প্রায় ১৮ মাস পর আবারও শিক্ষার্থীদের পদভারে মুখর স্কুল-কলেজ। প্রথম দিন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে স্বাস্থ্যবিধি রক্ষায় যথেষ্ট সচেতন ছিলো শিক্ষক-শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকরা।
এতে খুশি শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। তবে দীর্ঘদিন ঘরে বন্দি থাকায় শিক্ষার্থীদের শারীরিক-মানসিক বিকাশ কম হয়েছে এবং তাদের মধ্যে প্রাণ চাঞ্চল্যও কম বলে মনে করেন শিক্ষকরা।
এদিকে সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় প্রথম দিন ভালোভাবেই কেটেছে বলে জানিয়েছেন প্রধান শিক্ষকরা। করোনাকে মেনে নিয়েই সামনের দিনগুলোতে এগিয়ে যেতে চান জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা।
বরিশাল জিলা স্কুলে প্রায় ৭ হাজার শিক্ষার্থী। প্রায় ১৮ মাস পর আজ স্কুল খুললেও ক্যাম্পাসে কোলাহল নেই শিক্ষার্থীদের। ক্যাম্পাসও অনেকটা ফাঁকা।
কারণ প্রথম দিন ক্লাস হচ্ছে এসএসসি এবং ৫ম শ্রেণীর পরীক্ষার্থীদের। নিয়মিত ক্লাস হবে তাদের। অন্যান্য শ্রেণীর ক্লাস হবে সপ্তাহে একদিন।
রবিবার প্রথম দিন ক্যাম্পাসে প্রবেশের ক্ষেত্রে কড়াকড়া ছিলো কর্তৃপক্ষের। ক্যাম্পাসের মধ্যে ঢুকতে দেয়া হয়নি অভিভাবকদের। স্কুলের আঙ্গিনায় পা রেখেই হাত ধুয়ে স্যানিটাইজড করে শারীরিক দূরত্ব অনুসরণ করে ক্লাস কক্ষে বসেন শিক্ষার্থীরা।
দীর্ঘদিন পর স্কুলে আসতে পেরে এবং সহপাঠী-বন্ধুদের সাথে দেখা করতে পেরে খুশি শিক্ষার্থীরা। স্বাস্থ্যবিধি রক্ষা করে স্কুল চালিয়ে যেতে চান তারা। আগে অনলাইনে ক্লাস হলেও এখন সরাসরি ক্লাসে পড়াশোনায় মনোযোগ আরও বাড়বে বলে প্রত্যাশা শিক্ষার্থীদের।
দীর্ঘদিন পর সন্তানরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ফিরতে পারায় হাঁফ ছেড়ে বেঁচেছেন অভিভাবকরা। প্রথম দিনের সার্বিক ব্যবস্থাপনায় খুশি তারাও। করোনা সুরক্ষায় এই ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে চান অভিভাবকরা।
এদিকে দীর্ঘদিন ঘরে বন্দি থাকায় শিক্ষার্থীদের মানসিক ও শারীরিক বিকাশ কম হয়েছে বলে মনে করেন বরিশাল জিলা স্কুলের সিনিয়র সহকারি শিক্ষক ফাহমিদা বেগম।
শিক্ষার্থীদের মধ্যে প্রাণচাঞ্চল্য এবং উচ্ছাসেও ঘাটতি রয়েছে বলে প্রথম দিন মনে হয়েছে তার কাছে। যদিও পড়াশোনায় শিক্ষার্থীদের যথেষ্ট আগ্রহ আছে বলে তিনি জানান।
এদিকে সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় প্রথম দিন ভালোভাবেই অতিবাহিত হয়েছে বলে জানিয়েছেন বরিশাল জিলা স্কুলের প্রধান শিক্ষক মো. নুরুল ইসলাম। কঠোর বিধি-নিষেধ থাকায় শিক্ষার্থীরা ছোটাছুটি করতে পারছেন না বলে তিনি জানান।
আপাতত ৫ম ও দশম শ্রেণীর ক্লাস হবে সপ্তাহে ৬দিন এবং অন্যান্য শ্রেণীর ক্লাস সপ্তাহে ১ দিন করে হবে বলে জানান জিলা স্কুলের প্রধান শিক্ষক।
বরিশাল সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাহবুবা হোসেন বলেন, স্বাস্থ্য সুরক্ষায় সরকারি নির্দেশনা শতভাগ রক্ষা করার চেষ্টা করছেন তারা। বিগত দিনে পড়াশোনার ক্ষতি পুষিয়ে দিতে কর্তৃপক্ষের বাড়তি নজর থাকবে বলে তিনি জানান।
স্কুলের সার্বিক পরিস্থিতি দেখতে সকালে বরিশাল সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় পরিদর্শনে গিয়েছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) সোহেল মারুফ। এ সময় তিনি বলেন, করোনা মেনে নিয়ে স্বাস্থ্য সুরক্ষার ব্যবস্থা অব্যাহত রেখে শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে যেতে চান তারা।
প্রথম দিনের সার্বিক পরিস্থিতিতে সন্তোষ প্রকাশ করেন জেলা প্রশাসনের এই কর্মকর্তা। বরিশালের কলেজগুলোতেও স্বাস্থ্য বিধি রক্ষায় কড়াকড়ি ছিলো চোখে পড়ার মতো।