আসামী নিয়ে যাওয়ার কথা বলে কোতোয়ালি মডেল থানার ইন্সপেক্টর পরিচয় দিয়ে অটোরিক্সার ভাড়া না দেয়ায় এবং পুলিশে চাকুরি দেয়ার প্রলোভন দেখানোয় এক ব্যক্তিকে আটক করেছে বরিশাল মেট্রোপলিটনের বন্দর থানা পুলিশ।
আটককৃত শামসুল আলম প্রকাশ শাকিল(৩৭) কক্সবাজার জেলার টেকনাফ থানাধীন মধ্যম মহেষখালীয়া পাড়া এলাকার মোঃ আবুল হোসেনের ছেলে।
তার বিরুদ্ধে রোববার (১৬ অক্টোবর) বরিশাল সদর উপজেলার তালুকদার হাটের চাঁদপুরা এলাকার রাকিব তালুকদার (২৭) বাদী হয়ে সরকারী কর্মচারীর ছদ্মবেশ ধারণ ও মিথ্যা পরিচয় প্রদান করে প্রতারণার ধারায় বন্দর থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন।
যে মামলায় আটক শামসুল আলম প্রকাশ শাকিলকে গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ আসাদুজ্জামান।
মোঃ রাকিব তালুকদার(২৭), পিতা-মোঃ জাহাঙ্গীর তালুকদার, মাতা-মোসাঃ আলেয়া পারভীন, সাং-চাঁদপুরা, ০১নং ওয়ার্ড, তালুকদার হাট সংলগ্ন, থানা-বন্দর, জেলা-বরিশ
মামলার এজাহার সূত্রে জানাগেছে, বাদী ১৫ অক্টোবর রাত ৮ টার দিকে বরিশাল সদর উপজেলার কর্ণকাঠী হিরণ পয়েন্ট থেকে অটোরিক্সায় করে দিনারের পুল জিরো পয়েন্টের দিকে রওয়ানা দেয়। ওই অটোরিক্সায় অন্য যাত্রীদের সাথে মামলার আসামী গ্রেফতারকৃত শাকিল উঠে এবং নিজেকে কোতোয়ালি মডেল থানার ইন্সপেক্টর (পরিদর্শক) পরিচয় দেয়। এরপর সে আসামী নিয়ে ভোলা যাওয়ার কথা বলে কিভাবে গেলে ভালো হয় তা জানতে চাইলে মামলার বাদী স্পীডবোটে গেলে ভালো হবে বলে জানায়।
এরপর পুলিশ কর্মকর্তা পরিচয়দানকারী শাকিল মামলার বাদীকে বলেন, ‘‘পুলিশে লোক নিতেছে, ৮ম শ্রেনী পাশ, এসএসসি পাশ এবং এইচএসসি পাশ, তুমি আমার নাম্বারটা নেও, তোমার কোন লোক থাকলে আমি পুলিশে চাকুরী দিয়ে দিবো’’। এই কথা বলে পুলিশ কর্মকর্তা পরিচয়দানকারী শাকিল তার ব্যবহৃত মোবাইল নম্বর বাদীকে প্রদান করে এবং বাদীকে পুলিশের নাম লেখা একটি খাকি খাম দেখায়।
এরপর রাত সাড়ে ৮ টার দিকে অটোরিক্সাটি দিনার জিরো পয়েন্টে পৌছায়। তখন অটোরিক্সার চালক পুলিশ কর্মকর্তা পরিচয়দানকারী শাকিলের কাছে ভাড়া চাইলে, সে তা না দিয়ে উল্টো ড্রাইভারকে পুলিশ পরিচয় দিয়ে শাসিয়ে দেয়।
বিষয়টি নিয়ে বাদীর সন্দেহ হলে জরুরী সেবা ৯৯৯ এ কল করে। খবর পেয়ে কিছুখন পর বন্দর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে শাকিলকে আটক করে।
বন্দর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) রাফসান জনি জানান, পুলিশ পরিচয় দেয়া ওই ব্যক্তিকে তার কর্মস্থলের পরিচয় জিজ্ঞাসা করলে সে সন্দেহ জনক কথাবার্তা বলে। ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদের সে নিজেকে ভুয়া ইন্সপেক্টর হিসেবে পরিচয় দেয়ার বিষয়টি স্বীকার করে।
আটকের সময় শাকিলের কাছ থেকে বাংলা ও ইংরেজি ভাষায় লেখা পুলিশ পরিচয় ধারণের একটি খাকি খাম, দুটি মোবাইল সেট উদ্ধার করা হয়।
বন্দর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ আসাদুজ্জামান বলেন, গ্রেফতার শাকিলের বিরুদ্ধে কক্সবাজারসহ বিভিন্ন থানায় একই ভাবে প্রতারণার ঘটনায় আরও তিনটি মামলা রয়েছে। সে মূলত ২০ টাকার অটোভাড়া না দিতে গিয়ে এভাবে ধরা পড়ে যাবে বুঝতে পারেনি।