বরিশালে বিপদসীমার ওপরে নদীর পানি

লেখক:
প্রকাশ: ৫ years ago

শামীম আহমেদ॥ বরিশালের কীর্তনখোলা ও মেঘনাসহ আশপাশের নদ-নদীগুলোতে হঠাৎ করেই পানি বাড়তে শুরু করেছে। কীর্তনখোলাসহ ছয়টি নদীর পানি বিপদ সীমা অতিক্রম করেছে। আর বাকি নদীগুলোর পানি বাড়লেও এখনও বিপদ সীমা অতিক্রম করেনি।

ফলে ভরা জোয়ারের সময় প্লাবিত হচ্ছে নদীর তীরবর্তী নিন্মাঞ্চল। আর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় নতুন করে ভাঙন আতঙ্ক দেখা দিয়েছে নদী তীরের মানুষের মধ্যে। ইতোমধ্যে জেলার হিজলা ও মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার বেশকিছু এলাকায় নদী ভাঙন দেখা দিয়েছে।

সূত্রমতে, ভোলার দৌলতখান পয়েন্টে মেঘনা নদীর পানি বিপদ সীমা রেখা (৩৪১ সেন্টিমিটার) অতিক্রম করে ৫৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জের পায়রা নদীর পানি বিপদ সীমা রেখা (২৮১ সেন্টিমিটার) অতিক্রম করে ১১ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। যদিও আমতলীতে এ নদীর পানি বিপদসীমার ১৩ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ঝালকাঠির বিষখালী নদীর পানি বিপদ সীমার (২০৮ সেন্টিমিটার) অতিক্রম করে ২৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়া এ নদীর বরগুনা পয়েন্টের পানি বিপদ সীমার (২৮৫ সেন্টিমিটার) রেখা অতিক্রম করে এক সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে পাথরঘাটা পয়েন্টে পানি বিপদ সীমার (২৮৫ সেন্টিমিটার) সমান্তরালে প্রবাহিত হচ্ছে। পিরোজপুরের বলেশ্বর নদীর পানি বিপদ সীমার (২৬৮ সেন্টিমিটার) ছুঁয়েছে। এছাড়া তেঁতুলিয়া, আড়িয়াল খাঁ, পালরদী ও সন্ধ্যা নদীসহ বরিশালের বেশকিছু নদ-নদীর পানি বিপদসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের পানি বিজ্ঞান শাখার উপ-সহকারী প্রকৌশলী মোঃ মাসুম জানান, পূর্ণিমার কারণে গত ৩ আগস্ট নদীর পানি কিছুটা বাড়লেও তা আবার নেমে যায়। তবে সেটা বিপদ সীমার কাছে আসেনি। কিন্তু বুধবার সন্ধায় হঠাৎ করেই নদীর পানি বিপদ সীমা অতিক্রম করতে শুরু করেছে। এরমধ্যে সর্বশেষ ওইদিন (বুধবার সন্ধ্যার) জরিপ অনুযায়ী বরিশালের কীর্তনখোলা নদীর পানি বিপদ সীমা (২৫৫ সেন্টিমিটার) অতিক্রম করে চার সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। একইভাবে হিজলার নয়াভাঙ্গনী নদীর পানিও বিপদ সীমা অতিক্রম করে প্রবাহিত হচ্ছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, বর্তমান আবহাওয়ার ও নিন্মচাপের কারণে বাতাসের গতিবেগ বেড়ে গেছে। এ কারণে দক্ষিণাঞ্চলের নদ-নদীগুলোতে পানির চাপ বেড়ে গিয়ে বিপদসীমা অতিক্রম করছে। তবে আবহাওয়ার উন্নতির সাথে সাথে দ্রুত নদীর পানি কমে যাবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

অপরদিকে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ আবু সাইদ বলেন, উত্তরাঞ্চলের পানি নেমে যেতে শুরু করেছে। এজন্য দক্ষিণাঞ্চলের নদীগুলোতে পানির চাপ একটু বেশি। তিনি আরও বলেন, বর্ষাকাল হওয়ায় বিভিন্ন নদীতে ভাঙন দেখা দিয়েছে। এখন যেভাবে পানি বাড়ছে তাতে ভাঙনের তীব্রতা বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বিশেষ করে পানি নেমে যাওয়ার সময় এ আশঙ্কা বেশি থেকে। তাই পানি উন্নয়ন বোর্ডের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে সার্বিক প্রস্তুতি নেওয়া রয়েছে। ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শনের পাশাপাশি যেসবস্থানে গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা রয়েছে সেইসব এলাকায় ভাঙনরোধের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।