মুসলিম জাহানের দ্বিতীয় সর্ববৃহৎ উৎসব ঈদ-উল আজহা ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী স্বাস্থ্যবিধি মেনে বিভিন্ন মসজিদে মসজিদে ঈদের নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। তবে এবারের ঈদ বৈশ্বিক মহামারী করোনা ভাইরাসের প্রভাবে কিছুটা হলেও ফিকে হয়ে গেছে । আজ ১ আগস্ট শনিবার সকাল ৮ টায় জেলা প্রশাসন বরিশালের আয়োজনে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের ট্রেজারি সংলগ্ন বিভাগীয় জাদুঘরের পাশে অবস্থিত কালেক্টরেট জামে মসজিদে ঈদের প্রথম জামাত অনুষ্ঠিত হয়।
বিভাগীয় ও জেলা প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা কালেক্টরেট জামে মসজিদে ঈদের জামাতে নামাজ আদায় করেন। মসজিদে ঢোকার আগ মুহূর্তে মুসল্লিদের জীবাণুনাশক পানি স্প্রে করা হয়, মুসল্লিদের সুরক্ষার জন্য গেটে এবং অজুখানায় রাখা হয় সাবান হ্যান্ড স্যানিটাইজার। প্রথম জামাতে অংশগ্রহণ করেন অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার বরিশাল আব্দুর রাজ্জাক, জেলা প্রশাসক বরিশাল এস, এম, অজিয়র রহমান, জোনাল সেটেলমেন্ট অফিসার বরিশাল মোহাম্মদ আহসান হাবীবসহ বিভাগীয় এবং জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা। জামাতে বৃদ্ধ ও শিশুদের উপস্থিতি অন্য বছরের ইদ জামাতের মতো ছিল না বললেই চলে। ছিল না নামাজ শেষে অতি পরিচিত কোলাকুলির দৃশ্য। ধর্ম মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে এবার ইদের জামাত আদায় করা হয় মসজিদে। এরই ধারাবাহিকতায় বরিশালে একাধিক জামাত অনুষ্ঠিত হয়। নামাজ আদায়ের আগে মুসল্লিরা নিজেদের জায়নামাজ সাথে নিয়ে আসেন পাশাপাশি মুসল্লিরা মাস্ক পরেছিলেন।
এরপর তারা শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে সারিবদ্ধ হয়ে বসেন। খুতবা শোনেন এবং নামাজ আদায় করেন। নামাজ শেষে করোনা থেকে আল্লাহর কাছে মুক্তি কামনা করে বিশেষ দোয়া অনুষ্ঠিত হয়। নামাজ শেষে জেলা প্রশাসক বলেন, ধর্ম মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে আমরা শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে মসজিদে মসজিদে নামাজ আদায়ের ব্যবস্থা করেছি। মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে নামাজ আদায় করেছে। তিনি আরও বলেন, আমরা বিপর্যয়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি। এই সময় ধৈর্য ধারণের বিকল্প নেই। সবাইকে পশু কুরবানি দেয়ার ক্ষেত্রে স্বাস্থ্য বিধি অনুসরণ করার আহবান জানাচ্ছি। এদিকে শের-ই-বাংলা মেডিকেল এর করোনা রোগীদের সাথে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে উপহার সামগ্রী পাঠান জেলা প্রশাসক এস, এম, অজিয়র রহমান। আজ সকাল ১১ টার দিকে শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রোগীদের জন্য জেলা প্রশাসন বরিশালের পক্ষ থেকে ঈদ সামগ্রী হিসেবে ফল উপহার প্রদান করা হয়েছে।
জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ নাজমুল হূদা শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডের ইনচার্জ মোঃ আবুল কালাম আজাদের নিকট এ সামগ্রী হস্তান্তর করেন। করোনা ওয়ার্ডে বর্তমানে প্রায় শতাধিক করোনা রোগী চিকিৎসা নিচ্ছেন তাদের জন্য বিভিন্ন প্রকারের ফল-মূল পাঠানো হয়। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ঈদের দিন ছাড়াও এর পূর্বেও একাধিক বার করোনা ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রোগীদের জন্য বিভিন্ন ধরণের ফল-মূলসহ উপহার সামগ্রী প্রদান করা হয়েছে। এসময় জেলা প্রশাসক বলেন, পবিত্র ঈদ-উল-আজহা আমাদের ত্যাগ, শান্তি, ভ্রাতৃত্ববোধ ও সহমর্মিতার শিক্ষা দেয়। বিশ্বব্যাপী করোনা ভাইরাসের ফলে সৃষ্ট মহামারীতে অনেকেই ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন। শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন যে সকল রোগী রয়েছেন, তারা ঈদের আনন্দ এবার উদযাপন করতে পারছেন না। এ কারণে আক্রান্ত রোগী ও তাদের পরিবারের সদস্যদের সাহস যোগানো, মানসিক শক্তি বৃদ্ধি ও ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করে নেওয়ার জন্য জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এ উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।