ব্যবসায়ীর হারিয়ে যাওয়া প্রায় অর্ধ লক্ষ টাকা, ব্যাংক চেক ও এটিএম কার্ডসহ জরুরী কাগজপত্র বুঝিয়ে দিয়ে অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের এক সদস্য।
বুধবার (০২ অক্টোবর) এর এ ঘটনায় তার এ সততার পরিচয়ে পুলিশের উর্ধতন কর্মকর্তারাসহ সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা তুষ্ট হয়েছেন। পাশাপাশি খোয়া যাওয়া টাকাসহ সকলকিছু ফিরে পাওয়ায় কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন ওই ব্যবসায়ী।
বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের অ্যাসিসটেন্ট টাউন সাব-ইন্সপেক্টর (এটিএসআই) মোঃ ইউসুফ জানান, তিনি বুধবার সকালে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে বান্দরোডে দায়িত্ব পালন করছিলেন। ওই সময় সেখান নতুল্লাবাদ থেকে একটি অটোরিক্সা এসে থামে। যে অটোরিক্সা থেকে একজন বৃদ্ধ লোক নামার সাথে সাথে একটি ওয়ান টাইম ব্যবহারযোগ্য টিস্যুর প্লাষ্টিকের ব্যাগ পড়ে যায়। পাশের এক চায়ের দোকানদার ব্যাগটি ওই বৃদ্ধর কিনা জানতে চাইলে, তিনি তার না বলে জানিয়ে চলে যান। এরপর অপর একটি লোক ব্যাগটি হাতে নিয়ে দেখেন এবং কৌশলে চলে যেতে থাকেন। বিষয়টি সন্দেহ হলে চায়ের দোকানদারকে সাথে নিয়ে ওই লোকটিকে আটকে ব্যাগটি দেখতে চাই। যে ব্যাগটি খুলে তার ভেতর জরুরী কিছু কাগজপত্র, ব্যাংকের দুটি চেক, দুটি এটিএম কার্ড ও নগদ ৪৬ হাজার ৫০২ টাকা পাওয়া যায়। সাথে সাথে আমি বিষয়টি উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানাই এবং ওই ব্যাগের মধ্যে থাকা একটি ক্যাশম্যামোর সহায়তায় প্রকৃত মালিকের সন্ধান পাই।
ব্যাগের প্রকৃত মালিক নগরের কাশিপুর এলাকার বাসিন্দা মাহাবুব সিকদার জানান, তিনি ভাড়ায় চালিত গাড়ির ব্যবসা করেন। তিনি সকাল নগরের নতুল্লাবাদ থেকে অটোরিক্সায় সিএন্ডবি ১ নম্বর পুল এলাকায় যান। সেখানে তিনি একটি অফিসে দুটি গাড়ির টিকিট পৌছাতে গিয়ে দেখেন তার পকেটে থাকা টিস্যুর ব্যাগটি নেই। যে ব্যাগটিতে নগদ ৪৬ হাজার ৫০২ টাকা, ব্যাংকের দুটি চেক, দুটি এটিএমকার্ডসহ প্রয়োজনীয় কিছু কাগজপত্র রয়েছে। এরপর তিনি সেখান থেকে নেমে সম্ভাব্য সকল জায়গায় খোজাখুজি করেন কিন্তু কোথায় না পেয়ে হতাশ হয়ে পড়েন। এরকিছুক্ষন পরই এক পুলিশ সদস্য ফোন করে আমার পরিচয় নিশ্চিত করে ব্যাগটি পাওয়ার বিষয় জানায়। পরে ট্রাফিক পুলিশের কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে ব্যাগটি বুঝে পেয়েছি।
তিনি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, কার্ডদুটিতে ব্যবসায়ীক কাজের প্রায় ১৫ লাখ টাকা ছিলো, চেক দুটিও খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এভাবে ফিরে পাবেন কখনো ভাবেননি।
এ বিষয়ে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার (ট্রাফিক) মোঃ খায়রুল আলম বলেন, পুলিশ যে স্বচ্ছ ও সততার সহিত তার দায়িত্ব পালন করছে এটাই তার প্রমান। আশাকরি এ ধরনের ঘটনা আমাদের ওপর মানুষের বিশ্বাস স্থাপনের দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।