বরিশালে লেবুখালীতে শেখ হাসিনা সেনানিবাসের অনুমোদন

লেখক:
প্রকাশ: ৭ years ago

দক্ষিণাঞ্চলে একটি সেনানিবাস স্থাপন অত্যন্ত জরুরি। দক্ষিণাঞ্চলের ছয়টি জেলায় বড় ধরনের কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ ঘটলে ২০০ কিলোমিটার দূরের যশোর সেনানিবাসের সহায়তা নিতে হয়। এছাড়া দক্ষিণাঞ্চলজুড়ে সরকারের বেশকিছু মেগা প্রকল্পের কাজ চলছে। দুর্যোগ মোকাবেলার পাশাপাশি সেসব প্রকল্পে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বরিশালে একটি সেনানিবাস তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।

মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) সভায় ‘শেখ হাসিনা সেনানিবাস বরিশাল স্থাপন’ প্রকল্পের অনুমোদন দেয়া হয়েছে। প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে এক হাজার ৬৯৯ কোটি টাকা।

সভায় মোট ১০টি প্রকল্প (নতুন ও সংশোধিত) অনুমোদন দেয়া হয়। এটি ২০১৭-১৮ অর্থবছরের ১০ম সভা এবং বর্তমান সরকারের ১২০তম সভা।

প্রকল্পগুলোর ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৪ হাজার ৫৬৭ কোটি টাকা। পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল অনুমোদন পাওয়া প্রকল্পগুলো নিয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফিং করেন।

মূলত বরিশাল ও পটুয়াখালী জেলার মধ্যে পায়রা নদীসংলগ্ন এলাকায় লেবুখালীতে হবে দেশের এ ৩১তম সেনানিবাস। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৯টি ডিভিশনের আওতায় দেশে এখন ৩০টি সেনানিবাস রয়েছে। তবে দক্ষিণাঞ্চলের বৃহৎ উপকূলীয় এলাকা বরিশাল ও পটুয়াখালীতে সেনানিবাস নেই। জাতীয় নিরাপত্তা ও দুর্যোগ মোকাবেলায় দক্ষিণে এ সেনানিবাস গড়ে তোলার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এর মাধ্যমে সরকার ঘোষিত ফোর্সেস গোল-২০৩০-এর আওতায় আন্তর্জাতিক মানের সেনাবাহিনী গড়ে তোলা সম্ভব হবে বলে জানিয়েছেন পরিকল্পনামন্ত্রী।

মন্ত্রী জানান, প্রকল্প এলাকাটি চরাঞ্চল হওয়ায় সেখানে জনবসতি গড়ে ওঠেনি। ফলে ঘরবাড়ি কিংবা স্থাপনার জন্য কোনো ধরনের ক্ষতিপূরণ বা পুনর্বাসনের প্রয়োজন পড়বে না। প্রস্তাবিত সেনানিবাসে জনবল নিয়োগ দেয়া হবে প্রায় ১৭ হাজার। পুরো প্রকল্প বাস্তবায়নে খরচ হবে এক হাজার ৬৯৯ কোটি টাকা। এ ছাড়া তিন হাজার ৬০০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন দেশের সবচেয়ে বড় বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের কাজ চলছে পায়রায়। সেখানে দুটি অর্থনৈতিক অঞ্চল নির্মাণের কাজও চলছে। একই সঙ্গে একটি বিমানবন্দর নির্মাণের পরিকল্পনাও রয়েছে সরকারের। দক্ষিণাঞ্চলজুড়ে সরকারের নেয়া এসব মেগা প্রকল্পের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সেনানিবাসটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। একই সঙ্গে দক্ষিণাঞ্চলের ছয় জেলা বরিশাল, বরগুনা, ঝালকাঠি, পটুয়াখালী, পিরোজপুর ও ভোলা উপকূলবর্তী জনপদ। এ সেনানিবাসের কাজ শেষ হলে উপকূলীয় অঞ্চলে প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলা করা সহজ হবে।

একনেকে অনুমোদিত অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পগুলো হলো- মোংলা বন্দর চ্যানেলের আউটার বারে ড্রেজিং প্রকল্প, শালিখা (মাগুরা)-আড়পাড়া-কারিগঞ্জ (ঝিনাইদহ) জেলা মহাসড়ক প্রশস্তকরণ ও মজবুতিকরণ প্রকল্প, বরিশাল (দিনারেরপুল)-লক্ষীপাশা-দুমকী জেলা মহাসড়কের ১৪তম কিলোমিটারে রাঙ্গামাটি নদীর ওপর গোমা সেতু নির্মান প্রকল্প, বৃহত্তর খুলনা ও যশোর জেলা ক্ষুদ্র সেচ উন্নয়ন প্রকল্প, বৃহত্তর বগুড়া ও দিনাজপুর জেলা ক্ষুদ্র সেচ উন্নয়ন প্রকল্প, ভেড়ামারা (বাংলাদেশ)-বহরমপুরের (ভারত) দ্বিতীয় ৪০০ কেভি ডাবল সার্কিট সঞ্চালন লাইন (বাংলাদেশ অংশ) নির্মাণ প্রকল্প, জাতীয় চিত্রশালা এবং জাতীয় সংগীত ও নৃত্যকলা কেন্দ্রের সম্প্রসারণ ও অসমাপ্ত কাজ সমাপ্তকরণ প্রকল্প, ঝিনাইদহ টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ স্থাপন (৩য় সংশোধিত) প্রকল্প এবং ইনস্টিটিউট অব বায়োইকুভ্যালেন্স স্টাডিজ অ্যান্ড ফার্মাসিটিক্যাল সাইন্সেস প্রতিষ্ঠাকরণ প্রকল্প।