বরিশালে প্রশাসনের অভিযানের পরেও নগরী দাপিয়ে বেড়াচ্ছে অবৈধ নীল অটো

লেখক:
প্রকাশ: ৫ years ago

প্রশাসনের অভিযান আর কড়া হুশিয়ারির মধ্য দিয়েও বরিশাল নগর দাপিয়ে বেড়াচ্ছে অনুমোদনহীন সিলিন্ডার গ্যাস চালিত নীল অটো। নগরের জনাকির্ন মূল সড়কে পুলিশের নজরদারী থাকায় এই সংখ্যা অনেকটা কমে গেলেও অপ্রধান সড়কে এখনো রয়েছে সিন্ডিারবাহী নীল অটো।

আবার অনেকে বিশেষ কায়দায় সিলিন্ডর ঢেকে আড়াল করছে। ফলে দুর্ঘটনার আশঙ্কা কমছে না পুরোপুরি। যদিও বিআরটিএ থেকে জানানো হচ্ছে রান্নার গ্যাস ব্যবহারকারী মোটরযান নিরোধে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করে নগরকে ঝুঁকিমুক্ত করার অভিযান অব্যাহত রয়েছে; কিন্তু তা অপ্রতুল বলছে নগরবাসী।

পাঁচটি প্রধান সড়ক নিয়ে বরিশাল নগরে কোন সিটি বাস না থাকা, অস্বাভাবিক ও অনির্ধারিত রিকশা ভাড়া, ফিটনেসহীন লক্কর-ঝক্কর ব্যাটারীচালিত হলুদ অটো, মাহিন্দ্রার সংখ্যা কম এবং সময়মত না পাওয়ার কারনে যাত্রীরা নীল অটোতে আরোহন করছেন।

যাত্রীরা জানিয়েছেন, ঝুঁকির কথা জেনেও হাতের নাগালে পেয়ে যাতায়াত করছেন এই যানে।

বরিশাল বিশ^বিদ্যালয়ের ছাত্র রকিবুল হাসান পিয়াল বলেন, ঢাকার মত বরিশালেও যদি সরকার সিটি বাস চালু করতো তাহলে ঝুঁকি নিয়ে আমাদের চলাচল করতে হতো না।

চৌমাথা থেকে শিশু সন্তান নিয়ে ল ঘাট যাচ্ছিলেন গৃহিনী ফারিয়া। তিনি বলেন, সহজে ও দ্রুত যাওয়ার জন্য নীল অটোর বিকল্প নেই। কি করবো? বাধ্য হয়েই এই অটোতে উঠতে হচ্ছে।
বছর তিনেক আগে বরিশাল নগরে ব্যাটারী চালিত হলুদ অটোর পাশাপাশি ‘এইচ পাওয়ার’ কোম্পনীর গ্যাস চালিত তিন চাকার ক্ষুদ্র যান চলাচল শুরু করে। বিআরটিএ ও সিটি কর্পোরেশনের অনুমতি না থাকলেও একটি প্রভাবশালী মহলের তত্ত্বাবধায়নে চলাচল শুরু করে ওই অটো।

তখন নগরীতে গ্যাসের কোন পাম্প না থাকায় রান্নায় ব্যবহারকারী সিলিন্ডার দিয়ে চলতে শুরু করে নীল অটো। পরে একটি পাম্প স্থাপন হলেও অটো চালকরা সেই পাম্প থেকে গ্যাস সরবারহ করতে অনাগ্রহ প্রকাশ করে।

আনোয়ার হোসেন নামে এক চালক জানান, একটি মাত্র গ্যাস পাম্প থাকায় নীল অটোর চালকরা জিম্মি তাদের কাছে। ৬০০ টাকার গ্যাস ভরলে পাম্প থেকে ৩০০ টাকার গ্যাস পায়। যাতে দৈনিকের জমার টাকাও ওঠে না। যে কারণে বাধ্য হয়ে রান্নার এলপি গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবহার করছেন তারা।

এতে দুর্ঘটনার আশঙ্কা আছে এবং মানুষের মুখে মুখে তা শুনলেও দীর্ঘ ৩/৪ বছরের অভিজ্ঞতায় কোন দুর্ঘটনা ঘটেনি বলে জানান আরেক চালক শামসুল হক। তিনি বলেন, পাম্পের গ্যাসের সিলিন্ডারে হাওয়া ধরে। এলপি গ্যাসের সিলিন্ডারে তা ধরে না। আর যত গাড়ির সিলিন্ডার বিস্ফোরণ হয়েছে তা সব গাড়ির ফিক্সড সিলিন্ডার। রান্নার গ্যাস ব্যবহারকারী গাড়ি আজ পর্যন্ত একটিও বিস্ফোরণ হয়নি।

বিআরটিএ বরিশাল সার্কেলের সহকারি পরিচালক (ইঞ্জি:) দেবাশীষ বিশ্বাস জানিয়েছেন, রান্নার গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবহার করে মোটরযান চালানোর কোন বৈধতা মোটরযান অধ্যাদেশে নেই। এটি মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ। যারা এসব করছে তারা নিজ ঝুঁকিতে করছে। দেবাশীষ বিশ্বাস বলেন, তবে নগরী চলমান রান্নার গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবহৃত অটো গাড়ির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণে আমরা অভিযান পরিচালনা করে যাচ্ছি।