বরগুনার আমতলী উপজেলার আঙ্গুলকাটা এলাকার বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধ কেঁটে সুড়ঙ্গ খুড়ে মুন্সি ব্রিকসের মালামাল আনা নেয়া করছে ব্রিকস মালিক বদিউল আলম বাদল মুন্সি। পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে বাঁধ কেটেছেন বলে এমন অভিযোগ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের। বড় ধরনের প্রাকৃতিক দূর্যোগ বন্যা ও জলোচ্ছাস হলে তলিয়ে যাবে গুলিশাখালী ইউনিয়ন। এতে হুমকির মুখে রয়েছে ওই এলাকার ৬০ হাজার মানুষ।
জানাগেছে, ১৯৮০ সালে পানি উন্নয়ন বোর্ড পায়রা নদী ঘেষা আমতলী উপজেলার গুলিশাখালী ইউনিয়নকে প্রাকৃতিক দূর্যোগ বন্যা ও জলোচ্ছাসের হাত থেকে রক্ষায় বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধ নির্মাণ করে। ওই বাঁধ নির্মাণ করায় গুলিশাখালী ইউনিয়নের প্রায় ৬০ হাজার মানুষ সিডর, আইলা ও মহাসেনের মত জলোচ্ছাসের হাত থেকে রক্ষা পেয়েছে। কিন্তু গত বছর ডিসেম্বর মাসে ৪৩/২এফ পোল্ডারের আঙ্গুলকাটা নামক স্থান দিয়ে স্থানীয় প্রভাবশালী মুন্সি ব্রিকসের মালিক বদিউল আলম বাদল মুন্সি বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধ কেঁটে সুড়ঙ্গ খুড়ে তার ব্রিকসের মালামাল আনা নেয়া করছে। বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধ কাঁটা অংশের উপড়ে বিভিন্ন কাঠের গুড়ি ফেলে রেখেছেন তিনি।
ওই কাঠের গুড়ির উপর দিয়ে এলাকার মানুষ ও যানবাহন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে। স্থানীয়দের অভিযোগ জোয়ারের পানিতে এমনিতেই বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধ পানিতে ছোয়া-ছো অবস্থায় থাকে। কোন জলোচ্ছাস হলেই বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধের কাটা অংশ দিয়ে পানি ঢুকে এলাকা তুলিয়ে যাবে। এতে ক্ষতিগ্রস্থ হবে গুলিশাখালী ইউনিয়নের ৬০ হাজার মানুষ। এছাড়াও লবন পানি ঢুকে ফসলের ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে। দ্রুত বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধ সংস্কার করে ব্রিকস মালিককে আইনের আওতায় আনার দাবী জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
রবিবার সরেজমিনে ঘুরে দেখাগেছে, আঙ্গুলকাটা বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধ কেঁটে সুড়ঙ্গ খুড়ে মুন্সি ব্রিকসের মালামাল বাঁধের একপাশ থেকে অন্যপাশে আনা নেয়া করছে। সুড়ঙ্গের উপড়ে গাছের গুড়ি ফেলে রাখা হয়েছে। ওই গাছের গুড়ির উপর দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মানুষ ও যানবাহন চলাচল করছে।
আঙ্গুলকাটা গ্রামের ফিরোজ মাহমুদ, মিজানুর ফকির ও আবুল হোসেন জানান, বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধ কেটে সুড়ঙ্গ করে ব্রিকসের মালামাল আনা নেয়া করছে ব্রিকস মালিক বাদল মুন্সি। জলোচ্ছাস হলে পায়রা নদীর পানি ঢুকে গুলিশাখালী ইউনিয়ন তলিয়ে যাবে। এতে ক্ষতিগ্রস্থ হবে ৬০ হাজার মানুষ। দ্রুত বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধ সংস্কার করার দাবী জানান তারা।
মুন্সি ব্রিকসের মালিক বদিউল আলম বাদল মুন্সি বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধ কেটে সুড়ঙ্গ করে ব্রিকসের মালামাল নেয়ার কথা স্বীকার করে বলেন প্রতি বছর রাস্তা কেটে মালামাল আনা নেয়া করি, এ বছরও করেছি। দু-এক দিনের মধ্যে রাস্তা বেঁধে দেয়া হবে।
গুলিশাখালী ইউপি চেয়ারম্যান এ্যাড. নুরুল ইসলাম বলেন, বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধ কেটে সুড়ঙ্গ করায় ইউনিয়নের ৬০ হাজার মানুষ হুমকির মুখে রয়েছে। প্রকৃতিক দূর্যোগ বন্যা ও জলোচ্ছাস হলে গুলিশাখালী ইউনিয়ন পানিতে তলিয়ে ব্যাপক ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে দ্রুত বাঁধ সংস্কারের দাবী জানাই।
বরগুনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের এসও মোঃ আজিজুর রহমান সুজন বলেন, বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধ কারো কাটার অধিকার নেই। সরেজমিনে ওই এলাকা পরিদর্শন করে দ্রুত এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বরগুনা পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী দীপক রঞ্জন দাশ বলেন, বে-আইনি ভাবে যিনি বাঁধ কেটেছে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।