বিশেষ প্রতিনিধি: ০১ জুলাই ২০২১ থেকে চলছে সর্বাত্মক কঠোর লকডাউন।লকডাউনে অসহায় হয়ে পড়েছে শ্রমজীবী, কর্মহীন মানুষ ও পথশিশুরা। সেই সাথে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যাও প্রতিনিয়ত বাড়ছে, দেখা দিচ্ছে হাসপাতালগুলোতে বেড ও অক্সিজেন সংকট। এছাড়া পরিবহন সব বন্ধ থাকায় রোগী এবং জরুরী সেবায় নিয়োজিতদের যাতায়াতেও হচ্ছে মহাসংকট। ছিন্নমূল, নিম্নবিত্ত, মধ্যবিত্ত সকলেরই দুর্বিষহ জীবন হয়ে পড়েছে এ সময়।
এমতাবস্থায়, বরিশালে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন প্রজ্ঞা ফাউন্ডেশন এক ব্যতিক্রমী ও সময়োপযোগী উদ্যোগ হাতে নিয়েছে।গত ১১ জুলাই ২০২১ থেকে তাদের উদ্যোগ চলমান রয়েছে। “জরুরী সেবা কার্যক্রম” নামে একটি উদ্যোগ চালু করেছে সংগঠনটি। জরুরী সেবার মধ্যে রয়েছে:
-মুমূর্ষ রোগী বা তার দেখাশোনায় নিয়োজিতদের যাতায়াতের জন্য অটো সার্ভিস। দুঃস্থ-গরীবদের জন্য যা ফ্রি এবং সামর্থ্যবানদের জন্য ন্যায্য ভাড়াতে।
-রক্তদাতা, স্বেচ্ছাসেবক ও জরুরী সেবা কাজে নিয়োজিতদের যাতায়াতে অটো সার্ভিস।
-জরুরী অক্সিজেন সরবরাহ, দুঃস্থদের জন্য ফ্রি এবং সামর্থ্যবানদের জন্য সার্ভিস চার্জ প্রযোজ্য।
-করোনায় মৃত ব্যক্তির সৎকার ও দাফন কাজে স্বেচ্ছাসেবক টিম।
-ছিন্নমূল, সুবিধাবঞ্চিত, পথশিশু ও অসহায় হয়ে পড়া মানুষের মাঝে খাবার বিতরণ।
-করোনা ও লকডাউনে বের হতে না পারা মা বোনদের জন্য স্যানিটারী ন্যাপকিন/পিরিয়ড ন্যাপকিন হোম ডেলিভারী। দুঃস্থদের জন্য ফ্রি এবং সামর্থ্যবানদের জন্য ন্যায্য মূল্যে।
-এছাড়া যেকোন জরুরী স্বেচ্ছাসেবী কাজে নিয়োজিত থাকবে প্রজ্ঞা টিম। সার্ভিস হটলাইন: 01877-752441 ।
সরেজমিনে দেখা গেছে, সংগঠনটির স্বেচ্ছাসেবকরা পথে ঘুরে ঘুরে পথশিশু, অসহায়-শ্রমজীবী মানুষদের মাঝে খাবার বিতরণ করছে। এছাড়া সার্ভিসসমূহ লেখা সম্বলিত একটি অটো/ইজিবাইক নগরীর শেবাচিম হাসপাতাল সহ অন্যান্য হাসপাতালের সামনেই অপেক্ষা করছে এবং রোগী ও তাদের স্বজনদের যাতায়াতে সহযোগিতা করছে।
জরুরী সেবা কাজের উদ্যোগটি উদ্বোধন করেন, বরিশালের স্বনামধন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান “সাকসেস শিক্ষা পরিবার” এর প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক ও প্রজ্ঞা ফাউন্ডেশনের সম্মানিত উপদেষ্টা মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান। এ বিষয়ে বিস্তারিত জানতে চাইলে সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাতা ও সাধারণ সম্পাদক সুভাশীষ দাস সুভাষ বলেন, “করোনা ও লকডাউনে আমরা এক দুর্বিষহ জীবনযাপন করছি। বিশেষত সুবিধাবঞ্চিত পথশিশু, শ্রমজীবী, কর্মহীন মানুষ সহ নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্ত মানুষ ভীষন কষ্টে দিনাতিপাত করছে। তাদের জন্য মানুষ হিসেবে মানুষের পাশে থাকার সামান্য প্রচেষ্টা আমরা করছি মাত্র। ফাউন্ডেশনের স্বউদ্যোগ, স্বপরিকল্পনা, স্বঅর্থায়নে এবং বরিশার জেলা প্রশাসনের সদয় অনুমতি ও পরামর্শে আমাদের উদ্যোগ সফলভাবে চলছে এবং চলমান থাকবে। তবে সকল স্বচ্ছল ও ধনাঢ্য ব্যক্তিরা আর্থিক সহযোগিতায় এগিয়ে আসলে আমরা আমাদের উদ্যোগ যতদিন দরকার ততদিন চলমান রাখতে পারবো আরকি।”
উল্লেখ্য, প্রজ্ঞা ফাউন্ডেশন ২০১৭ সাল থেকে স্বেচ্ছাসেবী নানাবিধ কাজ করে আসছে বরিশালে। বরিশালবাসীও তাদের এসকল কাজে সন্তুষ্টি ও শুভকামনা প্রকাশ করেছে।