বরিশালে শিলা বৃষ্টি ও ঝড়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি ॥ হিরো হোন্ডার কনসার্ট পন্ড

লেখক:
প্রকাশ: ৭ years ago

বরিশালে ঝড়-বৃষ্টি হয়েছে। জেলার বিভিন্ন স্থানে ঝড়ের পাশাপাশি হালকা বৃষ্টি হয়েছে। আবার কোথাও কোথাও শিলাবৃষ্টি হয়েছে বলে জানা গেছে। দেশের বিভিন্ন জেলায় শিলা বৃষ্টির আঘাত ও কালবৈশাখী ঝড়ে ৩ জনের মৃত্য ও বেশ কয়েকজন আহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এ ছাড়া ঝড়ের কারণে শুক্রবার সন্ধ্যার পর থেকে বিদ্যুৎ ব্যবস্থার ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে বলে জানা গেছে। যার কারণে নগরীতে বিদ্যুৎ বিভ্রাট হয়ে। উপজেলাগুলোতে এর মাত্রা আরো কয়েকগুন বেশী ছিল বলে প্রতিনিধিরা নিশ্চিত করেছেন। এদিকে ঢাকা বরিশাল নৌ রুটের যাত্রীবাহি জাহাজ গ্রীন লাইন ঝড়ের কবলে পড়েছে। গ্রীন লাইন যাত্রী এশিয়াটিক ফার্মাসিটিক্যাল লিমিটেডের বরিশাল রিজোওনাল ম্যানেজার জিয়াউল ইসলাম মান্না বলেন, মেঘনা নদীতে বসে গ্রীনলাইনটি ঝড়ের কবলে পড়ে। যাত্রীরা কান্না কাটি ও আতংঙ্ক গ্রস্থ হয়ে পড়ে।

সন্ধ্যার পর থেকে বয়ে যাওয়া নগরীতে আকস্মিক ঝড় বয়ে যায়। রাত ৯ টার পর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। এদিকে সন্ধ্যার আগ থেকে বরিশাল গোটা জেলায় বিদ্যুৎ ব্যবস্থা অচল হয়ে পড়ে। এব্যাপারে ওজোপাডিকো বরিশাল বিদ্যুৎ বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ-২ এর নির্বাহী প্রকৌশলী অমূল্য কুমার সরকার জানান, নগরীর রুপাতলী সাব স্টেশনে স্পার্ক করে তার পুড়ে গেছে। যার কারণে একটু বিদ্যুৎ বিভ্রাট হয়েছে। পর্যাক্রমে বিভিন্ন এলাকায় বিদ্যু সরবরাহ করা হবে বলে তিনি জানান।

মাত্র কয়েক মিনিটের ঝড়ে পন্ড হয়ে গেলো হিরো হোন্ডা আয়োজিত স্বাধীন বাংলা কনসার্ট। শুধু তাই নয়, ঝড়ে দুমড়ে মুচড়ে গেছে কনসার্টের স্টেজ। স্টেজে
থাকা চার-পাঁচ জনের আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। স্বাধীন বাংলা কনসার্টে আয়ুব
বাচ্চু সহ অন্যান্য শিল্পিদের লাইভ কনসার্ট দেখতে এসে ঝড়ের কবলে পড়ে হাজার হাজার
দর্শক। কনসার্টে নির্দিষ্ট নিরাপত্তা ব্যবসা আর হিরো হোন্ডা কর্তৃপক্ষের খামখেয়ালির
কারনে ঝড়ের তোড়ে হয়রানি এবং ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে তারা।

জানাগেছে, শুক্রবার নগরীর বঙ্গবন্ধু উদ্যানে হিরো হোন্ডা কোম্পানি আয়োজন করে স্বাধীন
বাংলা কনসার্ট। যাতে সংঙ্গিত পরিবেশনের কথা ছিলো তারকা শিল্পি আয়ুব বাচ্চু সহ
ঢাকার নামী-দামী শিল্পিদের। সে জন্য ঢাকা থেকে নিয়ে আসা হয় সাউন্ড সিস্টেম সহ
স্টেজ সাজানো বিভিন্ন আলোকসজ্জা।

এদিকে ওপেন কনসার্টের আয়োজন করা হলেও সেখানে আশা দর্শকদের জন্য নেয়া হয়নি
পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা। এমনকি আবহাওয়ার পূর্বভাসে বরিশালে ঝড়ো হাওয়ার আশংকা
থাকলেও সে বিষয়টির প্রতি লক্ষ্য রাখেনি আয়োজকরা। তার মধ্যেই কনসার্ট উপভোগ করতে হাজার হাজার দর্শক আসতে শুরু করে বঙ্গবন্ধু উদ্যানে।

অপরদিকে আয়ুব বাচ্চু সহ ঢাকার শিল্পিরা স্টেজে উঠে গনসার্টের আনুষ্ঠানিকতা শুরুর সাথে
সাথে আকাশ জুড়ে নেমে আসে কালো মেঘ। মুহুর্তের মধ্যে শুরু হয় ঝড়ো হাওয়া। সেই সঙ্গে গানের স্টেজ ভেঙ্গে দুমড়ে মুচড়ে যায়। গান সুনতে আসা দর্শকদের মধ্যে শুরু হয় হুরোহুরি। নারী-পুরুষ দর্শকরা ভিজে ভিজে যে যার মত করে নিরাপদ স্থানে চলে যায়। তার আগেই কাক ভেজা ভিজতে হয়েছে তাদের।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, হিরো হোন্ডা কোম্পানি এমন একটি আয়োজন করলেও সেখানে
দর্শকদের প্রটেকশনের ব্যবস্থা করেনি। সে কারনে ঝড়ের তোড়ে ছোটা ছুটি করতে গিয়ে
অনেকে আহত হয়েছে। অনেক তরুনীকে বিপদের সম্মুখিত হতে হয়েছে। পকেটে মারের খপ্পরে পড়ে অর্থ এবং অনেকের মোবাইল সেট হারিয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে।

তাছাড়া প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছে, অর্থ বাচারে স্টেজটি পর্যন্ত নড়বড়ে অবস্থায় তৈরী
করা হয়। যে কারনে ঝড়ের তোড়ে ওই স্টেজটিও ভেঙ্গে দুমড়ে-মুচড়ে যায়। এসময় স্টেজে
থাকা চার-পাঁচজন ব্যক্তি কম বেশি আহত হয়েছে। যাদের স্থানীয় ভাবে চিকিৎসা দেয়া
হয়েছে।

শুক্রবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত এসব জেলায় থেমে থেমে শিলা বৃষ্টির ও কালবৈশাখী ঝড় হয়েছে। এতে আম, লিচুর মুকুল ঝরে পড়াসহ ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বিস্তারিত পড়ুন আমাদের প্রতিনিধিদের পাঠানো খবরে।
আমাদের সিলেটের নিজস্ব প্রতিবেদক ছামির মাহমুদ জানান, বিকেলে হঠাৎ কালবৈশাখী ঝড়ে লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে ওসমানীনগরের বেশ কিছু এলাকা। ঝড়ের কবলে সাবিয়া বেগম (৪৫) নামের এক নারী মারা গেছেন। প্রায় ২০ মিনিটের এই ঝড়ে বিভিন্ন ইউনিয়নে শত শত গাছ উপড়ে পড়েছে।

ওসমানীনগর থানা পুলিশের ওসি মোহাম্মদ সহিদ উল্যা জানিয়েছেন, উপজেলার তাজপুর ইউপির দশহাল গ্রামে আত্মীয়ের বাড়িতে বেড়াতে এসে নূরুল আলমের নির্মাণাধীন ঘরের টিন উড়ে গিয়ে গলা কেটে সাবিয়া বেগম নামের এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। তিনি বালাগঞ্জ উপজেলার বোয়ালজুর ইউপির সোনাপুর গ্রামের খালিছ মিয়ার স্ত্রী।
অপরদিকে, সিলেট নগরে শুক্রবার বিকেল ৫টায় ঘূর্ণিঝড় ও শিলা বৃষ্টি হয়েছে। ঝড়ে অনেক স্থানে ঘর-বাড়ির টিনের চালা উড়িয়ে নিয়ে গেছে। অনেক স্থানে গাছ-পালা উপড়ে পড়েছে। ঘূর্ণিঝড়ের পর নগরের বেশির ভাগ বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। রাত পৌনে আটটায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত নগরের ৭০ ভাগ এলাকায় বিদ্যুৎ ছিল না।
সকালে সিলেটে অনুকূল আবহাওয়া বিরাজ করলেও বিকেল সাড়ে ৪টার পর থেকে আবহাওয়া প্রতিকূল হতে থাকে। এসময় শুরু হয় দমকা হাওয়া। সঙ্গে বৃষ্টিও। ঘূর্ণিঝড়ে সিলেটের লাক্কাতুরা চাচা-বাগান এলাকা, নগরের ঘাসিটুলা, কলাপড়া, নবাবরোড, দক্ষিণ সুরমার মোগলাবাজারসহ অনেক স্থানে গাছ-পালা রাস্তায় উপড়ে পড়েছে। এ কারণে দক্ষিণ সুরমার ও মোগলাবাজার রাস্তায় যান চলাচল সাময়িক ব্যাহত হয়। এ ব্যাপারে সিলেট আবহাওয়া অফিসের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তাদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

আগে গতকাল বৃহস্পতিবার রাত ৮টা ২৯ মিনিটে আরেক দফা ঘূর্ণিঝড় হয়। ঘূর্ণিঝড়ে সিলেট নগরের বিভিন্ন স্থানে সাইনবোর্ড ও ব্যানার উপড়ে পড়ে। অনেক বস্তি এলাকায় ঘরের চাল উড়ে যায়। প্রচণ্ড বাতাসের কারণে কলাপাড়া হাজি কছির মিয়া জামে মসজিদের ও নবাবরোড এলাকার আল মদিনা ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের টিনের চালাসহ অনেক বাসা-বাড়ি ও রাস্তা-ঘাটের উপর গাছপালা ভেঙে পড়ে এবং বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে পড়ে। ঝড়ের সঙ্গে প্রবল বৃষ্টি এবং দমকা হাওয়া থাকায় পথচারীরা পড়েন বেকায়দায়।
ঝড় শুরু হবার সঙ্গে সঙ্গে শহরের অধিকাংশ দোকানপাট বন্ধ হয়ে যায়। বৃহস্পতিবারের ঘূর্ণিঝড়ের পর নগরের বিদ্যুৎ সংযোগ ৭/৮ ঘণ্টার জন্য বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়লেও ভোররাত ৩টার পর বিদ্যুত সংযোগ স্বাভাবিক হতে থাকে বলে বিউবো’র একটি সূত্র জানিয়েছে।

মাগুরা প্রতিনিধি আরাফাত হোসেন জানান, বিকেলের দিকে হঠাৎ কালবৈশাখী ঝড় শুরু হয়। একই সঙ্গে শিলা বৃষ্টির শুরু হলে আকরাম হোসেন নামে এক ব্যক্তি গুরুতর জখম হয়ে পড়েন। তিনি মাঠে কাজ করছিলেন। এলাকাবাসী মাঠ থেকে তাকে উদ্ধারের পর হাসপাতালে নেয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। তার বাড়ি সদর উপজেলার ডহরসিংড়া গ্রামে।

মাগুরার জেলা প্রশাসক আতিকুর রহমান বলেন, এ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এছাড়াও শিলা বৃষ্টি এবং ঝড়ের ক্ষয়ক্ষতির তথ্য নিরূপণের চেষ্টা চলছে। ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি রবিউল এহসান রিপন জানান, হঠাৎ শিলা বৃষ্টিতে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বেলা ১১টার দিকে শিলা বৃষ্টি শুরু হয়ে প্রায় আধা ঘণ্টা পড়ে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আফতাব হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, বেলা ১১টার দিকে হঠাৎ করে আকাশ কালো হয়ে আসে। এরপর প্রচণ্ড বৃষ্টি সঙ্গে বরফ পাথর পড়তে শুরু করে। ঠাকুরগাঁওয়ে গড়ে ৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত ও ঝড়ো হাওয়া হয়েছে। শিলা বৃষ্টির কারণে ঠাকুরগাঁও জেলায় গম, ভুট্টা, মসুর ডালসহ বেশ কয়েক ধরনের ফসলের ক্ষতি হয়েছে। পাশাপাশি আম-লিচু গাছের মুকুল ঝড়ে পড়েছে।

তিনি বলেন, এই মুহূর্তে ক্ষতির পরিমাণ সঠিকভাবে বলা যাচ্ছে না। ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ করার জন্য মাঠ পর্যায়ে আমাদের কৃষি অফিসাররা কাজ করছে।
সদর উপজেলার আক্চা ইউনিয়নের বকসের হাট এলাকার বাসিন্দা কৃষক সিরাজ উদ্দীন বলেন, আমার ১০ বিঘা জমিতে ভুট্টা ও গম রোপণ করেছিলাম। যা কয়েক দিনের মধ্যেই ঘরে তুলতে পারতাম। কিন্তু সকালে হঠাৎ করে শিলা বৃষ্টিতে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এখন যা আছে তা দিয়ে চাষের খরচ উঠবে না।
আখানগর ইউনিয়নের কৃষক আলতাফ হোসেন বলেন, শিলা বৃষ্টির কারণে গাছের সব মুকুল ঝরে গেছে। এতে করে তার ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।

শহরের হলপাড়া এলাকার বাসিন্দা তপন কুমার ঘোষ বলেন, বেশ কিছুদিন ধরে রোদের তাপমাত্রা বেড়ে গিয়েছিল। বৃষ্টি হওয়ার কারণে এখন একটু শান্তি পাওয়া যাচ্ছে।
লালমনিরহাট প্রতিনিধি রবিউল ইসলাম জানান, শিলত (শিলা) হামার গরিবের টিনের ঘরটা ফুটা করে দিল। ঘরের সব কিছু ভিজি গেইল। এখন থাকার জায়গা নাই। টিন ফুটা হয়ে শিল (শীলা) মাথাত পরে রক্ত বের হইছে। এভাবেই বলছিলেন হাতীবান্ধা উপজেলার বুড়াসারডুবী গ্রামের মোমেনা বেগম (৫০)।
শুক্রবার সকাল থেকে দুুপুর পর্যন্ত থেমে থেমে ভারি শিলা বৃষ্টিতে অসংখ্য পরিবারের টিনের ঘর ফুটো হয়ে গেছে।

ভারি শিলা বৃষ্টিতে জেলার দুই উপজেলা হাতীবান্ধা ও পাটগ্রামে অসংখ্য টিনের চালা ঘর ফুটো হয়ে গেছে। একই কারণে ভুট্টা, মরিচ, পেঁয়াজ, বোরো ধানের ক্ষেতে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
শিলার আঘাতে আহত হয়েছেন, উপজেলার ফকিরপাড়া ইউনিয়নের বুড়াসারডুবী গ্রামের মোমেনা বেগম (৫০), রবিউল ইসলাম (৩৫), আতোয়ার রহমান (৫০), জড়িবুল (২৮), শিশু স্বাধীন (২) ও ঝরনা বেগম (৪০)। আহতরা অনেকে স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা নিয়েছেন।  জানা গেছে, শুক্রবার সকালে হঠাৎ বাতাসের সঙ্গে প্রচুর বৃষ্টিপাত শুরু হয়। সেই সঙ্গে পড়তে থাকে ৩ শত থেকে ৪ শত গ্রাম ওজনের বড় বড় শিলা পাথর।
শিলা বৃষ্টিতে সব থেকে বেশি ক্ষতি হয়েছে হাতীবান্ধা উপজেলায় বড়খাতা ইউনিয়নের বড়খাতা, দোলাপাড়া ৬নং ওয়ার্ড, দোলাপাড়া ৭নং ওয়ার্ড, পশ্চিম সারডুবী, পূর্ব সারডুবী, ফকিরপাড়া ইউনিয়নের ১,২,৩ নং ওয়ার্ডের বুড়াসারডুবী, বুড়াবাউরা,পশ্চিম ফকিরপাড়া,দালালপাড়া, সানিয়াজান ও নিজ শেখ সুন্দর গ্রামের ফসল।
পাটগ্রাম উপজেলার, ইসলামপুর, জোংড়া, বাউরা, জমগ্রাম ও ছিটজগ্রাম।

কালীগঞ্জ উপজেলার চন্দ্রপুর, চলবলা, চাকলা ও চাপারহাট। আদিতমারী উপজেলার দুর্গাপুর ও সদর উপজেলার মোগলহাট ইউনিয়নের ওপরেও শিলা বৃষ্টি আঘাত হানে। শিলা বৃষ্টিতে ক্ষতিগ্রস্ত বুড়াসারডুবী গ্রামের সাবলু হোসেন বলেন, আমার দুইটি টিনের ঘর ফুটা হয়ে গেছে। আব্বাস আলী (৫৫) বলেন, জীবনে এত বড় শিলা পাথর দেখি নাই। হাতীবান্ধা উপজেলা প্রকল্প ও বাস্তাবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) ফেরদৌস আহম্মেদ বলেন, উপজেলায় শিলা বৃষ্টিতে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারে তালিকা তৈরি হচ্ছে। লালমনিরহাটের জেলা প্রশাসক শফিউল আরিফ জাগো নিউজকে জানান, এ ব্যাপারে সংশি¬ষ্ট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও), ইউপি চেয়ারম্যানের মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের তালিকা করার জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে। দিনাজপুর প্রতিনিধি এমদাদুল হক মিলন জানান, শিলাবৃষ্টির আঘাতে পার্বতীপুর উপজেলার চণ্ডীপুর ইউনিয়নের চৈতাপাড়া গ্রামের মৃত লাল মোহাম্মদের ছেলে সৈয়দ আলী (৫৫) মারা গেছেন। মারা গেছে অসংখ্য গবাদিপশু।

এছাড়াও ফসল ও ঘর-বাড়ির ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। জেলার ১৩টি উপজেলার প্রায় সবকটি উপজেলায় এই ঝড় ও শিলাবৃষ্টি হলেও সবচেয়ে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে পার্বতীপুর, নবাবগঞ্জ, চিরিরবন্দর এলাকা। এসব উপজেলার হাজার হাজার একর জমির গম, ভুট্টা, বোরো ক্ষেতসহ বিভিন্ন ফসল এবং আম ও লিচুর ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে শত শত ঘরবাড়িরও ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। স্থানীয় ইউপি সদস্য আব্দুস সালাম জানান, ঝড়ের সময় সৈয়দ আলী তার নিজ ঘরের টিনের চালা সংস্কার করছিলেন। এ সময় মাথায় শিলার আঘাতে ঘটনাস্থলে তার মৃত্যু হয়। দিনাজপুর জেলা প্রশাসক আবু নঈম মো. আবদুছ ছবুর শিলাবৃষ্টিতে একজনের মৃত্যুর কথা নিশ্চিত করে জানান, নিহতের পরিবারকে তাৎক্ষণিকভাবে পাঁচ হাজার টাকা দেয়া হয়েছে। এছাড়াও ২০ জন আহত হয়েছেন। তাদের বিভিন্ন হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।