শামীম আহমেদ ॥ বরিশাল শের ই বাংলা মেডিকেল কলেজে পর্যাপ্ত লোকবল সংকট থাকলেও করোনা সনাক্তের ল্যাব চালু হতে কমপক্ষে আরো ২ থেকে ৩ দিন লাগবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। পাশাপাশি দ্রুত জনবল নিয়োগের জন্য সংশ্লিষ্ট দফতরকেও চিঠি দিয়েছে কলেজ কর্তৃপক্ষ। এরইম্যধ্যে করোনা নিয়ে নাজুক পরিস্থিতিতে কলেজের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের প্রধানের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি নেয়ার গুঞ্জন নতুন আলোচনার সৃষ্টি করেছে, তবে যদিও এ বিষয়ে কিছুই জানেন না বলে জানিয়েছেন কলেজ অধ্যক্ষ।
পাশাপাশি অব্যাহতি দিলেও করোনা ভাইরাস সনাক্তের কার্যক্রমে কোন প্রভাব পরবে না বলেও মনে করছেন তিনি। শনিবার (০৪এপ্রিল) সকালে বরিশাল শের ই বাংলা মেডিকেল কলেজের দ্বিতীয় তলায় পিসিআর মেশিন বা ল্যাব স্থাপনকৃত কক্ষের কাজ পরিদর্শন করেছেন পানি সম্পদ মন্ত্রনালয়ের প্রতিমন্ত্রী কর্ণেল (অব.) জাহিদ ফারুক শামীম-এমপি।
পরিদর্শন শেষে তিনি সাংবাদিকদের জানান, মাইক্রোবায়োলজি বিভাগে ল্যাব স্থাপনের লক্ষ্যে কক্ষ সংস্কারের কাজ প্রায় শেষের দিকে। সবাই আন্তরিকতার সাথে কাজ করেছ। আশকরছি, আগামী পরশু বা তার পরের দিন ল্যাবের কার্যক্রম আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু করতে পারবো। আগামীকাল সিলেট থেকে বিশেষজ্ঞরা বরিশালে আসবেন। তারা আসার পরেই পিসিআর মেশিন স্থাপন ও পরবর্তীতে এর কার্যক্রম শুরু হবে। এসময় তিনি বলেন, আমরা সবকিছু মাথায় রেখেই কাজ করছি। কোন কিছুতেই এ কার্যক্রম বিলম্ব হওয়ার কোন কারণ দেখছি না। আর কোন চিকিৎসক যদি অব্যাহতির কথা বলে থাকেন তবে এটা কলেজ কর্তৃপক্ষ’র বিষয়।
এদিকে করোনা সনাক্তে ল্যাব চালু হলেও লোকবল সংকটের কারনে তা সঠিকভাবে চলা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন কলেজের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান এমটি জাহাঙ্গীর হুসাইন। পাশিাপাশি যে জায়গায় ল্যাব স্থাপন হচ্ছে সেটিও ঝুঁকিমুক্ত নয় বলেও মত তার। তবে মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের প্রধানের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি চেয়ে আবেদনেরও গুঞ্জন থাকার বিষয়টি নিয়ে কিছুই জানাতে রাজি হননি তিনি।
যদি এ বিষয়ে কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডাঃ অসীত ভূষণ দাস জানান, বিভিন্ন মাধ্যমে এ খবরটি আমার কানেও এসেছে, তবে অফিসিয়ালি কারো অব্যাহতি পত্র আমি পাইনি। আর যদি আমাদের কারণে কেউ অব্যাহতি দিতে চায়, সেটা আমরা নিজেরাই আশাকরি আলোচনা করে ঠিক করে ফেলতে পারবো। তবে কেউ ব্যক্তিগত কারণে দিলে আমাদের কিছু করার নেই। আর অব্যাহতি দিলেও করোনা ভাইরাস সনাক্ত কার্যক্রম বাধাগ্রস্থ হবে না বলে মত দেন তিনি। এছাড়া ভাইরোলজিষ্ট ও প্রশিক্ষিত টেকনোলজিষ্টের লোকবল সংকটের কথা জানিয়ে সার্বিক বিষয়ে কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডাঃ অসীত ভূষণ দাস জানান, শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজে বর্তমানে মাইক্রোবায়োলজি বিভাগে ২ জন সহকারি অধ্যাপক ও ২ জন টেকনিশিয়ায়ন রয়েছে। এখন আমাদের কলেজের ও হাসপাতালের যে জনবল রয়েছে তাদের প্রশিক্ষিত করে কাজ শুরু করতে চাই। তারপরও আমরা ২ জন সহকারি কিংবা সহযোগী অধ্যাপক, ২ জন টেকনিশিয়ান ও ২ জন ভাইরোলজিস্ট চেয়েছি কর্তৃপক্ষের কাছে। আশাকরি দ্রুত এ জনবল দেয়া হবে। সার্বিক দিক ঠিক থাকলে দ্রুত সময়ের মধ্যে করোনা ভাইরাস সনাক্তের পরীক্ষার কার্যক্রম শুরু করতে পারবো। বরিশাল শের ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডাঃ বাকির হোসেন জানান, কোন কিছু নিয়ে শঙ্কার কোন কারণ দেখছি না, সবকিছু ঠিকঠাক ভাবে এগিয়ে চলছে। পিসিআর মেশিনের কার্যক্রম শুরু হলে আমরা করোনা মোকাবেলায় আরো এগিয়ে যাচ্ছি। যা দক্ষিনাঞ্চলের মানুষের জন্য শুভকর হবে।