বরিশালে মোবাইল কোর্ট অভিযানে ১ লক্ষ ৩৩ হাজার টাকা জরিমানা

:
: ৪ years ago

বরিশাল জেলা প্রশাসনের নিয়মিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে আজও বরিশাল নগরীতে মোবাইল কোর্ট অভিযান অব্যাহত আছে। আজ ২৮ এপ্রিল মঙ্গলবার সকাল থেকে বরিশাল মহানগরীতে ৩ টি মোবাইল কোর্ট টিম মাঠে অভিযান পরিচালনা করেন ।

 

এসময় চৌমাথা মোড়, নথুল্লাবাদ, কাশিপুর বাজার, বাংলা বাজার, আমতলার মোড়, সাগরদী, রুপাতলী, পুলিশ লাইন, বাজার রোড, গীর্জা মহল্লা, চকবাজার, জেলা খানার মোড়, কাঠপট্টি, নতুন বাজার এলাকায় জেলা প্রশাসন বরিশাল এর পক্ষ থেকে মোবাইল কোর্ট অভিযান পরিচালনা করা হয়।

পবিত্র মাহে রমজান উপলক্ষে বিভিন্ন স্থানে বিশেষ বাজার মনিটরিং, জনসমাগম করে অপ্রয়োজনীয় দোকান খোলা রেখে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত ও দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে বরিশাল জেলা প্রশাসনের মোবাইল কোর্ট অভিযান চালিয়ে বিভিন্ন অপরাধে ১২ টি প্রতিষ্ঠান কে মোট ১ লক্ষ ৩৩ হাজার টাকা জরিমানা অাদায় করা হয়।

 

নগরীর বিভিন্ন স্থানে জেলা প্রশাসক ও বিজ্ঞ জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এস, এম, অজিয়র রহমানের নির্দেশনায় মোবাইল কোর্ট অভিযান পরিচালনা করেন।

 

এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট জেলা প্রশাসকের কার্যালয় বরিশাল মোঃ জিয়াউর রহমান, এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ নাজমূল হুদা এবং এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট শরীফ মোঃ হেলাল উদ্দীন।

 

করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব সম্পর্কে গণসচেতনতা কার্যক্রম পরিচালনার পাশাপাশি এ সময় বিভিন্ন টি-স্টল, মুদি দোকান ও এলাকার মোড়ে মোড়ে যেখানেই জনসমাগম দেখা গেছে তা ছত্রভঙ্গ করা হয় এবং নিরাপদ দূরত্বে চলার নির্দেশনা, মাক্স পরার নির্দেশনা প্রদানের পাশাপাশি জেলা প্রশাসন এর পক্ষ থেকে মাক্স বিতরণ করা হয়।

 

এসময় সবাইকে যৌক্তিক প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে আসতে নিষেধ করা হয় এবং সন্ধ্যা ৬ টার মধ্যে জরুরি ঔষধ ব্যতীত সকল প্রকার দোকান বন্ধ রাখার নির্দেশ প্রদান করা হয়।

 

এসময় মোবাইল কোর্ট অভিযান পরিচালনায় করেন এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ জিয়াউর রহমান। অভিযান পরিচালনাকালে নগরীর বাজার রোড এলাকায় প্রতিটি দোকানে দোকানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তায় সামাজিক দূরত্ব মেনে কার্যক্রম পরিচালনা করার নির্দেশ দেন এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট। বন্ধ রাখার নির্দেশনা স্বত্তেও খোলা রেখে কার্যক্রম পরিচালনা করে করোনা ভাইরাস বিস্তারের ঝুঁকি বৃদ্ধি করায় দণ্ডবিধি ১৮৬০ এর ২৬৯ ধারায় নগরীর কাঠপট্টি, বাজার রোড ও নথুল্লাবাদ এলাকার ৮ টি দোকানকে বিভিন্ন অংকে মোট ১ লক্ষ ১ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দেওয়া হয়।

 

অভিযানে প্রসিকিউশন অফিসার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন বরিশাল সদর উপজেলার নিরাপদ খাদ্য পরিদর্শক ও স্যানিটারি ইন্সপেক্টর মোঃ জাকির হোসেন। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা সহযোগিতা করেন বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের একটি টিম।

 

অপর একটি মোবাইল কোর্ট টিম এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ নাজমূল হুদা এর নেতৃত্বে অভিযানকালে জানা যায় যে ফেসবুকের পোস্ট কে কেন্দ্র করে গুজব ছড়িয়ে পড়ে করোনাভাইরাসের টিকা আবিষ্কার সম্পর্কে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক গণজমায়েত হবে বলে গোপন সূত্রে খবর পাওয়া যায়।

 

এই অনভিপ্রেত গণজমায়েত এড়ানোর জন্য জেলা প্রশাসক বরিশাল এর নির্দেশে উপজেলা নির্বাহী অফিসার উজিরপুরের তত্ত্বাবধানে বিশেষ মহড়া প্রদান করা হয়। বাজার মনিটরিং এর অংশ হিসাবে উপজেলার ইচলাদী বাজারে একটি মুদির দোকানে আধা দাম প্রতি কেজি ৪০০ টাকা বিক্রয় করার অপরাধে ২ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

 

এসময় সহযোগিতা করেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৭তম পদাতিক ডিভিশনের ক্যাপ্টেন মোঃ শুভ সহ একটি টিম। র‍্যাব ৮ এর পক্ষে ছিলেন এস এই লুতফুর সহ একটি টিম ও উজিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সহ একটি টিম।

 

অপরদিকে করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিতকরণ ও গণসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট শরীফ মোঃ হেলাল উদ্দীন এর নেতৃত্বে নগরীর বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করেন।

এসময় নগরীর বিভিন্ন স্থানে যেমন নগরীর বান্দ রোড, বাজার রোড ও পোর্ট রোড বাজারে বিশেষ বাজার মনিটরিং মোবাইল কোর্ট অভিযান পরিচালনা করেন জেলা প্রশাসনের এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট শরীফ মোহাম্মদ হেলাল উদ্দীন।

 

অভিযানকালে নগরীর লঞ্চঘাট এলাকা ও পোর্টরোডে দ্রব্যমূল্যের তালিকা প্রদর্শন না করার অপরাধে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন, ২০০৯ এর ৩৮ ধারার ২টি মামলায় কাজী ফল ভান্ডার ও সোবহান ফ্রুটস নামক ২টি প্রতিষ্ঠানকে যথাক্রমে ৫ হাজার ও ১০ হাজার টাকা এবং মেয়াদ উত্তীর্ণ খেজুর বিক্রির অপরাধে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন, ২০০৯ এর ৫১ ধারার মামলায় পূরবী খান ফ্রুটসকে ১৫ হাজার টাকা অর্থদন্ড প্রদান করা হয়। এসময় ৬ বস্তা মেয়াদউত্তীর্ণ খেজুর কেরোসিন ঢেলে নদীতে ফেলে ধ্বংস করা হয়।

 

অভিযানে মোবাইল কোর্টকে আইনানুগ সহযোগিতা প্রদান করেন বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ এর একরটি টিম। অভিযান শেষে এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেটদ্বয় বলেন, জনগণকে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ থেকে রক্ষা এবং করোনা ভাইরাসের বিস্তার এবং এটিকে পুঁজি করে অসাধু ব্যবসায়ীদের বাজার অস্থিতিশীল করার অপচেষ্টা রোধকল্পে নিয়মিত এ ধরণের অভিযান অব্যাহত থাকবে।