কোতয়ালী মডেল থানার ওসি আওলাদ হোসেন মামুন জানান-পুলিশকে মারধর ও জননিরাপত্তা বিঘœ করার অভিযোগে আটক ছয়জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত নামা ৫০/৬০ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। কোতয়ালী মডেল থানার এসআই নজরুল বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। মামলা নম্বর ৪৮।
মামলায় নামধারী আসামীরা হলেন- বাসদ বরিশাল জেলা শাখার সদস্য সচিব ও সিটি নির্বাচনে মেয়র প্রার্থী ডা. মনীষা চক্রবর্তী, বাসদ বরিশাল জেলা শাখার আহ্বায়ক ইমরান হাবিব রুমন, বরিশাল জেলা সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের অর্থ সম্পাদক নাসরিন আক্তার টুম্পা, জেলা শ্রমিক ফ্রন্টের অর্থ সম্পাদক মিঠুন চক্রবর্তী, সদস্য জাকির হোসেন ও নূর ইসলাম।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বরিশাল নগরীতে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা উচ্ছেদ বন্ধ করা ও অবিলম্বে লাইসেন্স দেয়ার দাবিতে অশ্বিনী কুমার হলের সামনে মানববন্ধন করে ব্যাটারিচালিত রিকশা শ্রমিক-মালিক সংগ্রাম কমিটি। এর সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করেন বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দলের নেতাকর্মীরা। এরপরে থালা-বাসন নিয়ে ভুখা মিছিল বের করে রিকশা শ্রমিকরা। মিছিলটি নগরীর গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে বরিশাল সিটি করপোরেশনের সামনে গিয়ে অবস্থান নেয়। এরপর নেতাকর্মীরা সিটি করপোরেশনে স্মারকলিপি দেন। স্মারকলিপি প্রদান শেষে রিকশা শ্রমিক ও বাসদের নেতাকর্মীরা বরিশাল জেলা ও দায়রা জজ আদালতের সামনে অবস্থান নেন। এসময় পুলিশ তাদের স্থান ত্যাগ করতে বললে পুলিশ ও রিকশা শ্রমিকদের মধ্যে প্রথমে বাকবিতণ্ডা সৃষ্টি হয়। একপর্যায়ে পুলিশ রিকশা শ্রমিকদের উপর লাঠিচার্জ করলে দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ বাঁধে। এতে উভয় গ্রুপের ২০ জন আহত হন।
পুলিশ সদস্যদের মধ্যে আহতরা হলেন, বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের কোতয়ালী মডেল থানা পুলিশের সহকারী কমিশনার শাহনাজ পারভীন, ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাহ মো. আওলাদ হোসেন, এসআই নজরুল ইসলাম, কনস্টেবল শারমিন, ইতি, সুরমা ও সাদিয়া। এছাড়াও রিকশা শ্রমিক ও বাসদের প্রায় ১৩ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন বলে খবর পাওয়া গেছে। এই বিষয়ে বরিশাল সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের বরিশাল জেলা শাখার সভাপতি সন্তু মিত্র বলেন, গরিব রিকশা শ্রমিকদের ন্যায্য দাবি আদায়ের লক্ষ্যে নগরীতে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। তবে পুলিশ এই শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে বাধা সৃষ্টি করে আমাদের নেতাকর্মী ও রিকশা শ্রমিকদের ওপর লাঠিচার্জ করেছে। আমরা এই ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।
এই বিষয়ে জানতে চাইলে বরিশাল কোতয়ালী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাহ মো. আওলাদ হোসেন বলেন, প্রথমত এই কর্মসূচি করার জন্য তাদের কোনো পূর্বানুমতি ছিল না। কথা ছিল তারা সিটি করপোরেশনের গিয়েই তাদের কর্মসূচি শেষ করবে। কিন্তু তারা সেখান থেকে নগরীর ব্যস্ততম সড়ক জেলা ও দায়রা জজ আদালতের সামনে অবস্থান নেয়। তাদের সেখান থেকে সরে যেতে বলা হলে তারা আমাদের পুলিশ সদস্যদের ওপর হামলা চালায়। তাই আত্মরক্ষার্থে পুলিশ লাঠিচার্জ করে।
এ ব্যাপরে বরিশাল কোতয়ালী মডেল থানার সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি) শাহনাজ পারভীন বলেন, অনুমতি না নিয়ে রাস্তা বন্ধ করে বিক্ষোভ মিছিল করে শ্রমিকরা। পুলিশ তাদেরকে দ্রুত রাস্তা যানজট নিরসনের জন্য মিছিল শেষ করতে বললে তারা পুলিশের উপর চড়াও হয় এবং পুলিশের সাথে হাতাহাতির সৃষ্টি হয়। এ সময় নারী পুলিশ কনেস্টবলসহ ৭ জন পুলিশ সদস্য আহত হয়। লাঠিচার্জের বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন তাদেরকে সরে যাওয়া