জাকারিয়া আলম দিপুঃ করদাতা ও সেবাগ্রহীতাদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে সপ্তাহব্যাপী আয়কর মেলা শেষ হয়েছে সোমবার (১৯ নভেম্বর)। বিভাগীয় শহর বরিশালে কর অঞ্চলের নবমবারের মত বরিশাল অশ্বিনী কুমার টাউন হল সহ বিভাগের ৬ জেলার ২২টি সার্কেলে আয়োজিত ২২টি সার্কেলে সপ্তাহ ব্যাপী আয়কর মেলা। সপ্তাহব্যাপী রাজস্ব আয় হয়েছে ৮ কোটি ৩২ লক্ষ ৯৮ হাজার ৮শত ৮৭ টাকা। আয়কর মেলায় সেবা নিয়েছে ১ লক্ষ ৩৫ হাজার ৮ শত ২৯ জন।
বিগত বছরের চেয়ে রাজস্ব আদায় অতিক্রম করে বিরাট সফলতা অর্জন করেছে কর অঞ্চলের বরিশালের কর্মকর্তা-কর্মচারীগন। এক সপ্তাহ ব্যাপী মেলায় ৮ কোটি ৩২ লক্ষ ৯৮ হাজার ৮শত ৮৭ টাকা। মেলায় সেবা নিয়েছে ১ লক্ষ ৩৫ হাজার ৮ শত ২৯ জন। এসময় পুরাতন করদাতারা রিটার্ন দিয়েছে ১৮ হাজার ৩ শত ৬১ জন। এবছর সপ্তাহব্যাপী মেলার মাধ্যমে নতুন ই-টিআইএন রি -রেজিষ্টেশন সেবা গ্রহন করেছে ৮ শত ৬৯ জন।
২০১৮ সালের আয়কর সপ্তাহব্যাপী মেলায় যে রাজস্ব আদায় তা ২০১৭ সালের চেয়ে বিরাট অংকের টাকা রাজস্ব আদায় করতে সক্ষমতা দেখাতে পেরেছে এবারের মেলার বরিশাল কর অঞ্চল প্রধান ও তার সহযোগী কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
প্রসঙ্গত, গত মঙ্গলবার (১৩ নভেম্বর) থেকে সপ্তাহব্যাপী আয়কর মেলা-২০১৮ শুরু হয়। ‘উন্নয়ন ও উত্তরণ, আয়করের অর্জন’ এ স্লোগান সামনে রেখে এ বছর আয়কর মেলার প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয় ‘আয়কর প্রবৃদ্ধির মাধ্যমে সামাজিক ন্যায়বিচার ও ধারাবাহিক উন্নয়ন নিশ্চিতকরণ।’ এবারের আয়কর মেলা হয় ১৩ নভেম্বর থেকে ১৯ নভেম্বর পর্যন্ত।
বরিশাল কর অঞ্চল উপ কর কমিশনার সদর (প্রশাসন) আবুল কালাম আজাদ জানান, মেলার শেষ মুহুর্তে করদাতাদের ভিড় সামাল দিতে তাদের বেশ বেগ পেলেও আমরা আনন্দিত বিগত দিনের রাজস্ব আদায়ের পরিমান অতিক্রম করতে পারায়।তিনি আরো জানান ভবিষ্যতে সেবা নিশ্চিতকরণে মেলার আকার বড় করা হবে।
এবারের রাজস্ব আদায়ের পরিসংক্ষানে দেখা যায়, গত ১৩ নভেম্বর মেলায় রাজস্ব এসেছে ৫৫ লক্ষ ৫৪ হাজার ৩ শত ৫৬ টাকা। সেবা নিয়েছে ৩ হাজার ২ শত ৮ জন। রিটার্ন দিয়েছে ১ হাজার ৩ শত ৩৮ জন। নতুন করদাতা ই-টিআইএন হয়েছে ৮৫ জন।
১৪ই নভেম্বর রাজস্ব আদায় ৫৯ লক্ষ ৫৬ হাজার ১ শত ৮৭ জন। সেবা নিয়েছে ১২ হাজার ৩ শত ৪১ জন। রিটার্ন দিয়েছে ১ হাজার ত শত ৪৫ জন। এসময় নতুন করদাতা ই-টিআইএন সৃষ্টি করা হয়েছে ১ শত ১৬ জন।
১৫ই নভেম্বর রাজস্ব আদায় হয়েছে ৯৫ লক্ষ ১৩ হাজার ৪ শত ৬৮ টাকা। সেবা নিয়েছে ২৩ হাজার ৮ শত ৬৩ জন। রিটার্ন দিয়েছে ২ হাজার ২ শত ২৯ জন। নতুন ই-টিআইএন হয়েছে ১ শত ১৮জন।
১৬ই নভেম্বর মেলায় রাজস্ব আদায় ৮০ লক্ষ ০৯ হাজার ৩ শত ৭১ টাকা। সেবা নিয়েছে ১৬ হাজার ৪ শত ৩৭ জন। রিটার্ন দিয়েছে ২ হাজার ৪ শত ৪৪ জন। নতুন ই-টিআইএন গ্রহীতা হয়েছে ৫০ জন।
১৭ নভেম্বর রাজস্ব মেলা থেকে রাজস্ব আদায় হয়েছে ১ কোটি ১৯ লক্ষ ১৮ হাজার ০২৪ জন। সেবা নিয়েছে ১৯ হাজার ৪ শত ৩৪ জন। রিটার্ন দিয়েছে ২ হাজার ৮ শত ৮২ জন। নতুন ই-টিআইএন হয়েছে ১ শত ৮ জন।
১৮ই নভেম্বর রাজস্ব আদায় ১ কোটি ৫ লক্ষ ২৩ হাজার ৮ শত ৫৫জন। সেবা নিয়েছে ২৪ হাজার ৭ শত ২৫ জন। রিটার্ন দিয়েছে ৩ হাজার ৮ শত ৪৭ জন। এসময় ই-টিআইএন নতুন করদাতা হয়েছে ১ শত ৮০ জন।
১৯ই নভেম্বর আয়কর মেলার শেষ দিনে রাজস্ব আদায়ের পরিমান দাড়িয়েছে ২ কোটি ৭৩ লক্ষ ২৩ হাজার ৬ শত ২৬ টাকা। সেবা দেওয়া হয়েছে ৩৫ হাজার ৮ শত ২১ জনকে।শেষ মুহুর্তে পুরাতন করদাতারা রিটার্ন দাখিল করেছে ৪ হাজার ২ শত ৭৬ জন। এবং নতন করদাতা ই-টিআইএন গ্রাহক হয়েছে ২ শত ১২ জন।
উল্লেখ্য ২০১৭ সালের সপ্তাহব্যাপী আয়কর মেলার মাধ্যমে রাজস্ব আদায় করা হয়েছিল ৬ কোটি ৭০ লক্ষ ৩৪ হাজার ১ শত ৮২ টাকা। সেময়ের মেলায় সেবা গ্রহন করেছিল ১ লক্ষ ০৩ হাজার ৮ শত ০৮ জন। রিটার্ন জমা দিয়েছিল ১০ হাজার ৯ শত ৬৪ জন। নতুন করদাতা গ্রাহক ই-টিআইএন সৃষ্টি হয়েছিল ৯ শত ৫১ জন।
বরিশাল কর অঞ্চলের কর্মকর্তারা মনে করেন বর্তমানে সমাজে বসবাস করা বিভিন্ন চাকুরীজীবী সহ ব্যবসায়ীদের মাঝে পূর্বের চেয়ে অনেক সচেতনা সৃষ্টি হওয়ার কারনেই এবারের আয়কর মেলায় রাজস্ব আদায় বেশী হয়েছে।তারা আরো জানান, এখানে যারাই এসেছে তাদের কে সেবা দেওয়ার চেষ্ঠা করেছি।
মেলার শেষ দিনে টাউন হলে পর্যাপ্ত জায়গা না থাকার কারনেই দেখা গেছে অনেক করদাতা বাহিরের মাঠে বসে তাদের ফরম পুরন করতে হয়েছে। এসময় অনেক করদাতারা বলেন, আগামীতে যেন আরো বড় স্থানে আয়কর মেলার আয়োজন করা হয় তাহলে গ্রাহকদের ভোগান্তি কম হবে বলে তারা মনে করেন। তবে কর মেলার আয়োজকদের বিরুদ্বে ছিল না সেবা ত্রুটির কোন অভিযোগ।