনি ব্যবস্থা গ্রহন করেননি।