বরিশালে বিএনপি-জামায়াতসহ অঙ্গ সংগঠনের ৪৬ নেতাকর্মী আটক

লেখক:
প্রকাশ: ৬ years ago
????????????????????????????????????

বরিশাল-৫ আসনের নির্বাচনী এলাকায় রাতে-দিনে গন গ্রেপ্তার অভিযান চালিয়ে গত দু’দিনে বিএনপি ও জামায়াতের ৪৬ নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে নগর পুলিশ। এর মধ্যে আজ বুধবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ২৭ জন গ্রেপ্তার হয়েছে। যার মধ্যে কোতয়ালী মডেল থানায় ২১ জন ও এয়ারপোর্ট থানায় তিন জন ও কাউনিয়া থানায় ৩ জন। এদের বিরুদ্ধে পূর্বে বিভিন্ন মামলা রয়েছে বলে জানিয়েছেন নগর পুলিশের মুখপাত্র ও সহকারী কমিশনার (ডিবি) নাসির উদ্দিন মল্লিক।

এদিকে বুধবার সকালে নগরীর হাতেম আলী কলেজের সামনে থেকে ধানের শীষের লিফলেট বিতরন ও প্রচারণা কালে বিএনপি’র যুগ্ম মহাসচিব ও সদর আসনে ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী মজিবর রহমান সরোয়ারের স্ত্রী নাসিমা সরোয়ারকে আটকের অভিযোগ করেছেন বিএনপি’র নেতারা। যদিও পরে তাকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে।

আটককৃতদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য নেতৃবৃন্দ হলেন- ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আফরোজা খানম নাসরিন, মহানগর বিএনপি’র সহ-সভাপতি সৈয়দ আহসান কবির হাসান, দক্ষিণ জেলা বিএনপি’র দপ্তর সম্পাদত আলহাজ্ব মন্টু খান, মহানগর যুবদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি কামরুল হাসান রতন, সহ-সভাপতি সাজ্জাদ হোসেন, কোতয়ালী বিএনপি সাংগঠনিক সম্পাদক আলহাজ্ব মন্টু খান, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম সম্পাদক সামসুল কবির ফরহাদ, সদর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের প্রস্তাবিত সাধারণ সম্পাদক নাঈমুল হাসান প্রিন্স, স্বেচ্ছাসেবক দল চরকাউয়া ইউনিয়নের সভাপতি মো. মাসুম হাওলাদার, চাঁদপুর ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি আবুল খায়ের জলিল, বিএনপি নেতা খালেদ হোসেন বাবর, জামায়াত নেতা মো. জাকির হোসেন, ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি শাহিন, শ্রমীকদল ওয়ার্ড সভাপতি কামরুল ইসলাম,শায়েস্তাবাদ ইউনিয়ন বিএনপি সভাপতি আলহাজ্ব একে এম সামসুল ইসলাম,চরবাড়িয়া ইউনিয়ন বিএনপি নেতা সাহালোম মেম্বার,মাসুম হাওলাদার,কামুজ্জামান, মনিরুজ্জামান,রিয়ন,বাচ্চু দুয়ারী,আহসান কবির সোহেল, সহ ২১ জন।

বরিশাল-৫ আসনে বিএনপি’র ধানের শীষ প্রতীকের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আহ্বায়ক জিয়াউদ্দিন সিকদার বলেন, সকালে ধানের শীষের পক্ষে নগরীর সরকারি সৈয়দ হাতেম আলী কলেজে প্রচারণা চলছিলো। ধানের শীষের প্রার্থী মজিবর রহমান সরোয়ারের সহধর্মীনি নাসিমা সরোয়ার সেখানে ক্যাম্পেইন করছিলেন।

অপরদিকে বুধবার সকাল সকাল থেকেই বরিশাল শহরের বিভিন্নস্থানের অলি-গলি সহ গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ব্যাপক পুলিশ মোতায়েন করে বিএনপি নেতা-কর্মীদের ভিতর আতংক সৃষ্টি করে বিভিন্ন থানা পুলিশ।

এছাড়া সকাল ১১টার দিকে কেন্দ্রীয় বিএনপি সাংগঠনিক সম্পাদক সাবেক সংসদ এ্যাড. বিলকিস জাহান শিরিন সদররোড বিএনপি দলীয় কার্যলয়ে প্রচারণার জন্য অবস্থান নিলে হঠাৎ করে বিএনপি কার্যলয়ের সামনে ব্যাপক পুলিশ অবস্থান নিলে দ্রুত নেতা কর্মীরা দলীয় কার্যলয় বন্ধ করে চলে যাবার সময় সেখান থেকে ৪ জন বিএনপির প্রথম সারির নেতাকে আটক করে পুলিশ।

এছাড়া সকালে নগরীর নতুন বাজার এলাকায় বরিশাল-৫ আসনের ঐক্যফ্যন্ট প্রার্থী মজিবর রহমান সরোয়ার প্রচারণাকালে গনমাধ্যমকে বলেন, নির্বাচন কমিশনার বরিশালে নির্বাচনী মাঠে কোন ধরনের লেভেল প্লায়িং ব্যবস্থা না করে আমাদের পিছনে পুলিশ লাগিয়ে নেতাকর্মীদেরকে গন গ্রেপ্তার করানো হচ্ছে। এভাবে পুলিশের অত্যাচার-নির্যাতন ও জুলুমবাজী বন্ধ করা নাহলে বরিশালের জনগন আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোট প্রদান করা থেকে সিটি নির্বাচনের ন্যায় বঞ্চিত হবে। তিনি জনগনের ভোট প্রদানের ব্যবস্থা করার জন্য প্রধান নির্বাচন কমিশনারের প্রতি আবারো আহবান জানান।

এদিকে গত দুই দিনে পুলিশের গ্রেপ্তার অভিযান শুরুর পর থেকেই ধানের শীষের মাইকিং প্রচার-প্রচারণা এক প্রকার বরিশাল শহরে বন্ধ রয়েছে বলে দলীয় নেতা কর্মীরা অভিযোগ করেন।
সরোয়ার আরো বলেন, এই মুহুর্তে নির্বাচন কমিশনার আইন শৃঙখলা বাহিনী রদ-বদল করা নাহলে এই প্রশাসন বাহিনী মাঠে থাকলে জনগন ভোট দিতে পারবে না বলে তার অাশঙ্কা রয়েছে।

এসময় হঠাৎ করেই কোতয়ালী মডেল থানা পুলিশ সেখানে প্রচার প্রচারনায় বাঁধা সৃষ্টি করে। সেখান থেকে বিএনপি, ছাত্র ও যুবদলের ৫ জন নেতাকে আটক করে। এমনকি প্রার্থীর সহসর্ধীনি নাসিমা সরোয়ারকেও টেনে হেচড়ে গাড়িতে তোলা হয়। তবে নেতা-কর্মীদের বাঁধার মুখে তাকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে।

তবে পুলিশের পক্ষ থেকে প্রার্থীর স্ত্রীকে আটকের অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে। কোতয়ালী মডেল থানার অফিসার ইন-চার্জ (ওসি) নুরুল ইসলাম বলেন, যাদের আটক করা হয়েছে তাদের মধ্যে ৮ জন জামায়াত এবং বিএনপি’র ১৩ জন। এদের বিরুদ্ধে ইতিপূর্বে অনেক গুলো মামলা রয়েছে। ওইসব মামলায় তারা তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

অন্যদিকে বরিশাল মহানগর বিএনপি আইন বিষয়ক সম্পাদক এ্যাড. আবুল কালাম আজাদ জানান, বরিশালে পুলিশের হাতে গন গ্রেপ্তার হওয়া বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদল, শ্রমীকদলসহ অঙ্গ সংগঠন ও দেশের নিবদ্ধনবিহীন দল জামাত দলের নেতা-কর্মীদেরকে বিশেষ ক্ষমতা আইনে আটক দেখিয়ে শেষ বিকালে আদালতে চালান দেয়া হয়েছে।

উল্লেখ্য, গত সোমবার থেকে মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত বরিশাল মেট্রোপলিটন এলাকার ৪টি থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে বিএনপি ও জামায়াতের আরো ২১ জন নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করে।