‘বরিশালে শুক্রবার বাল্যবিয়ে বেশি হয়ে থাকে। বিশেষ করে এই দিনের জুমার নামাজের পর এই বিয়েটা হয়ে থাকে। যারা এই বাল্যবিয়ে সঙ্গে জড়িত থাকে তারা বেশ চতুর হয়। কেননা ওই সময়টাতে সবাই নামাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকে। এই ফাঁকে তারা বিবাহকার্য সম্পন্ন করে।’ গতকাল দুপুরে বরিশালে সাংবাদিকদের সাথে শিশু আইন ২০১৩, বাল্য বিবাহ নিরোধ আইন ২০১৭ এর নিরীক্ষণ এবং প্রতিবন্ধী নারীদের অধিকার সম্পর্কিত কনভেনশন সভায় এসব কথা বলেন এনজিও ‘আভাস’ এর নির্বাহী পরিচালক রহিমা সুলতানা কাজল।
এসময় তিনি আরও বলেন, বরিশাল নগরীর ৬০ ভাগ মানুষের জন্ম নিবন্ধনের তথ্য অনলাইনে নেই। যে কারণে বাল্যবিবাহ রোধে কিছুটা হলেও সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। এছাড়া যাদের জন্ম নিবন্ধন অনলাইনে আসেনি তাদের কাগজপত্রও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। রহিমা সুলতানা বলেন, এলজিইডির সাথে আমরা একটি সমন্বয় করে প্রজেক্ট করেছি। সেই প্রজেক্টে দেখা গেছে অনেক মানুষের জন্ম নিবন্ধনই করা নেই। আমরা ওই প্রজেক্টে তিন হাজার মানুষের মধ্যে ১০০ জনের জন্ম নিবন্ধন অনলাইনে সার্চ করেছি, কিন্তু তাদের মধ্যে ৬০ জনের জন্ম নিবন্ধন অনলাইনে পাওয়া যায়নি। এই ৬০ ভাগ জন্ম নিবন্ধনকে এলজিইডি ভুয়া বলছে। তবে পরে আমরা চেক করে দেখেছি বালাম খাতায় ওই জন্ম নিবন্ধনের কাগজ পত্র রয়েছে কিন্তু অনলাইনে নেই।
এলজিইডি এই ৬০ ভাগ মানুষের জন্ম নিবন্ধন ভুয়া বলেছে, তবে এতে তাদের লাভ রয়েছে। মূলত জন্ম নিবন্ধন ভুয়া নয়, এগুলো অনলাইনে ওঠেনি। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে সভার সভাপতি রহিমা সুলতানা কাজল আরও বলেন, পুলিশ অনেক জায়গায় বাল্য বিবাহ বন্ধে তেমন কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করে না। কিন্তু তারাও কিন্তু বাল্য বিবাহ বন্ধ করতে পারে।’ বরিশাল রিপোটার্স ইউনিটির সভাকক্ষে আভাস ও প্লান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ এর সহযোগিতায় এই সভার আয়োজন করা হয়।
বরিশাল রিপোটার্স ইউনিটির সাধারণ সম্পাদক বাপ্পী মজুমদারের সভাপতিত্বে সভায় আরও বক্তব্য দেন প্লান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ বরিশালের প্রতিনিধি চাইল্ড স্পেশালিস্ট মো. রেজানুল হক, বরিশাল রিপোর্টার্স ইউনিটির সাবেক সভাপতি আনিসুর রহমান খান স্বপন, সহ-সভাপতি বিধান সরকার প্রমুখ। সভা সঞ্চালনা করেন গার্লস অ্যাডভোকেসি অ্যালিয়েন্স বাংলাদেশের কো-অর্ডিনেটর শ্রী সঞ্জয়। সভায় শিশু সুরক্ষা নীতিমালা ২০১৩ বাল্য বিবাহ নিরোধ আইন ২০১৭ এর দায়িত্ব কর্তব্য, মনিটরিং প্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনা করা হয়।