বরিশালে পুলিশ-বিএনপি সংঘর্ষে রণক্ষেত্র, আহত ১৫, আটক ৫

:
: ৭ years ago

পুলিশের সাথে বিএনপি নেতাকর্মীদের সংঘর্ষে বরিশাল নগরীর সদর রোড রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে। শনিবার বেলা পৌনে ১১টায় নগরীর সদর রোডের অশ্বিনী কুমার হল এলাকায় উভয় পক্ষের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া চলাকালে বিএনপি নেতাকর্মীরা কয়েকটি যানবাহন ভাংচুর এবং দোকানের শাটার পিটিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত করে।

Image may contain: 14 people, crowd

এ সময় পুলিশের লাঠিচার্জে বিএনপি’র অন্তত ১৫ জন আহত হয়। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ৫ বিএনপি নেতাকে আটক করে।
বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে ৩টি মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির প্রতিবাদে বরিশালে মহানগর বিএনপি বিক্ষোভ শুরুর আগে এবং উত্তর ও দক্ষিণ জেলা বিএনপি’র পৃথক বিক্ষোভ মিছিল শুরুর পরপরই এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে ৩টি মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির প্রতিবাদে কেন্দ্রীয় কর্মসূচীর অংশ হিসেবে বরিশালে মহানগর এবং উত্তর ও দক্ষিণ জেলা বিএনপি পৃথক বিক্ষোভ মিছিল-সমাবেশের আয়োজন করে।

Image may contain: 6 people, outdoor

এদিন সকাল সাড়ে ১০টার দিকে উত্তর ও দক্ষিণ জেলা বিএনপি অশ্বিনী কুমার হলের সামনে সমাবেশ করে। একই সময়ে মহানগর বিএনপি’র বিক্ষোভ সমাবেশে যোগ দিতে মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক মীর জাহিদুল কবিরের নেতৃত্বে একটি খণ্ড মিছিল সদর রোডের দলীয় কার্যালয়ের দিকে যাচ্ছিলো। অশ্বিনী কুমার হলের প্রধান ফটকে তাদের আটকে দেয় পুলিশ। এ নিয়ে বাদানুবাদের এক পর্যায়ে পুলিশ অতর্কিতে তাদের উপর লাঠিচার্জ শুরু করে। একই সময়ে উত্তর ও দক্ষিণ জেলা বিএনপি’র বিক্ষোভ সমাবেশ শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল সদর রোডে নামলে তাদের উপরও লাঠিচার্জ করে পুলিশ।
পরে বিএনপি নেতাকর্মীরা লাঠিসোটা নিয়ে পুলিশের সাথে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ায় লিপ্ত হয়। এ সময় তারা বিভিন্ন যানবাহন ভাংচুর করে এবং দোকানের সাটার পিটিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত করে।
এ সময় পুলিশের লাঠিচার্জে মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক মীর জাহিদুল কবির ও মাহবুবুর রহমান পিন্টু, মহানগর ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক মশিউর রহমান মঞ্জু, জেলা যুবদলের সহসভাপতি মামুন রেজাসহ অন্তত ১৫ জন আহত হয়। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মীর জাহিদুল কবির এবং মাহবুবুর রহমান পিন্টুসহ ৫ জনকে আটক করে।

Image may contain: 6 people, people smiling, people standing and outdoor

এ ঘটনার পর বিএনপি নেতাকর্মীদের অধিকাংশ ছত্রভঙ্গ হয়ে যায় এবং অন্য একটি অংশ সদর রোডের দলীয় কার্যালয়ে অবস্থান নেয়। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে মহানগর বিএনপি সভাপতি ও কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম মহাসচিব মজিবর রহমান সরোয়ার দলীয় কার্যালয়ে এলে মহানগর বিএনপি’র বিক্ষোভ সমাবেশ শুরু হয়। দলীয় কার্যালয় চত্বরে সরোয়ারের সভাপতিত্বে মহানগর বিএনপি’র বিক্ষোভ সমাবেশ বক্তব্য রাখেন ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক জিয়াউদ্দিন শিকদার জিয়াসহ অন্যান্যরা।

সভাপতির বক্তব্যে সরোয়ার বিনা উস্কানিতে বিএনপি নেতাকর্মীদের উপর পুলিশের লাঠি চার্জের তীব্র সমালোচনা করে বলেন, এ সরকারের মাথা খারাপ হয়ে গেছে। তারা ক্রমেই অসহিষ্ণু হয়ে পড়েছে। তারা বেসামাল হয়ে গেছে বলেই বিএনপি চেয়ারপার্সনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন মিথ্যা মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করছে। কিন্তু মামলা-হামলা করে বিএনপি’কে দুর্বল করা যাবে না বলে হুঁশিয়ারি দেন সরোয়ার।

কোতোয়ালী মডেল থানার ওসি শাহ মো. আওলাদ হোসেন আর্থটাইমস্ কে জানান, বিক্ষোভ মিছিল থেকে ১৮ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও বিএনপি নেতা মীর জাহিদুল কবির জাহিদসহ দুইজনকে আটক করা হয়েছে। ওসি জানান সদর রোডে গোলযোগের ঘটনায় পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে। এতে আটকের পরিমাণ আরো বাড়তে পারে।