শামীম আহমেদ ॥ নৌ-পথে সন্ত্রাস, চাঁদাবাজী বন্ধ, খাদ্যভাতা প্রদানসহ১১ দফা দাবি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে বরিশালে শুরু হয়েছে নৌযান ্রশ্রমিকদের কর্মবিরতি। মঙ্গলবার (২০ অক্টোবর) থেকে শুরু হওয়া এ ধর্মঘট দাবি পূরণের বিষয়ে কোন সুরাহা না হওয়া পর্যন্ত চলবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ লঞ্চ লেবার আ্যাসোসিয়েশন ও বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক ফেডারেশনের বরিশাল অঞ্চলের সভাপতি শেখ আবুল হাসেম।
তিনি জানান, সনাতন ধর্মালম্বীদের সবথেকে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। এ লক্ষে আপাতত যাত্রীবাহি নৌযান এ কর্মসূচির বাহিরে রাখা হয়েছে।
তবে সোমবার দিবাগত রাত ১২ টা ১ মিনিট অর্থাৎ মঙ্গলবার থেকে সকল পণ্যবাজি নৌযান বন্ধ রেখেছে বরিশালের শ্রমিকরা।
আর এটি শুধু বরিশালে নয় কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সারাদেশে পণ্যবাহি নৌযান শ্রমিকরা কর্মবিরতি পালন করছে। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত এ আন্দোলন কর্মসূচি চলবে।
তিনি জানান, ১১ দফা দাবি বাস্তবায়ন না হওয়ায় সারাদেশে একযোগে সবধরণের পণ্যবাহি জাহাজের শ্রমিকরা কর্মবিরতি শুরু করেছে। আর তারপরও আমাদের দাবি বাস্তবায়ন না করে জুলুম-নির্যাতন, হামলা-মামলা করা হলে যাত্রীবাহি নৌযান শ্রমিকরাও কর্মবিরতি শুরু করবে।
বরিশালে শ্রমিকদের দাবি আদায়ের এ আন্দোলনে বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ একাত্মতাও পোষন করেছে।
এদিকে কর্মবিরতির আওতার বাহিরে থাকায় সকাল থেকে বরিশালে আভ্যন্তরীন রুটের নৌযানগুলো স্বাভাবিক নিয়মে চলাচল করছে।
উল্লেখ্য এ কর্মবিরতিরর পক্ষে গত শনিবার সকালে বরিশাল নদী বন্দর খে বাংলাদেশ লঞ্চ লেবার আ্যাসোসিয়েশন ও নৌযান শ্রমিক ফেডারেশনের আয়োজন একটি মিছিল বের করা হয়।নৌযান শ্রমিকদের অংশগ্রহনে মিছিলটি নগরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিন করে পুনরায় নদী বন্দরে এসে শেষ হয়।
পরে সেখানে সংক্ষিপ্ত সভায় বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ লঞ্চ লেবার আ্যাসোসিয়েশন বরিশাল অঞ্চলের সভাপতি শেখ আবুল হাসেম।তখন তিনি বলেছিলেন, ১১ দফার দাবির প্রতিটিই শ্রমিকদের জন্য যৌক্তিক। দাবিগুলোর বাস্তবায়ন এখন সকল শ্রমিকরা চায়। তাই দাবি আদায়ে আমাদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
উল্লেখ্য ১১ দফা দাবির মধ্যে রয়েছে, নৌযান শ্রমিকদের পরিচয় পত্র, নিয়োগ পত্র ও সার্ভিস বুক প্রদান করা, শ্রমিকদের সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, সকল শ্রমিকদের ফ্রি খাদ্য ভাতা প্রদান করা, ভারতগামী জাহাজের ল্যান্ডিং পাসসহ সেখানে থাকার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিশ্চিত করা, নদীপথে সকল ধরণের চাঁদাবাদি-সন্ত্রাসী কার্যক্রম বন্ধ করা, নদীর নাব্যতা রক্ষা করা, পরীক্ষা বোর্ডের দূর্ণিতী ও মেরিন কোর্টের হয়রানি বন্ধ করা, কথায় কথায় শ্রমিক নির্যাতন বন্ধ ও প্রভিডেন্ট ভান্ড চালু করা, জাহাজে কর্মরত অবস্থায় শ্রমিকরা মৃত্যুবরণ করলে তাদের পরিবারকে ১০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ প্রদান করা।অন্যদিকে শারদীয় দূর্গাপূজা উপলক্ষে যাত্রীবাহি নৌযান ধর্মঘটের বাহিরে থাকায় বরিশাল নদী-বন্দর পণ্টুনে জেলার অভ্যন্তরের লঞ্চগুলো যথারিতি চলার কারনে সাধারন যাত্রীদের কোন রকম দূর্ভোগের শিকার হতে হয়নি। সকাল থেকে পল্টুনে অভ্যন্তরীন নৌরুটের যাত্রী ছিল ভীড়।