বরিশালে চার মাস বয়সী এক শিশু কন্যাকে দায়িত্বহীনভাবে ভুল চিকিৎসা করে হত্যা করার অভিযোগে ২ চিকিৎসককে অভিযুক্ত করে আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে। রোববার (১৮ মার্চ) বরিশালের চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলাটি দায়ের করে উজিরপুর উপজেলার কাউয়ারেখা এলাকার মৃত আমিও ভুষণ হালদারের ছেলে নিহত শিশু কন্যার পিতা খোকন চন্দ্র হালদার (অরুপ) আদালতের বিচারক মো: আনিছুর রহমান মামলাটি পিবিআইকে তদন্ত করে প্রতিবেদন আদালতে জমা দেওয়ার আদেশ দেন।
অভিযুক্তরা হলেন- বরিশাল বেলভিউ মেডিকেল সার্ভিস প্রাইভেট লিমিটেডের চিকিৎসক আশীষ কুমার হালদার ও মো. নাইম হোসেন।
এজাহার সূত্রে জানা গেছে- চলতি বছরের ২৭ ফেব্রুয়ারি বাদী খোকন চন্দ্র হালদারের ৪ মাসের শিশু কন্যা অসুস্থ হয়ে পড়লে তার কন্যাকে উজিরপুর থেকে চিকিৎসার জন্য বরিশালের সদর রোডের বেলভিউ হাসপাতালে নিয়ে আসে। পরবর্তীতে অভিযুক্ত চিকিৎসক আশীষ কুমার হালদার তার শিশু কন্যাকে দেখে তাকে ওই হাসপাতালে ভর্তি করার পরামর্শ দেয় এবং তার পরামর্শ অনুযায়ী আশীষ কুমার হালদারের শিশু কন্যাকে সেখানে চিকিৎসা করানো হয়।
পরে সেখানে ৯ দিন চিকিৎসার পর ওই শিশু কন্যার কোন উন্নতি না হলে অভিযুক্ত চিকিৎসক খোকন চন্দ্র হালদার বাদীকে জানায় যে তার শিশু কন্যাকে বাড়ি নিয়ে যান তিনি আস্তে আস্তে সুস্থ হয়ে যাবে বলে আস্বস্ত করেন। এবং গত ১০ মার্চ শিশু কন্যার নাম হাসপাতাল থেকে কেটে দেন।
পরে চিকিৎসকের ছাড়পত্র দিয়ে তাকে বাড়ি পাঠিয়ে দেয়। পরবর্তীতে ২ দিন পর বাদীর শিশু কন্যা পুনরায় আবার অসুস্থ হয়ে পড়লে বিষয়টি অভিযুক্ত চিকিৎসক আশীষ কুমার হালদারের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে কল করে বাদী অবহিত করেন। এ সময় অভিযুক্ত চিকিৎসক তার শিশু কন্যাটিকে পুণরায় বেলভিউ মেডিকেল সার্ভিস হাসপাতালে ভর্তি করার পরামর্শ দেয়।
ওই দিনই খোকন চন্দ্র হালদার মুমূর্ষু অবস্থায় তার শিশু কন্যাকে পুণরায় ওই হাসপাতালে ভর্তি করেন। কিন্তু চিকিৎসক আশীষ কুমার হালদার তার কর্তব্যরত চিকিৎসাকেন্দ্রে তাকে না পেলে শিশুর পরিবার তাকে মোবাইলফোনে একাধিক বার কল করে। এসময় চিকিৎসক কলটি রিসিভ না করে বার বার কেটে দেন।
এ দিকে শিশুটির অবস্থা আরও খারাপ হলে পরিবারের লোকজন অন্য চিকিৎসক নাইম হোসেনের সাথে যোগাযোগ করেন। তখন তিনি তাদেরকে জানান যে, চিকিৎসক আশীষ কুমার হালদারের পরামর্শে আপনাদেরকে কিছু ওষুধ লিখে দিচ্ছি। আপনারা ওই ওষুধগুলো নিয়ে আসেন।
পরে বাদী ওষুধ আনতে যাওয়ার সময় তার শিশু কন্যাটি মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। দুই চিকিৎসকের অবহেলা ও দায়িত্বহীনতার কারণে শিশু কন্যার মৃত্যুতে আদালতে হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে।”