গরমের তীব্রতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ডায়রিয়ার প্রকোপ বেড়েছে বরিশালে। নগরীর দুটি সরকারি হাসপাতালে প্রতিদিন গড়ে ২৭ জন ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হচ্ছে। তাদের মধ্যে শিশুর সংখ্যা বেশি।
তীব্র স্যালাইন সংকটে বরিশাল জেনারেল হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ডে রোগীদের চিকিৎসা সেবা বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে।
মধ্য ও উচ্চবিত্ত রোগীরা হাসপাতালের বাইরে থেকে স্যালাইন কিনে চিকিৎসা করলেও বিপাকে পড়ছেন দরিদ্র রোগীরা।
বরিশাল সিভিল সার্জন ডা. মনোয়ার হোসেন স্যালাইন সংকটের কথা স্বীকার করে জানান, ইতিমধ্যে ঢাকায় স্যালাইন চেয়ে চাহিদাপত্র পাঠানো হয়েছে।
সূত্র মতে, বরিশাল সদর জেনারেল হাসপাতালে প্রতিদিনই ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগী ভর্তি হচ্ছে। প্রতিদিন গড়ে ১৫ জন ডায়রিয়ার রোগী চিকিৎসা নিচ্ছেন।
হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. মলয় কৃষ্ণ বড়াল জানান, ডায়রিয়া ওয়ার্ডে শয্যা মাত্র ৪টি (পুরুষ দুই ও নারী দুই)।
গত কয়েক দিনের গড়ে ১৫ থেকে ২০ জনের বেশি ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগী হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন। ফলে হাসপাতালের মেঝেতে রেখে রোগীদের চিকিৎসাসেবা দিতে হচ্ছে। প্রতিদিন অর্ধশতাধিক ডায়রিয়ার রোগী বহির্বিভাগে ব্যবস্থাপত্র নিচ্ছেন।
হাসপাতালের কর্মরত নার্সরা জানান, বর্তমানে হাসপাতালে স্যালাইন একেবারেই নেই। তাই বাধ্য হয়ে মধ্য ও উচ্চবিত্ত রোগীরা বাইরে থেকে স্যালাইন কিনে চিকিৎসা নিচ্ছেন। কিন্তু হাসপাতালে এসে স্যালাইন না পেয়ে হতাশ হয়ে পড়ছেন দরিদ্র রোগীরা।
ডা. মলয় কৃষ্ণ বড়াল বলেন, ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় হাসপাতালে প্রচুর আইভি স্যালাইন সংকট দেখা দিয়েছে।
আইভি স্যালাইন নিয়ে কোনো বাজেট নেই। মজুদও শূন্যের কোঠায়। বরিশাল সিভিল সার্জন ডা. মনোয়ার হোসেন জানান, বছরে তাদের যে স্যালাইন বরাদ্দ দেয়া হয় তাতে ৩-৪ মাস চলে।
এখন গরমে ডায়রিয়ার প্রকোপ চলছে। তাই পরিচালকের মাধ্যমে ইতিমধ্যে স্যালাইনের চাহিদাপত্র স্বাস্থ্য অধিদফতরে পাঠানো হয়েছে।
সূত্রে জানা গেছে বরিশাল সদর উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন পর্যায়ের ক্লিনিক ও পল্লি চিকিৎসকদের কাছ থেকে প্রতিদিন অনেক রোগী চিকিৎসা নিচ্ছেন।
তবে কেউ কেউ করোনাকে ভয় করে বরিশালে চিকিৎসা নিতে আসছেন না। এদিকে বরিশাল সদর উপজেলা চন্দ্রমোহন ইউনিয়নের এক ইউপি সদস্য জানান, তাদের ইউনিয়নে প্রায় কয়েকশত লোক ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছে। তারা সবাই স্থানীয় ভাবে চিকিৎসা নিচ্ছেন।