বরিশালে শীতের তীব্রতা বাড়ায় জমে উঠেছে ফুটপাতে শীতবস্ত্র বেচাকেনা

লেখক:
প্রকাশ: ২ years ago

শামীম আহমেদ ॥ শীতের আমেজ পড়েছে বরিশাল নগরীসহ পুরো দক্ষিনাঞ্চল জুড়ে। অগ্রহায়ণ মাসের শুরুতেই শীতের প্রবনতা কাটিয়ে পৌষে পড়ার সাথে সাথে শীতের তীব্রতা বাড়ছে। পাশাপাশি পড়ছে হালকা কুয়াশা দক্ষিণাঞ্চলের সব খানেই। আর শীত শুরুতেই বরিশাল নগরীর ফুটপাতে চলছে শীতবস্ত্রের জমজমাট বেচাকেনা। মধ্যবিত্ত, নি¤œ মধ্যবিত্ত ও নি¤œ আয়ের মানুষসহ প্রায় সকল শ্রেণি পেশার মানুষ ফুটপাত বাজারগুলো থেকে শীতের কাপড় কেনাকাটা করছে। দক্ষিণাঞ্চলে বইছে শীতের হিমেল হাওয়া।

গ্রামের পাশাপাশি এখন শহরে শীতের তীব্রতা বেড়েছে।এরপরও সর্দি, কাশিসহ শীতকালীন নানা রোগের হাত থেকে রক্ষা পেতে বাড়তি সতর্কতা নিচ্ছেন বরিশালবাসী। কিনছেন হালকা ও মাঝারি ধরনের শীতের গরম পোশাক। শুক্রবার রাতে নগরীর সিটি কর্পোরেশন ও জেলা পরিষদের সামনে দেখা যায় ক্রেতাদের ভিড়।

শুধু তাই নয় হাজী মোহাম্মাদ মহসিন মার্কেট, সিটি মার্কেট, নতুল্লাবাদ বাস টার্মিনাল, রূপাতলী বাস টার্মিনাল, লঞ্চঘাট, সদর রোডসহ নগরের বিভিন্ন স্থানের ফুটপাত ও মার্কেটগুলো ঘুরে দেখা গেছে শীতবস্ত্র বেচা-কেনা জমজমাট। মানুষ ঈদের মার্কেটের মতো আগ্রহ নিয়ে শীতের কাপড় কিনতে দেখা যায়। ভিড়ের কারণে দামাদামি ও যাচাই বাছাই করে কেনার সুযোগ অনেকটা কম পাচ্ছে ক্রেতারা। শুধু শীতের কাপড় পছন্দ হলেই একদামে কিনছে। বরিশাল জাদুঘরের সামনে ফুটপাতে বসা ব্যবসায়ী কবির বলেন, আমরা বছরে দুই ঈদ ছাড়া এই শীতে একটু বাড়তি ব্যবসা করার সুযোগ পেয়ে থাকি। তবে সারা বছর আবার এ সুযোগ পাওয়া যায় না বলে তিনি জানান।

অপর এক ব্যবসায়ী আলম বলেন, গত বছরও শীতবস্ত্রের মার্কেট জমজমাট ছিল। তবে এবার শীতের শুরুতেই ক্রেতারা আগে ভাগে শীতের কাপড় কিনে নিচ্ছেন। পলাশপুরের বাসিন্দা ক্রেতা সুপিয়া বেগম বলেন, শীতের প্রভাব আরো বেশি পড়ার আগেই এবার শীতের পোশাক কেনার জন্য ফুটপাতের মার্কেটে আসছি।

তিনি আরও বলেন, আমরা গরিব তাই আমাদের বেশি দামের পোশাক কেনার সামর্থ্য নেই। বর্তমানে সংসার চালাচেই হিমশিম খেতে হচ্ছে। তাই ফুটপাতের পোশাকই আমাদের এক মাত্র ভরসা। অন্য দিকে জর্ডন রোড এলাকার বাসিন্দা রাবেয়া বলেন, শীত এবার একটু বেশি পড়ায় মার্কেটে কিছুটা ভিড় বাড়ছে। মানুষের ভিড়ের কারণে দোকানেই ঢোকা যাচ্ছে না। দরদাম করে কেনাতো পরের কথা। তার পরও একটু আগে ভাগে কিনতে আসলাম। না হলে পরে বেশি দাম দিয়ে কিনতে হবে। সরেজমিন মার্কেটগুলো ঘুরে দেখা গেছে, শীত বস্ত্রের মধ্যে বেশি বেচা-কেনা হচ্ছে ছোট বাচ্চা ও বয়স্কদের কাপড়। মাথার টুপি, পায়ের ও হাতের মোজা, মাপলার, সুয়েটার, জাম্পার, ফুলহাতা গেঞ্জির দোকানেই বেশি ভিড় দেখা গেছে। মহসিন মার্কেট ও সিটি মার্কেটের কম্বল দোকানগুলোতেও ভিড় দেখা গেছে। শীত বস্ত্রের দোকানে ক্রেতার ভিড় বেড়ে যাওয়ায় সুযোগ বুঝে বিক্রেতারাও এবছর দাম অতিরিক্ত নিচ্ছেন বলে অভিযোগ করছে ক্রেতারা। বিক্রেতাদের বিরুদ্ধে প্রতিটি পণ্যের অতিরিক্ত দাম বেশি নেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন অধিকাংশ ক্রেতারা। সিটি করপোরেশনের আশপাশের পোশাকের দোকানে অনেকেই কিনছেন শীতের পোশাক। বিক্রেতারা বসেছেন গরম কাপড়ের পসরা সাজিয়ে। নগরীর আনাচে-কানাচে ঘুরে ভ্যান গাড়িতে করে যারা শীতের পোশাক বিক্রি করছেন তাদের ব্যবসাও জমজমাট। তবে গত বছরের তুলনায় এ বছর শীত এর চেয়ে আরো বেশি হতে পারে বলেও আশঙ্কা করছেন সাধারণ জনগণ।

ফুটপাতের ভ্যানগাড়ি থেকে পোশাক কেনা রিক্সা চালক সোহেল বলেন, হঠাৎ শীত নামার কারণে সন্ধ্যার পরে ঠা-া নিবারণের জন্য একটি সোয়েটার কিনলাম মাত্র ১০০ টাকা দিয়ে।

তিনি আরো বলেন, ১ শ’ টাকার এই সোয়েটার দিয়ে এবছরের পুরো শীত মোকাবেলা করবো। সামর্থ্য না থাকায় আমি প্রতিবছরই ফুটপাতের দোকানগুলো থেকে শীতের পোশাক কিনে থাকি। তাই এবছরও কিনলাম। ফুটপাতের দোকান হলো গরিবের শপিং মল। তাই আমার মতো গরিবরা এ দোকানগুলো থেকে প্রতিবছর শীতে কাপড় কিনতে থাকে।