বরিশালে সক্রিয় দুই লাঠিয়াল গ্যাং….

লেখক:
প্রকাশ: ৫ years ago

মাসুদ রানা,বরিশাল : বরিশাল-ভোলা সীমানার মেঘনা নদীতে জেগেওঠা চরে সামছু-তারেক বাহিনীর সন্ত্রাসে গৃহহীন হয়ে পড়েছে দুই জেলার লাখো কৃষক।

এমনকি জেলা দুটির মেহেন্দিগঞ্জ ও ভোলা সদর অংশের সীমানা নির্ধারন করতে পারছে না প্রশাসন। অন্যদিকে আধিপত্য বিস্তার ও পাঁচ হাজার একর চরের বিশাল স¤্রাজ্যের নিয়ন্ত্রন ধরে রাখতে লাঠিয়াল বাহিনীর তিন শতাদিক সদস্যের দুটি দল বিভিন্ন সময়ে অস্ত্রসহ ভয়ার্ত রুপে মহড়া দিয়ে ভীতিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি করে। হামলা-মামলার বেড়াজালে ফেলে কৃষকদের তাড়িয়ে দিয়ে মহিষ পালন করা হয় সেখানে।
এদিকে আতংক গ্রস্থ হয়ে প্রান বাঁচাতে” এলাকা ছেড়ে ঢাকা কিংবা বরিশাল শহর’র ভাড়া বাড়িতে থাকে অনেকে । আবার কেউ কেউ বস্তিতে ও সরকারি ‘আশ্রয় প্রকল্পে’ বসবাস করছে । একইসাথে এই দুই সন্ত্রাসীর স¤্রাজ্যের মধ্যকার নদীতে মাছ ধরতে হলে কোটি টাকা দাধন দিতে হয় জেলেদের।

অন্যথায় জলদস্যূদের ফাপরে ফেলে মুক্তিপন আদায় করা হয়। কেউ প্রতিবাদ করলে কুপিয়ে-পিটিয়ে নদীতে ভাসিয়ে দেওয়া হয়। সেখানকার সাধারণ মানুষের আর্তনাদ’র আওয়াজ থানা পুলিশ জানলেও অদৃশ্য নানান পরিস্থিতিতে একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তারকারি এ সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে ব্যবস্থ্যা নিতে পারছে না।
সরেজমিনে ঘুরে ভূক্তভোগিরা জানান, বেশিরভাগ সময়ে থানা পুলিশ মামলা নেয় না। তাই ভয়ে আতংকে ত্যাক্ত/বিরক্ত হয়ে নির্যাতনের শিকার মানুষেরা থানা পুলিশের কাছে অভিযোগ নিয়ে যাচ্ছে না।
সেইসাথে বিছিন্ন এলাকা হওয়ায় দুই জেলার ডিসিদের কাছে সেলিম রাঢ়ীসহ একাদিক অভিযোগকারি আবেদন করেও সীমানা নির্ধারন ও সন্ত্রাসীদের হাত থেকে রক্ষা পাচ্ছে না।

অনুসন্ধান সূত্রে জানা গেছে, বরিশাল মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলা ও ভোলা সদর সীমানায় মেঘনা নদীতে ৫ হাজার একর বিস্তৃত এলাকাজুড়ে চর জেগে উঠেছে। দুই জেলার প্রায় এক লাখ সাধারণ মানুষের অংশিদারিত্ব রয়েছে। ভাঙ্গনের সময়ে বিভিন্ন এলাকায় অবস্থান নেয়া মানুষ,জেগেওঠা নিজ ভূমিতে ফিরে আসতে চাইলেও চরাঞ্চলের সন্ত্রাসের গডফাদার সামছু গাজি ও তারেক বাহিনীর সান্ত্রাস ও চাঁদাবাজির কারনে ভয়ে কেউ সামনে আসে না।
সবসময় ভয়ংকর এক অস্থির পরিস্থিতি তৈরি করে রাখে সেখানে। তাদের দানবীয় কর্মকান্ডে দুই জেলার সীমানা পর্যন্ত নির্ধারণ করা সম্ভব হয়নি। জানা গেছে,মেহেন্দিগঞ্জ গোবিন্দপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা (বর্তমানে উলানিয়া থাকে) সামছুউদ্দিন গাজী ও তারেকের দুটি লাঠিয়াল গ্রæপ রয়েছে।

চরের কৃষক অংশিদারদের কাউকেই আসতে দেয় না ওই গ্রæপটি। যারা টাকা দেয় তাদের সীমানা নির্ধারন করে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য থাকতে দেওয়া হয়। সে ক্ষেত্রে যারা মহিষ বা গরু পালন করে এক জোড়া মহিষ/গরু লালন পালনের জন্য বাৎসরিক ৫ হাজার টাকা দিতে হয়।
আর কেউ কৃষি কাজ করলে প্রতি দেড় একর জমিতে স্থান ভেদে ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকা দাদন নেয়। চর এলাকা ঘুরে দেখা গেছে,সাহেব আলী,বাচ্চু মাঝি,আবুল কালাম,মেঘা চরের জাহাঙ্গীর আকন, সালু ঢালী,কাশেম ঘোষ, হুমায়ুন জমাদ্দার,নোয়াখালী এলাকার গোধা নামের এরা সবাই কয়েক হাজার মহিষ পালন করেন।

তারা প্রত্যেকে সামছু ও তারেকের কাছে মহিষ পালনে প্রতিজোড়া বাবদ টাকা পরিশোধ করেন। মেহেন্দিগঞ্জের সীমানার কাছে ‘চরলতা’ চরে মহিষের কিল্লার দায়িত্বে থাকা আবুল হোসেন (ছদ্ম নাম) বলেন, তার মালিক গোধা ভাই’র বাড়ি নোয়াখালী। প্রতি জোড়া মহিষ পালনের জন্য সামছু বাহিনীকে প্রতি বছর ৫ হাজার টাকা করে দিতে হয়। ’
তা না হলে মহিষ পালন করা সম্ভব নয়। সামছু-তারেক বাহিনীর সাথে সেকেন্ড ইন কমান্ডার হিসেবে ত্রাসে সক্রিয় অংশ নেয়,ইউপি সদস্য জয়নাল ,কৃষ্ণ মজুমদার,অহিদ সরদার,তারেকের খালাতো ভাই মোশারেফ,আলমগীর,রাসেল,রাকিব। গোবিন্দপুরের আশ্রয়ন প্রকল্পে থাকা অধিকাংশ যুবকদের এবং উলানিয়া-পাতারহাট এলাকার বেকার যুবকদের ব্যবহার করে এ লাঠিয়াল বাহিনীতে।

নিজস্ব ট্রলার ও স্প্রিড যোগে সময়ে অসময়ে টেডা-ধারালো দা এবং অস্ত্র নিয়ে মহড়া দেয়। অসমর্থিত সূত্রের দাবি, এই লাঠিয়াল গ্যাং নোয়াখালি অঞ্চলের জলদস্যূদের কাছ থেকে বেশ কয়েকটি পিস্তল এনেছে। যে গুলো চরে মহড়া দেওয়ার সময় ব্যবহার হয়। এদিকে চরে পালিত পশুর বাৎষরিক টাকা না দিলে গরু-মহিষ-ছাগল ও কৃষি কাজের ট্রাক্টর নিয়ে আসে গোবিন্দপুর ক্যাম্পে। সেখানে কয়েকদিন অপেক্ষার মধ্যে কৃষক টাকা না দিলে নিকট-বর্তী নোয়াখালির একটি চক্রের কাছে বিক্রি করে দেওয়া হয়।

একই সাথে বেশ কয়েকটি স্পটে চরের মধ্যকার ছোট ছোট নদীর মতো রয়েছে। জোয়ারে মাছ ঢুকে পড়ে সেখানে। একেক মৌসুমে ৫০ লাখ টাকা করে দাদন দিয়ে মাছ ধরতে হয় জেলেদের। ১২/১৩ টি ইলিশের মাছ ঘাটও তাদের নিয়ন্ত্রনাধীন। এছাড়া কৃষি মৌসুম আসলেই কৃষকের ধান-সবজি কেটে নিয়ে যায় তারা।
এই সন্ত্রাসের নেপথ্যে রয়েছে দীর্ঘ বছরের ইতিহাস। এর আগে চর এলাকা নিয়ন্ত্রন করতো আলতু সরদার’র লাঠিয়াল গ্যাং। সে সময় ওই দলের সদস্য হিসেবে হাতে খড়ি নেয় সামছু। তিনি মারা যাওয়ার পর সম্প্রতি তিন বছর যাবৎ এ সম্্রাজ্যের হাল ধরেছে,তার স্ত্রী রুমা বেগম ও বড় ছেলে তারেক। সঙ্গে রয়েছে ক্যাডার সামছু সরদার। বর্তমানে রুমা বেগমের দিক নির্দেশনা অনুযায়ী তারেক-সামছু একত্রিত হয়ে আধিপত্য সচল রেখেছে।

তথ্য মতে সামছু মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার গোবিন্দপুর ইউনিয়নের ইউপি সদস্য। জনপ্রতিনিধির আড়ালে তিনি কিভাবে জনগনের সামনে ভিলেন রুপে অবস্থান নিতে পারলেন তা নিয়ে স্থানীয় পর্যায়ে সমালোচনার ঝড় বইছে।
এদের প্রত্যেকেই দমন নিপীড়নের মধ্য দিয়ে উপার্জিত টাকা কোটি ছাড়িয়েছে। বরিশাল কাশিপুর,মেহেন্দিগঞ্জ,নোয়াখালীতে দুই তিনটি করে ভবন রয়েছে। তাদের অপকের্মের বিরুদ্ধে কেউ যাতে মুখ খুলতে না পারে সেজন্য থানা পুলিশ ম্যানেজ করে রাখেন। একইসাথে থানা এলাকা থেকে চর গুলো প্রায় ট্রলার যোগে এক ঘন্টার পথ। তাই অনেক সময় আর্তনাতের খবর তীর পর্যন্ত এসে পৌছায় না। যদিও এসব ঘটনা কেন্দ্রিক থানায় দু’একটি অভিযোগ আসলেও থানায় বসেই মিমাংসার নামে হার মেনে চলে যায় ভূক্তভোগিরা। তাই অনেকেই আর মামলা করতে আসেন না থানায়।

দুর্গম এলাকার এসব খবর এসপিদের কান পর্যন্ত আসে না । চর-অঞ্চলেরএকই এদের বিস্তৃত নেটওয়ার্ক’র সামনে ভোলা অংশের মানুষেরাও জমিতে চাষাবাদ কিংবা ভোগ করতে পারে না। এরকমই ভূক্তভোগি মাকছুদা বেগম মেহেন্দিগঞ্জ ও ভোলা সদর’র সীমানবর্তী কানি বগা চরে ১০ বছর যাবৎ বসবাস করেন। তিনি বলেন,চরে তারা জমি কিনেছেন। সন্ত্রাসী সামছু ও তারেক দলবল নিয়ে আমাদের ওপর হামলা করেছে অনেকবার। চাষাবাদ করার শেষ সম্বল ট্রাক্টর কুপিয়ে আগুন দিয়ে পুড়ে ফেলেছে। চর ছেড়ে চলে যেতে বলেছে। এখানে মহিষ পালন করতে চায় তারা। অন্যথায় বাৎসরিক জমির সতাংশ অনুযায়ী চাঁদা দিতে হবে। এভাবে প্রতিনিয়ত হুমকি দিয়ে যাচ্ছে। থানা পুলিশও মামলা নেয় না। আমাদের সামর্থ্যও নেই মামলা করার। বেচে থাকার উপায় খুজে পাচ্ছি না।
একই চরে বসবাসকারি জহুর আলী ব্যাপারী বলেন,জীবীকার দায়ে চরে এসে গরু পালন শুরু করেছি। প্রতি জোড়া পালনে বছরে ৫ হাজার টাকা করে চাচ্ছে সামছু ও তারেক বাহিনী। টাকা দিতে পারিনি বলে কয়েকদিন আগে আমাকে পিটিয়ে গেছে। যখন আসে তখন তাদের সাথে দাও অস্ত্রসহ আসে টলার ভরে বাহিনীর কয়েক’শ লোক আসে । এর আগেও টাকা দিতে পারিনি বলে আমার দুটি গরু তাদের গোবিন্দপুর ক্যাম্পে নিয়ে জবাই করে খেয়ে ফেলেছে। প্রতিবাদ করার কোন সুযোগ নেই। এখন আল্লাহ ছাড়া আমাদের আর কেউ নেই।

রিয়াজ হাওলাদার বরিশালে ভাড়া বাসায় থাকেন। তাদের পিতৃ ভিটা ছিলো মেহেন্দিগঞ্জ জেগেওঠা চরে। তার বাবা ও চাচাদের বংশের প্রায় ৫’শ একর জমি রয়েছে সেখানে। অথচ সামছু ও আলতু সরদারের ছেলে তারেক সন্ত্রাসি বাহিনী দিয়ে হুমকি দিচ্ছে। জমির মালিক ও কৃষকরা জমি ভোগ করতে গেলে তাদের ওপর হামলা করে হাত পা ভেঙ্গে দেওয়া হয় । ভীতিকর পরিস্থিতির কারনে আমরা বংশের কেউ চরের জমি ফসল চাষ কিংবা বসবাস করতে যাচ্ছি না।

অপর এক ভূক্তভোগি কাশেম হাং বরিশাল বসবাস করেন। তিনি জানান,তার বাপ-দাদার প্রায় দুই’শ একর জমি রয়েছে চরের বিভিন্ন মৌজায়। জমি ভোগ করতে পারি না। গেল ১০/১২ দিন আগে প্রায় ৫০/৬০ জন লোক নিয়ে চরে শুধু মাত্র জমি দেখতে গিয়েছিলাম। খবর এসেছে সামছু বাহিনী ধাওয়া করে আসতেছে। তাই জমি না দেখেই ফিরে আসি। ভোলার কিছু লোকও ওই জমির কিছু অংশ ভোগ করে বলে তিনি প্রতিদিনের সংবাদের কাছে বলেন।

একই ঘটনার স্বীকার সফিজ উদ্দিন চকিদার,রাজা,অলি,মন্নাফসহ হাজার হাজার মানুষ। এসব বিষয়ে লাঠিয়াল গ্যাং প্রধান সামছু জানান,তিনি চরে আসা যাওয়া করেন মানুষ যাতে ভালো থাকেন। তার বিরুদ্ধে সব ষড়যন্ত্র হচ্ছে বলে দাবি করেন। একই বিষয়ে লাঠিয়ালের অপর নেতা তারেক সরদার’র কাছে জানতে গেলে তিনি তার ঘরের দরজা বন্ধ করে কথা বলতে অপরাগতা প্রকাশ করেন।

অন্যদিকে সাংবাদিক পরিচয় পাওয়ার পরে মোবাইল ফোনের লাইন কেটে দেন। মেহেন্দিগঞ্জ গোবিন্দপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন তালুকদার জানান,তার ইউনিয়নের প্রায় ২০ হাজার মানুষ আশ্রয়হীন হয়ে আছে। সীমানা নির্ধারন না হওয়ায় চরে হাঙ্গামা লেগেই থাকে। তবে অজ্ঞাত কারনে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে তিনি মুখ খুলতে চাইছেন না। ভোলা রাজাপুরের সাবেক ইউপি সদস্য ওহাব আলী বলেন,চরের জমিতে সাধারণ মানুষ ভিড়তে পারে না।

পিটিয়ে/কুপিয়ে নদীতে ফেলে দেয়। তাই আমরা এলাকার মানুষ সেখানে যাচ্ছি না। হাইকোর্টে মামলা (মামলা নং-৬৫৭৫১২) করেছি। ডিসির কাছে আবেদনের পর বিভাগীয় কমিশনারের কাছে মার্ক করে দিয়েছিল । সন্ত্রাসীদের শক্তির সামনে তারাও আর ব্যবস্থা নিতে পারেনি।

চরে যোগাযোগ করতে হলে ট্রলারে প্রায় দেড় ঘন্টা লেঘে যায়। তাই পুলিশও বেশি অপ্রীতিকর ঘটনা কেন্দ্রিক গুরুত্ব দেয় না। ভোলা সদরের রাজাপুর ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান মিজান খান বলেন,চরের জমিতে তার এলাকার প্রায় ২০ হাজার মানুষের অংশিদারিত্ব আছে। তার নিজেরও জমি রয়েছে।
চাষাবাদ কিংবা বসবাস করতে গেলে মেহেন্দিগঞ্জের সামছু ও তারেক সন্ত্রাসী বাহিনি নিয়ে হামলা করে। মালামাল লুটপাট করে নিয়ে যায়। জেলেরা মাছ ধরতে গেলে টাকা নেওয়া হয়।

যেখানে মাছের অভয়অরেণ্য সেখানে ৫০ লাখ,৭০ লাখ টাকায় গাড়া ( ভাটার সময় নদীর মাঝে গাছ গেড়ে জাল পেতে নদীর মুখ আটকে রেখে মাছ ধরা) পাততে দেওয়া হয়। ভোলা ডিসির কাছে সীমানা নির্ধারণ ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আবেদন করেছিলাম। এছাড়াও এ সন্ত্রসী বাহিনীর বিরুদ্ধে ভোলা থানায় ৪টি ডাকাতি/লুটপাট মামলা করেছি। । কিন্তু কোন প্রতিকার পাইনি। তাই এখন আর চরে যাচ্ছি না। অথচ ৫ হাজার একর এলাকার বিস্তৃত চর কৃষি ও বসবাসের জন্য খুবই উপযোগি। ওই চরে কৃষকরা ফসল চাষ করতে পারলে পুরো বরিশাল বিভাগের মানুষের খাদ্য চাহিদা মেটানো সম্ভব। ভোলা সদরের সহকারি কমিশনার (ভূমি) কাওছার হোসেন জানিয়েছেন, একটি গ্রুপ চর দখল করে আছে, তাদের অসহযোগিতার কারনে বরিশাল-ভোলা জেলার মেহেন্দিগঞ্জ ও ভোলা সদর অংশের ডি-মার্কেশন বা সিমানা নির্ধারণ করতে পারিনি। তাই এবার পুলিশ ক্যাম্প ও নির্বাহি ম্যাজিষ্টেট রেখে জরিপ কাজ সম্পন্ন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মেহেন্দিগঞ্জ থানার ওসি আবিদুর রহমানকে পাওয়া যায় নি। ওসি তদন্ত জানান,স্যার ছুটিতে আছেন। আমি চর সম্পর্কে কিছু জানিনা।

মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার ভারপ্রাপ্ত সহকারি কমিশনার (ভূমি) আমিনুল ইসলাম জানিয়েছেন, বিভাগিয় কমিশনার স্যারকে চর নিয়ে বিরোধ’র বিষয়টি জানানো হয়েছে। চর দখল সন্ত্রাসের বিষয়ে তিনি অবগত নন বলে জানান। মেহেন্দিগঞ্জ থানার ওসি সন্ত্রাসীদের আধিপত্যের বিষয়ে কথা বলতে নারাজ। তবে তিনি বরিশালের ডিসি ও এসপির কাছে চরের সিমানা বিরোধ’র বিষয়ে জানিয়েছেন বলে প্রতিদিনের সংবাদকে নিশ্চিত করেন।
বরিশাল-৪ আসনের (মেহেন্দিগঞ্জ) সাংসদ পঙ্কজ দেবনাথ বলেন ,এক শ্রেনির ভূমি দস্যূরা চর দখল নিয়ে মারামারি হাঙ্গামা করে। তাদের কোন ভাবেই রুখে দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।

এদের দস্যূতার দায় আমি নেব না। আমি বরিশাল বিভাগীয় কমিশনারকে বলেছি ব্যবস্থা নিতে। মন্ত্রণালয়ে ডিও লোটার দিয়ে জরিপ করে সীমানা নির্ধারণ করার জন্য। আর ডিসিরা এ্যাকশন নিলে দ্রæত সমাধান সম্ভব হতো। বরিশাল জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মাইদুল ইসলাম জানান, সন্ত্রাসীরা চর দখল করে আছে।
ওদের কারনে দিন তারিখ নির্ধরণ হওয়ার পরেও ভোলা বরিশালের সীমানা নির্ধরণ করা সম্ভব হয়নি। তবে কারা সন্ত্রাস করে তাদের নাম প্রকাশে অনিচ্ছা দেখান। বরিশাল জেলা পুলিশ সুপার সাইফুল ইসলাম জানান, লাঠিয়াল বাহিনী ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে নজরদারি রয়েছে।

তবে চর এলাকার সীমানা নির্ধারন না হওয়ার কারনে ব্যবস্থা নিতে সমস্যা হচ্ছে। দুই জেলার ডিসি এ সমস্যা সমাধান করবেন। ভোলা জেলার পুলিশ সুপার সরকার মোহাম্মদ কাওছার হোসেন এ বিষয়ে ওয়াকিবহাল কিনা সে বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি পরে কথা বলবেন বলে জানান। বরিশাল জেলার ডিসি এস এম অজিয়র রহমান জানান,দুই জেলার সীমানা নির্ধারন নিয়ে কোন বিষয় থাকলে সেটা বিভাগীয় কমিশনারের নিকট আবেদন করতে হবে।

চর দখল বিষয়ে শুনে আসছি আমি অবশ্যই ব্যবস্থা গ্রহন করবো। বরিশাল বিভাগীয় কমিশনার মো: ইয়ামিন চৌধুরী জানান, বরিশাল-ভোলা জেলার মেহেন্দিগঞ্জ অংশের সীমানা নিয়ে বিরোধের কথা শুনেছি। দুই ডিসির কাছ থেকে খোঁজ খবর নিয়ে অবশ্যই ব্যবস্থা নেব।