বরিশালের বাকেরগঞ্জের ২২ নং চর দাড়িয়াল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের বারান্দা ও বিদ্যালয়ের অন্য ভবনের প্রধান শিক্ষকের কক্ষে চলছে পাঠদান। এছাড়া বেঞ্চ সংকটে দুইটি ক্লাসের শিক্ষার্থীরা চাটাইয়ে বসে পাঠ গ্রহণ করছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, গোটা ভবনের ভেতর ও বাইরের বিভিন্ন অংশের পলেস্তারা খসে পড়েছে। শ্রেণিকক্ষের ভেতরের মূল পিলারেরও পলেস্তারা ধসে পড়েছে। ফাটল ধরেছে ভবনের বিভিন্ন স্থাানে।
প্রধান শিক্ষিকা আঞ্জুমান আরা বেগম বলেন, ‘বিদ্যালয় চলাকালীন সময়ে দুঃশ্চিন্তায় থাকতে হয়। মনে হয় এই বুঝি কোনো দুর্ঘটনা ঘটল। আমরা শিশুদের নিরাপত্তা দিতে পারছি না। অন্যদিকে ক্লাসও বন্ধ রাখা যাচ্ছে না। ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ এবং বেঞ্চ সংকটের বিষয়টি উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে অবহিত করেছি। ভবন নির্মাণ না হওয়ায় নিরূপায় হয়ে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের বারান্দা এবং বিদ্যালয়ের অন্য ভবনের অফিস কক্ষে চাটাইয়ে বসিয়ে শিক্ষার্থীদের পাঠদান করতে হচ্ছে। এতে সমস্যা হচ্ছে। বিদ্যালয়ের পিলারের ইট-সুরকি খসে ভেতরের রড বেরিয়ে আছে। ছাদ চুঁইয়ে পানি পড়ে দেয়ালের আস্তরন খসে যাচ্ছে।
শিক্ষক-অভিভাবকরা বলছেন, বিভিন্ন সময় ভবন সংস্কারের জন্য কর্তৃপক্ষকে বলা হয়েছে। তারপরও এ ব্যাপারে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। এসব কারণে স্কুলে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতির হারও কমতে শুরু করেছে।
জানা গেছে, ১৯২০ সালে বাকেরগঞ্জ ২২ নং চর দাড়িয়াল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৭৩ সালে জাতীয়করন করা হয়। ১৯৮২ সালে নির্মিত হয় স্কুল ভবন। তবে এরপর আর কোনো সংস্কার করা হয়নি। ফলে বিদ্যলয়গুলোর ভবন জরাজীর্ণ হয়ে গেছে। বর্তমানে ২৬৩ জন ছাত্র-ছাত্রী রয়েছে শিশু থেকে পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত পাঠদান হয় বিদ্যালয়ে। ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি লাল হাওলাদার বলেন, সরকারি হলেও সকল ক্ষেত্রে আমরা অবহেলিত সুবিধাবঞ্চিত। শিক্ষকরা তাদের কর্মক্ষেত্রে শিশুদেরকে রীতিমত পাঠদান দিয়ে যাচ্ছে কিন্ত তা সাবলিল রাখতে বিদ্যালয় সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সুযোগ সুিবধপ্রিাপ্তিতে নেই কোন অগ্রগতি।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা মোঃ শফিউল আলম জানান, ভবন ঝুঁকিপূর্ণের বিষয়টি ঐ স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা লিখিতভাবে আমাকে অবগত করেছেন। সংশ্লিষ্ট দপ্তরে আবেদনটি পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুল লতিফ মজুমদার বলেন, ‘পরিত্যক্ত ও ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের তালিকা তৈরি করে মন্ত্রণালয়ে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে। নতুন ভবন নির্মাণ ছাড়া বিকল্প কোনো উপায়ে পাঠদান চালিয়ে নেওয়া অসম্ভব। সর্বাধিক ঝুঁকিতে থাকা ও পরিত্যক্ত ভবনের আশপাশে সাময়িক টিনশেডের অবকাঠামো নির্মাণ করে পাঠদান অব্যাহত রাখার প্রক্রিয়া চলছে।’