বেপরোয়া গতি ও ঝুঁকিপূর্ণ ওভারটেকিংয়ের কারণে শহিদ আবদুর রব সেরনিয়াবাত (দপদপিয়া) সেতুতে নিয়মিতই ঘটছে দুর্ঘটনা। এ সেতুতে দুর্ঘটনায় গত ৬ মাসে ৩ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন অন্তত ৫০ জন।
গত ১৭ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় সেতুর ঢালে যাত্রীবাহী বাসের চাকায় পিষ্ট হয়ে ৩ সহপাঠী স্কুলছাত্র নিহত হয়। তারা বরিশালের বাকেরগঞ্জ পৌর শহরের জীবন সিংহ ইউনিয়ন (জেএসইউ) মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্র ছিল।
নিহতদের সহপাঠীরা জানায়, দুর্ঘটনার সময় একটি মোটরসাইকেল বেপরোয়া গতিতে একটি যাত্রীবাহী বাসকে ওভারটেক করছিল।
তখন বিপরীত দিক থেকে আরেকটি বাস এসে পড়লে এই দুর্ঘটনা ঘটে। বিপরীত দিক থেকে আসা বাসের চাকায় পিষ্ট হয়ে মোটরসাইকেলে থাকা তাদের ৩ সহপাঠী গুরুতর আহত হয়।
পথচারীরা তাদের উদ্ধার করে বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক চয়ন ও সিয়ামকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে হাসপাতালে রাব্বিরও মৃত্যু হয়।
সম্প্রতি এ সেতুতে দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হন ব্যাংক কর্মকর্তা শরিফুল ইসলাম। তিনি বলেন, দুর্ঘটনার সময় একটি বাস আরেকটি বাসকে ঝুঁকিপূর্ণ ওভারটেকিং করছিল। ওই সময় বাস দুটিরই গতি ছিল ঘণ্টায় ১০০ কিলোমিটারের বেশি।
ওভারটেকিং করতে গিয়ে একটি বাস সাইডে এসে আমাদের মোটরসাইকেলকে ধাক্কা দেয়। এতে আমি ও মোটরসাইকেল চালক গুরুতর আহত হই। পরে স্থানীয় আমাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায়।
তিনি আরও বলেন, বাসের এক পাশে ধাক্কা লেগে মোটরসাইকেলটি ছিটকে যায়। যদি সামনাসামনি ধাক্কা লাগতো তাহলে আমাদের নিশ্চিত মৃত্যু হতো।
এই সেতুর নিয়মিত যাত্রীরা বলছেন, অদক্ষ চালক দিয়ে বিরামহীন গাড়ি চালানো, নির্ধারিত গতিসীমা না মানা, চালকদের তাড়াহুড়ো, ওভারটেকিং ও নছিমন-করিমনসহ ব্যাটারিচালিত যানবাহন বেড়ে যাওয়ায় কারণে এ সেতুতে প্রায়ই ছোট-বড় দুর্ঘটনা ঘটছে।
বরিশাল সড়ক ও জনপথের (সওজ) উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী লিটন আহমেদ খান বলেন, সেতুর ওপর ওভারটেকিং নিষিদ্ধ। সেতুতে ওভারটেকিং করবে না এ শর্তেই ড্রাইভিং লাইসেন্স দেওয়া হয়।
এরপরেও চালকরা ওভারটেকিং করলে ট্রাফিক পুলিশ তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারে। আমরা ট্রাফিক বিভাগকে সহযোগিতা করব।
বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) এসএম তানভীর আরাফাত বলেন, সড়ক ও জনপথ বিভাগের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে সেতুর ওপর বেপরোয়া গতি আর ঝুঁকিপূর্ণ ওভারটেকিং বন্ধে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।