ঢাকার ঐতিহ্যবাহী ঘোড়ার গাড়ি। যা প্রাচীনকালে টমটম নামে পরিচিত ছিল। যুগের আধূনিকতায় রাস্তাঘাট যতই আধূনিক হচ্ছে এই ঐতিহ্যবাহী টমটম গুলোর ততোই সংখ্যা কমে যাচ্ছে। কিন্তু‘ বরিশালের চিত্র ভিন্ন। বরিশালে টগবগিয়ে টমটম নিয়ে প্রিয় ঘোড়া ছুটে চলে একজন রুচিশীল মানুষের উদ্দীপনায়। তাই বিনোদন প্রেমিকদের জন্য এবার ভিন্ন মাত্রার স্বাদ দিতে ঢাকার আদলে বরিশালে ঘোড়ার গাড়ি আনা হয়েছে। এবার ঢাকার গুলিস্তানের ঘোড়ার গাড়িতে চড়ার সুযোগ মিলবে বরিশালে । প্রতি দিন বিকাল েৈথকে রাত ৮টা পর্যন্ত রয়েছে ঘোড়ার গাড়িতে চড়ার সুযোগ। বরিশাল নগরের বেল্স পার্ক এলাকায় এই ঘোড়ার গাড়ি দেখা পাওয়া যাবে। বাহারী নকশার এই ঘোড়ার গাড়িতে দুটো মাঝারী সাইজের ঘোড়া রয়েছে। এর একটির নাম হলুদ চাঁন হাড্ডি আপরটির নাম লাল চাঁন। বেল্স্ পার্কে ঘুরতে আসা ফরজানা আক্তার বলেন,বরিশালে ঘোড়ার গাড়িতে ভ্রমন এটা বিনোদনের নতুন সংযোগ। আনেক ইচ্ছা ছিলো ঘোড়ার গাড়িতে চলবো।
কিন্তু এতো দিন সেটা হয় নি। তবে আজ ইচ্ছটা পূরন হলো। তবে টাকাও নিচ্ছে কম। বরিশালে এই প্রথম বিনোদন হিসেবে চলছে ঘোড়ার গাড়ি। কথা হয় গাড়িটির পরিচালনার দ্বায়িত্বে থাকা মোঃ রাকিবের সাথে। তিনি জানান,গত ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে বিনোদন প্রেমিকদের ও শিশুদের জন্য আমরা বরিশালে ঘোড়ার গাড়ি এনেছি। শুরুতেই হোচট খেতে হয়েছে। অনুমতি না নেয়ায় মাঝখানে গাড়িটি কিছুদিন আটক হয়েছিল। প্রথমে আমরা জনপ্রতি ২০ টাকা করে নিয়েছি কিন্তু বর্তমানে খাবারের দাম বৃদ্ধির কারনে জনপ্রতি ৩০ টাকা করে নিচ্ছি। সদর রোড এবং হাইওয়ে সড়কে চলা নিষেধ রয়েছে। তাই আমরা কন্টাকে যাত্রী সেবা দিয়ে থাকি। ঘন্টা ১০০০ টাকা। এখন পর্যন্ত আমরা ব্যাপক সাড়া না পেলে ও হাল সারছিনা। ঘোড়া দু’টির পেছনে প্রতি দিন ৭০০ টাকার খাবার লাগে। অনান্য দিন বেশি যাত্রী না হলে ও ঈদুল আযহা উপলক্ষে প্রতিদিন ৪-৫ হাজার টাকা আয় হয়েছে। তাছারা ছুটির দিন গুলোতে মোটামোটি লোকজন হয়। গাড়িটির চালক মোঃবিজয় (১৯) এবং মোঃ শিপন(১৬) এরা জানায়,তারা মাসিক বেতনে কাজ করে। বিজয় ১৫ হাজার এবং শিপন কে মাসিক ১২ হাজার টাকা বেতনে রাখা হয়েছে। তাড়াই ঘোড়া দুটো লালন পালন করেন। গোড়া দুটিকে প্রতি দিন ভূসি,কুড়া,কাচাঁ ঘাস, ছোলার ভূসি খাওয়াতে হয়। অন্যদিকে ৯-১০ জন যাত্রী হলে তারা প্রতিটি ট্রিপ দিয়ে থাকেন। ঘোড়া দুটির নাম দেয়া হয়েছে। যে ঘোড়াটি রাগী তার নাম হলুদ চাঁন হাড্ডি আপরটির নাম লাল চাঁন। দুটোই পুরুষ ঘোড়া। তবে হলুদ চাঁন হাড্ডি ঘোড়াটি রাগী। বিরক্ত করলে কামড়ে দেয় কিংবা লাথি মারে। অপরটি অবশ্য শান্ত। এরইধারাবাহিকতায় ঘোড়ার গাড়িটির কর্নধার আকাশ শরীফ বলেন, বরিশালে বিনোদনের জন্য অনেক ব্যাবস্থা রয়েছে। তাই আমি শখের বসে এই ব্যতিক্রমি উদ্যোগটা নিয়েছি। ঢাকাএকটি ঐতিহ্যবাহী বরিশালে একটি ও নেই। সেই প্রেরনা থেকে কাজটা করা। প্রচারনার অভাবে হয়তো এখন পর্যন্ত আমরা ব্যাপক সাড়া পাচ্ছিনা। প্রায় ৫ লক্ষ টাকা খরচ করে শুধু বরিশালবাসীর জন্য আমার এই আয়োজন।