বরিশালের বাবুগঞ্জে যৌতুক না পেয়ে স্ত্রীর চোখ নষ্ট করে দিয়েছে স্বামী মো. শহিদুল ইসলাম। স্ত্রী রাজিয়া বেগমের দুই পা গুরুতর জখমও করেছে সে। নির্যাতনের শিকার হয়ে চার দিন ধরে ওই বাড়িতে চিকিৎসার অভাবে বিছানায় কাতরাচ্ছেন রাজিয়া। উপজেলার চাঁদপাশা ইউনিয়নের পূর্ব বকশিচর আমজেদ শরীফের বাড়িতে এ ঘটনা ঘটেছে।
জানা গেছে, প্রায় ১০ বছর আগে আমজেদের ছেলে শহিদুল ঢাকায় গার্মেন্ট কারখানায় চাকরি করত। এ সুবাদে সহকর্মী রাজিয়ার সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। পরে তারা বিয়ে করে। রাজিয়া সিলেটের তাহিরপুর উপজেলার কুকুরকান্দি গ্রামের সরুজ মিয়ার মেয়ে। বিয়ের পর শহিদুল স্ত্রীকে ঢাকায় ফেলে রেখে বাড়িতে গিয়ে বসে থাকে। এদিকে কোনো খোঁজখবর না নেয়ায় রাজিয়া স্বামী শহিদুলের বাড়িতে হাজির হন। কিন্তু শহিদুল গৃহবধূ রাজিয়াকে স্ত্রী হিসেবে অস্বীকার করে। এতে এলাকাবাসী সালিশ বৈঠক করে পুনরায় কাজী ডেকে আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের বিয়ে পড়িয়ে দেন। এ ঘটনার পর থেকে শহিদুল ও তার পরিবারের লোকজন গৃহবধূ রাজিয়ার ওপর অমানুষিক নির্যাতন করে আসছে। প্রথম স্ত্রীর ৮ বছরের মেয়েসন্তান থাকা সত্ত্বেও পরিবারের সহযোগিতায় শহিদুল দ্বিতীয় বিয়ে করেন।
এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রায়ই সংসারে মারামারি হয়। এরই ধারাবাহিকতায় বুধবার রাতে ২ লাখ টাকা যৌতুকের দাবিতে গৃহবধূ রাজিয়া বেগমের হাত-পা বেঁধে জিআই পাইপ দিয়ে বেধড়ক পেটায় স্বামী শহিদুল। এক পর্যায়ে রাজিয়ার বাম পাশের চোখ নষ্ট হয়ে যায়। দুই পা পিটিয়ে জখম করায় সে এখন হাঁটতেও পারে না। ওই গৃহবধূ চিকিৎসার অভাবে যন্ত্রণায় ছটফট করছেন। গৃহবধূর আকুতিতে এলাকার লোকজন তার চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নেয়ার চেষ্টা করলে শহিদুলের পরিবার তাতে বাধা দেয়। শুক্রবার বিকালে মানবাধিকার কর্মীরা ওই বাড়িতে গেলে শহিদুলের পরিবারের লোকজন সটকে পড়ে। নির্যাতিত গৃহবধূ এই প্রতিনিধিকে বলেন, ‘আমাকে হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা দেয়া ও ঘটনা প্রশাসনকে জানানোর মতো কোনো লোক নেই।’