বরিশালে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) সাথে কথিত ‘বন্দুকযুদ্ধে’ শহিদুজ্জামান মালেক ওরফে মালেক হাওলাদার (৩৩) নামে এক মাদক বিক্রেতা নিহত হয়েছেন। বুধবার ভোর রাতে বরিশাল সদর উপজেলার হরিণাফুলিয়া গ্রামে এই ঘটনা ঘটে।
তবে নিহত মালেক হাওলাদারের পরিবার দাবি করছে- মালেককে বুধবার বিকেলে আব্দুর রাজ্জাক কলোনী (কেডিসি) এলাকায় তার মালিকানাধীন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পরিচয়ে তুলে নেওয়া হয়। বিগত সময়ে তিনি মাদক বিক্রিতে জড়িত থাকলেও পুলিশের কাছে মুচলেকা দিয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসেন।
এদিকে র্যাবের র্যাবের মিডিয়া শাখার কর্মকর্তা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রইজ উদ্দিন জানিয়েছেন- বুধবার ভোর রাতে হরিণাফুলিয়া এলাকায় মাদক ক্রয়-বিক্রয়ের খবর পেয়ে র্যাবের একটি টিম সেখানে হানা দেয়। এসময় ৩ থেকে ৪ জন মাদক কারবারি তাদের লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। প্রতিরোধে র্যাব পাল্টা গুলি ছুড়লে উভয়গ্রুপের মধ্যে ঘণ্টাখানেক ‘বন্দুকযুদ্ধ’ হয়। একপর্যায়ে মাদক ব্যবসায়ীরা স্থান ত্যাগ করলে ঘটনাস্থলে মালেক হাওলাদারকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় পাওয়া যায়। তাকে উদ্ধার করে উদ্ধার করে দ্রুত বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালে নিয়ে গেলে ডিউটিরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এর আগে ঘটনাস্থল থেকে দুটি ওয়ান শুটারগান ও একটি বিদেশী পিস্তল এবং ৭’শ পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়েছে বলেও দাবি করেন র্যাবের এই কর্মকর্তা।
নিহত শহিদুজ্জামান মালেক হাওলাদার শহরের ১০ নম্বর ওয়ার্ডের কেডিসি কলোনী এলাকার এন্তাজ হাওলাদারের ছেলে। কলোনীর প্রবেশদ্বারে তার মালিকানাধীন ‘মা’ ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কশপ নামে একটি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে।
মালেক হাওলাদারের স্ত্রী নিলুফা আক্তার বরিশালটাইমসকে জানিয়েছেন, বুধবার বিকেলে ভাগিনা মিজানুর রহমানকে নিয়ে তার স্বামী কাজ করছিলেন। এসময় সাদা রঙয়ের কালো গ্লাসের একটি মাইক্রোবাসে ৫ থেকে ৬ এসে নিজেদেরকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সদস্য পরিচয় দিয়ে মালেককে জোর করে তুলে নিয়ে যায়। পরবর্তীতে তার খোঁজে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের সকল গোয়েন্দা ইউনিটে এবং র্যাবের সাথে যোগাযোগ করা হলে কেউ তুলে নেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেনি। এমনকি এই ঘটনায় বুধবার সন্ধ্যার পরে কোতয়ালি মডেল থানায় সাধারণ ডায়েরি করতে গেলেও পুলিশ গ্রহণ করেনি। পরে বৃহস্পতিবার সকালে জানতে পেরেছেন মালেক র্যাবের সাথে গোলাগুলিতে নিহত হয়েছেন। পরিবারের অভিযোগ মালেককে তুলে নিয়ে হত্যা করা হয়েছে।
তবে এই মালেককে তুলে নেওয়ার বিষয়ে র্যাব জড়িত কিংবা মোটেও অবগত নয় বলে দাবি করেছে র্যাবের এক শীর্ষ কর্মকর্তা।